লৌহজং সংবাদদাতাঃ মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলা বেজগাঁও ইউনিয়ন ২নং ওয়ার্ড ৭টি পরিবারকে দীর্ঘ ৯বছর বাড়িতে প্রবেশ এর রাস্তা বন্ধ করে উঁচু দেয়াল নির্মাণ করে অবরুদ্ধ রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রবাসী হৃদয়ের বেপারীর বিরুদ্ধে। তবে গতকাল এলাকাবাসী তাদের মুক্ত করে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে জানা যায়।
গত শুক্রবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা বেজগাঁও ইউনিয়ন ২নং ওয়ার্ড বাবুর বাড়ি সংলগ্ন প্রাইমারি স্কুল এর উত্তর পাশের পশ্চিম অংশে দেয়াল ভাঙা রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায় ৭ টি পরিবার’কে দীর্ঘ ৯ বছর বাড়িতে প্রবেশ এর রাস্তা বন্ধ করে উঁচু দেয়াল নির্মাণ করে অবরুদ্ধ রেখেছিল।
একাধিক স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে আলাপ করে জানা যায় আসলে তারা দীর্ঘদিন অবরুদ্ধ ছিল বাড়িতে প্রেবেশ ও বাহির হওয়ার চলাচলের রাস্তা ছিল না। কয়েকটি পরিবার রাগ করে ঘৃণা করে বাড়ি থেকে চলে গিয়ে ঢাকায় বসবাস করতেন। বিগত দিনের আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাব খাটিয়ে তাদের বাড়ির যাওয়া আসার রাস্তা বন্ধ দেয়। জাপান প্রবাসী হৃদয় বেপারী।
সে নিজের ক্রয়কৃত জায়গা দাবি করে রাস্তা বন্ধ করে ওয়াল করে দেয়। একাধিকবার বিষয়টি নিয়ে বসা হলেও কোন ফয়সালা হয়নি। পরে দেয়াল দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হয় পরিবার গুলোকে।বিগত সরকার বিদায় নেওয়া এখন পরিবার গুলো এলাকাবাসীর সহায়তায় দেয়াল ভেঙে দিয়ে বাড়িতে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার রাস্তা তৈরি করেছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের মোঃ রুবেল খান (৩৪) তিনি বলেন, আমি পৈত্রিক সূত্রে এই জমির মালিক।বিগত বছর গুলো আমাদের অনেক কষ্ট করে জীবন যাপন করতে হয়েছে।এখনো মনে হলে চোখ দিয়ে পানি আসে। বিগত ৯ বছর আমি অনেক অনুনয় বিনয় করেছি হৃদয়ের বেপারীর কাছে এবং তার আত্মীয়- স্বজনের কাছে বাড়িতে আসা-যাওয়া একটু রাস্তার জন্য।উনি প্রবাসে থাকলেও উনার আত্মীয়-স্বজন জোর করে এখানে দেয়াল তৈরি করে।
তারা আমার কোন কথাই শুনেনি আমাকে আর উল্টো ভয় দেখিয়েছে বলেছে এখানে দেয়াল করবোই এবং তা বাস্তবায়নও করেছে জীবনের ভয়ে কারো কাছে দিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করিনি এবং কোন সাহায্য চাইনি।এমনকি আমাকে আইনের সহযোগিতা নিতে দেয়নি। আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতাদের নিয়ে এসে বাড়িতে আনন্দ ফুর্তি করেছে। ভয়ে আমি চুপ ছিলাম। স্বৈরাচারীর বিদয়ে এখন মনে সাহস এসেছে এলাকাবাসী সাথে নিয়ে বাড়িতে প্রবেশের রাস্তার জন্য দেয়াল ভেঙ্গে ফেলেছি।এখান গ্রেট করে বাড়িতে প্রবেশের রাস্তা তৈরি করব।
ভুক্তভোগী রানু বেগম (৬৫) তিনি জানার ১৯৭১ সালে আমি নতুন বউ হয়ে এই বাড়িতে প্রবেশ করেছি।এখানে এই বাড়িতে বসবাস করছি তবে দীর্ঘ নয় বছর অবরুদ্ধ ছিলাম বাড়িতে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছিল।আমার রোপনকৃত অসংখ্য কাঁঠাল গাছ ও তারা কেটে ফেলেছিল ওয়াল তৈরি করার সময় বাধা দিয়েছি কোন কাজ হয়নি। আমার স্বামী একজন প্রতিবন্ধী মানুষ। সে কিছু বলতে পারেনা তবে চোখে সবই দেখতে পায় এবং বুঝতে পারে। সে ইশারায় তাদের’কে বলেছে এই জমির মালিক আমরা কিন্তু তারা কোন কথাই শোনে নাই। দেয়াল করে দিয়েছি।প্রতিবেদন তৈরিকারী সাথে প্রতিবন্ধী মোঃ তাজুল খান ইশারায় অনেক কিছুই বোঝানোর চেষ্টা করেছে।
একই গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ বাবুল সরকার বলেন, দেয়াল করা হয়েছে এটা আমরা দেখেছি ভয় কিছু বলতে পারিনি। অবরুদ্ধ ছিল দীর্ঘ কয়েক বছর এটাও সত্য ঘটনা। হৃদয় বেপারী উনি ক্রয় সূত্রে মালিক আর (তাজল খা) পৈত্রিক সম্পত্তির মালিক ও রুবেল এরা পৈত্রিক সম্পত্তির মালিক। ক্রয় সূত্রে মালিক ব্যক্তির দোষ হচ্ছে তিনি তার সুবিধার্থে ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের টাকা খাইয়ে অতিরিক্ত জায়গা তিনি দখল করছেন। কাগজপত্র দেখলে দেখবেন গোল খুঁজে পাওয়া যাবে।
ভুক্তভোগী পরিবারের চাচাতো ভাই মোঃ বিদ্যুৎ খান তিনি বলেন, আমি প্রবাসী হৃদয়ের বেপারী’কে একাধিকবার মোবাইল ফোনে বলেছি ভাই একটু দেওয়াল ভেঙে বাড়িতে যাওয়া আসার রাস্তা করে দিন এর জন্য যত টাকা খরচ হয় আমি নিজে দেব। তিনি আমার কথার কোন কর্ণপাত করেননি। তিনি একই কলা বারবারই বলেন এটা আমার জায়গা। আমাদের দাবি এই রাস্তায় আমাদের জায়গা।
প্রবাসী মোঃ হৃদয় বেপারী সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আল্লাহতালা আমাকে অনেক টাকা পয়সা অর্থ সম্পদ দিয়েছে আমি অন্যের জায়গা দখল করিনি। যেই স্থানে দেয়াল করা হয়েছে এটি আমার নিজের জায়গা তাদের রাস্তা এটা না। আমরা দু একদিনের মধ্যেই কাগজপত্র নিয়ে বসব যদি তাদের জায়গায় আমি ছেড়ে দেব। আমার দেয়াল ভাঙ্গা টা দুঃখজনক। খুব শীগ্রই বসে এটি সমাধান করা হবে।