মাধবপুর প্রতিনিধিঃ- হবিগঞ্জের মাধবপুরের তরুণী মোসা. ইয়াসমিন আক্তার গৃহকর্মীর কাজ করতে গিয়ে সৌদি আরবে পাশবিক নির্যাতনের কারণে তাকে দেশে ফেরত আনার জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন করা হয়। এর প্রেক্ষিতে ওই তরুণীকে জরুরি ভিত্তিতে দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সেলরকে (শ্রম) ব্যবস্থা গ্রহণের লিখিত আদেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) আদেশটিতে স্বাক্ষর করেন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. সারওয়ার আলম। মন্ত্রণালয়ে আবেদনকারী মাধবপুর উপজেলার স্থানীয় সাংবাদিক মুজাহিদ মসিকেও এর একটি অনুলিপি দেওয়া হয়েছে। মুজাহিদ মসি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদেশে বলা হয়েছে, হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের কমলপুর গ্রামের কুদ্দুস মিয়ার মেয়ে মোসা. ইয়াসমিন আক্তার গত ২৭ সেপ্টেম্বর সৌদি আরব যান। সেখান থেকে বাবার সঙ্গে অতি কষ্টে যোগাযোগ করে ইয়াসমিন জানান, তার ওপর পাশবিক অত্যাচার হচ্ছে। যে কারণে সে প্রায় মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন। এরপর তার বাবা ও স্বজনরা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে দেশে ফেরত আনার জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন।
এর প্রেক্ষিতে নারী কর্মী ইয়াসমিনকে জরুরী ভিত্তিতে দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সেলর কে (শ্রম) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়। গত ২৭ সেপ্টেম্বর দালালের মাধ্যমে সৌদি আরবের রিয়াদে গৃহকর্মীর কাজ করতে যান। সেখানে গিয়েই পাশবিক নির্যাতনে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই তরুণী। খুব কষ্টে ইমোতে বাবা কুদ্দুস মিয়াকে নির্যাতনের বিষয়টি জানিয়ে দেশে ফেরত আনার জন্য আর্তনাদ করেন ইয়াসমিন। এরপর মাধবপুরের স্থানীয় সাংবাদিক মুজাহিদ মসি ২ অক্টোবর প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে একটি লিখিত আবেদন করেন।
সেই আবেদনে বলা হয়, ইয়াসমিন রিয়াদ থেকে ইমোতে তার বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করে সৌদি আরবের রিয়াদে তাকে আটকে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে বলে জানান। তিনি নির্যাতন সহ্য করতে পারছেন না। তাকে যেন দ্রুত উদ্ধার করে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। এরপর ইয়াসমিনকে সৌদি আরবে পাঠানো দালাল কাশেম মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার আমতলী গ্রামের বাসিন্দা কাশেম মিয়া ঢাকার শা’ন ওভারসিস নামে একটি এজেন্সির মাধ্যমে ইয়াসমিনকে সৌদি পাঠিয়েছিলেন।
নির্যাতনের বিষয়ে কাশেম মিয়া জানান, তিনি ঢাকার আরামবাগ এলাকার শা’ন ওভারসিসে রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে ইয়াসমিনকে গৃহকর্মীর কাজ দিয়ে সৌদিতে পাঠিয়েছিলেন। সেখানে ইয়াসমিন ভালো আছেন। অভিযোগগুলো সঠিক নয়।শা’ন ওভারসিসের কর্মকর্তা সুইটি আখতার গণমাধ্যমকে জানান, একজন এজেন্ট ইয়াসমিনকে তাদের কাছে নিয়ে যান। সৌদি আরবে গিয়ে ইয়াসমিনের ভালো না লাগায় সে দেশে ফিরতে চাইছে। তাকে দেশে ফেরানোর চেষ্টা করা হবে বলেও জানান সুইটি আখতার।
মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মাইনুল ইসলাম বলেন, তিনি অভিযোগ পেয়েছেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত স্থানীয় দালাল কাশেমকে গতকাল মঙ্গলবার তার অফিসে ডেকে আনা হয়। কাশেম স্বীকার করেছেন, তার মাধ্যমে মেয়েটিকে সৌদিতে পাঠানোর কথা। তাই ওই ব্যক্তিকে সময়সীমা বেধে দেওয়া হয় মেয়েটিকে সেখান থেকে ফেরত নিয়ে আসতে। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা তাকে (কাশেম) জানানো হয়েছে।
চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিদ্ধার্থ ভৌমিক বলেন, ভিকটিমের বাবা কুদ্দুছ মিয়া ও অভিযুক্ত কাশেম বুধবার (৫ অক্টোবর) আমার কার্যালয়ে এসেছিলেন। কুদ্দুছ মিয়া তার মেয়ের নির্যাতনের বিষয়টি আমাকে সবিস্তারে জানিয়েছেন। অভিযুক্ত কাশেম মিয়া ১৫ অক্টোবরের মধ্যে ইয়াসমিন বেগমকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।#
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতিঃ সাঈদুর রহমান রিমন। প্রকাশক ও সম্পাদক ফয়সাল হাওলাদার। বার্তা- সম্পাদক জুয়েল খন্দকার। প্রধান কার্যালয়ঃ- ৩৮/১ আরামবাগ.(মতিঝিল) ঢাকা-১০০০। ইমেলঃ- bdccrimebarta@gmail.com, মোবাঃ ০১৭৩২৩৭৯৯৮২
ইপেপার