স্টাফ রিপোর্টারঃ সুবর্ণচর উপজেলায় একটি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তার কথা চিন্তা করে মরহুম অলি উদ্দিন আহমেদ তিন একর জমি দান করেন, এলাকার মানুষের সহযোগিতায় ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে চরজব্বর ডিগ্রি কলেজ। বর্তমান সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে দূর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করলেও চরজব্বর ডিগ্রি কলেজে ভর্তি বানিজ্য, শিক্ষক-কর্মচারীদের হয়রানি, ছাত্র ছাত্রীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ, রশিদ ছাড়া অবৈধভাবে এডমিট ফি,সরকারি নীতিমালা অমান্য করে অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায়, সার্টিফিকেট ফি আদায়, গভর্নিং বডিকে হিসেব নিকেশ না দেওয়া, বিদায় অনুষ্ঠান ও অন্যান্য অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না করাসহ দূর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ আত্বসাতের অভিযোগ উঠেছে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন ফরহাদ কোন সরকারী নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে একাধিক অনিয়ম অন্যায় ও দূর্নীতির মাধ্যমে টাকা আত্বসাত ও ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন অত্র কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও গভর্নিং বডির অধিকাংশ সদস্যবৃন্দ। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের এসব অনিয়ম ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে গত ১৪ আগস্ট কলেজের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন অত্র কলেজের ছাত্র ছাত্রীবৃন্দ, যা সোস্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় ভাইরাল হয়, যার ফলশ্রুতিতে সরকারি নীতিমালা বহির্ভূত অবৈধভাবে এডমিট ফি কেন আদায় হচ্ছে জবাব চেয়ে নোটিশ প্রদান করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চৈতী সর্ব বিদ্যা।
কলেজ হিসাব রক্ষক গোলাম রসূল জানান, শিক্ষক সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের (এইচএসসি) ছাত্র/ছাত্রীর বেতন/ পরীক্ষার ফি বাবদ এক লক্ষ আটানব্বই হাজার পাঁচশত টাকা নগদ আদায় করেন ইংরেজি প্রভাষক সাফিয়া ম্যাডাম, ২০২১-২২ সেশন ফি বাবদ দুই লক্ষ চুয়াত্তর হাজার টাকা নগদ আদায় করেন বাংলা প্রভাষক স্বপ্না ম্যাডাম, ২০২৩ এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে রফিক উল্যা স্যার (ইংরেজী) ও বেলায়েত স্যার (কেমিস্ট্রি) কর্তৃক টাকা আদায় করে কি করেছে আমার জানা নেই, ব্যাংক একাউন্টে জমা হয়নি, কলেজ রেজিস্ট্রার খাতায় ও আসেনি।
জানা যায়, এর আগেও গত ১০/০৩/ ২০০৫ সালে অত্র কলেজের ততকালীন গভর্নিং বডির সভাপতি সাবেক নোয়াখালী জেলা প্রশাসক মকসুদুল হাকিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এক সভায় সামগ্রিক বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার পর নিন্মলিখিত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়ঃ-
অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, কতিপয় শিক্ষক ও কর্মচারী কলেজে প্রায়শই অনুপস্থিতি, খামখেয়ালি, অনিয়ম, দূর্নীতি,ছাত্র ভর্তি ও রেজিষ্ট্রেশনে ত্রুটি, ছাত্র ছাত্রীদের বিষয় রদবদল ও ভূল তথ্য প্রদান, এমপিও স্হগিত করন ইত্যাদি সার্বিক বিষয় খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্টদের দায় দ্বায়িত্ব নির্ধারণ করে সুপারিশ সহ একটি প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নোয়াখালীর বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ আবদুল হাই এর সমন্বয়ে এক সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়,
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের অনিয়ম ও দূর্নীতির কথা স্বীকার করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজ গভর্নিং বডির একাধিক সদস্য জানান, উনি কোন প্রকার নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করেন না, কলেজের আয় ব্যায়ের হিসেব নিকেশ দেন না, কলেজ অধ্যক্ষের হাতে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা থাকতে পারবে এর বেশি নয়, এমন নীতিমালা থাকলেও উনি লক্ষ লক্ষ টাকা হাতে রেখে নিজ ক্ষমতা বলে কলেজের উন্নয়নের কাজের বাউচার দেখিয়ে ঐসব টাকা তসরুপ করছেন, হিসাব রক্ষক রশিদের মাধ্যমে টাকা আদায় করার কথা থাকলেও উনি শিক্ষকদের মাধ্যমে টাকা আদায় করান, ঐ টাকার হিসেব রেজিস্ট্রার বইয়ে আসে না, কলেজের ৫১০১ নং রশিদ বই গরু বাজারে পাওয়া গেছে, উনার অনিয়ম ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে উপজেলা অডিট অফিসারের নেতৃত্বে একটি অডিট কমিটি গঠন করে কলেজের যাবতীয় আয় ব্যায়ের হিসাব নিকাশ নিরুপুন করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৈতী সর্ব বিদ্যাকে অনুরোধ করছি।
অনিয়ম ও দূর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন ফরহাদ জানান, তিনি কোন প্রকার অনিয়ম ও দূর্নীতির সাথে জড়িত নন।