রিয়াদ ইসলাম, নীলফামারী প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর জলঢাকায় ৩নং বালাগ্রাম ইউনিয়নের ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডে বিগত ৮ মাসে গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে ১৪/১৫টি,দেখার কেউ নাই। এ যেন গরু-ছাগল চুরির মহোৎসব চলছে ইউনিয়নটিতে। এই মহোৎসবের ইন্ধনদাতা হিসেবে অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যান আহমেদ হোসেন ভেন্ডারের বিরুদ্ধে। মাত্র কয়েক মাসে প্রায় ২৯ টি গরু ছাগল চুরির ঘটনায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ থানায় একাধিক অভিযোগ দায়ের করেও কোন প্রতিকার পায়নি ভুক্তভোগীরা। বর্তমান চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর চুরি আতংকে বালাগ্রাম ইউনিয়নবাসী।
ভুক্তভোগী পরিবার গুলোর অভিযোগ চেয়ারম্যানের ইন্ধনে একটি সংঘবদ্ধ চোরচক্র গত কয়েক মাসে ১৪/১৫ টি পরিবারের প্রায় অর্ধশত গরু-ছাগল চুরি করেছে। চুরি হওয়া গরু- ছাগলের বাজারমূল্য প্রায় ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা বলে জানা গেছে। সরেজমিনে গেলে জানা যায়, গত ২২জুলাই রাতে রতন কুমার নামে এক কৃষকের ৬টি গরু নিয়ে যায় সংঘবদ্ধ চোর চক্র।
অপরদিকে,গত ১৫ জুলাই মাঝরাতে কাঁঠালী ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ দেশীবাই ডাঙ্গাপাড়া এলাকার মৃত আছিমুদ্দিনের ছেলে মাহমুদুল হকের বাড়ি থেকে বাছুরসহ একটি গাভী চুরি হয়ে যায়। যার আনুমানিক মূল্য সোয়া ২ লাখ টাকা। এ বিষয়ে জলঢাকা থানায় অভিযোগ করেও এখন পর্যন্ত কোন প্রতিকার পায়নি ভুক্তভোগী মাহমুদুল হক। বালাগ্রাম ইউপি ২ নং ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য মনোরঞ্জন রায়সহ ভুক্তভোগী কৃষকরা জানায়, প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে একটি চক্র রাতের বেলায় গরু-ছাগল চুরি করে কোনরকমে পাকারাস্তায় এনে পিকাপ অথবা নছিমনে করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাচার করে।
তবে কৃষকরা বেশির ভাগে সংখ্যালঘু হাওয়ায় হেনস্তার ভয়ে ওই প্রভাবশালী চেয়ারম্যান ও সংঘবদ্ধ চোর চক্রটির নাম বলতে রাজি নন। এমনকি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের ফের গরু-মহিষ চুরি করে নিয়ে যাওয়ার ভয়ে মামলা করছেন না তাঁরা। তবে সংঘবদ্ধ চক্রটির বিরুদ্ধে পুলিশ যেন দ্রুত ব্যবস্থা নেয় এই দাবী করেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। বালাগ্রাম ইউপি ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য মুকুল অধিকারী ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে বলেন, চেয়ারম্যানের সাথে কথা হয়েছে, উনি সকল সদস্যদের ডেকে গরু চুরির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো। আলোচনার মাধ্যমে আমরা সিদ্ধান্ত নিবো। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে গরু চুরির সরঞ্জামসহ একজনকে আটক করে থানায় দিয়েছি। আজকেও চারজনকে সন্দেহ ভাজন আটক করে থানায় জমা দিয়েছি।
বালাগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান আহমেদ হোসেন ভেন্ডার বলেন,ওইদিকের লোকজন আমাকে দেবতার মতো মানে, আমার বিপক্ষে কিছু লোকজন আছে তাঁরাই এখানে ইনভলভ আছে। তাঁরাই এগুলো ঘটাচ্ছে। ইতিমধ্যে দুজন চোর ধরা আছে, ওরা রিমান্ডে আনা হবে। আর আমাকে থানার দারোগা ওসি বলছে আপনি চিন্তা করবেন না তাদেরকে আমরা সনাক্ত করবো। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমার নামে অভিযোগতো তাঁরা আনতে পারে না। আমার যখন ওখানে ৮টি বাড়ি চুরি হয়েছে আমি তখন লজ্জিত হয়ে গেছি, আমি লজ্জা পাইছি। লোক গুলাকে আমি কি বলি। আমি মনে করতেছি অভিযোগকারীদের ষড়যন্ত্র চলছে। এই ঘটনার বিষয়ে জলঢাকা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুক্তারুল আলম মুঠোফোনে বলেন, মামলা হয়েছে থানায় তদন্ত চলছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতিঃ সাঈদুর রহমান রিমন। প্রকাশক ও সম্পাদক ফয়সাল হাওলাদার। বার্তা- সম্পাদক জুয়েল খন্দকার। প্রধান কার্যালয়ঃ- ৩৮/১ আরামবাগ.(মতিঝিল) ঢাকা-১০০০। ইমেলঃ- bdccrimebarta@gmail.com, মোবাঃ ০১৭৩২৩৭৯৯৮২
ইপেপার