রিয়াদ ইসলাম নীলফামারীঃ নীলফামারীর জলঢাকায় বসতভিটার জমি জোরপূর্বক জবর দখলের চেষ্টা চালিয়ে রাতের আধারে অবকাঠামো তৈরী করার অভিযোগ উঠেছে জমি বিক্রেতার ওয়ারিশ বর্গের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ‘৯৯৯’ এর ফোনের পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিক থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে দখলকারীরা তাদের তৈরীকৃত অবকাঠামো সরিয়ে নেন এবং আলামত হিসাবে ঘটনাস্থল থেকে বাশঁ ও বাঁশের চাটাই জব্দ করে নিয়ে যায় থানা পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে ৮ আগষ্ট (মঙ্গলবার) রাত সাড়ে ১১টায় পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড বগুলাগাড়ি ক্যানেলেরপাড় বারোঘড়ি পাড়া নামক স্থানে।
সরেজমিন ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,পৌর শহরের এ এলাকার মৃত নৈমুল্যা মামুদ সিএস-৪৭৪ ও এসএ-৮৩৫ নং রেকর্ডমূলে মালিক হয়ে বিগত ২৪/০৫/১৯৬৩ইং সালে মেয়ে জামাই মৃত জহির উদ্দীনকে ৬৭৮৩ নং দাগে ৯৭ শতকের মধ্যে ৩২ শতাংশ জমি রেজিস্ট্রি করে দেন। যার দলিল নং-২৬৪২। উক্ত জমি মৃত জহির উদ্দীন দলিলমূলে প্রতিবেশী মৃত তছর উদ্দীনের কাছে ৩২ শতকের মধ্যে ১৬ শতাংশ জমি বিক্রি করে দখল হস্তান্তর করেন। এরপর মৃত তছর উদ্দীন বসতবাড়ি তৈরী করেন এবং বসতবাড়ির চতুর্দিকে বাঁশঝাড় লাগান। এমতবস্থায় গত ১৬/০৪/১৯৬৬ ইং সালে মৃত তছর উদ্দীন তার ছেলে আব্দুল জলিলকে উক্ত বসতভিটার ১৬ শতাংশ সম্পূর্ণ জমি রেজিস্ট্রি দলিল দিয়ে মারা যায়। যার দলিল নং ২৯৯৭। এরপর থেকে আব্দুল জলিল উক্ত জমিতে বসতবাড়ি ও চতুর্দিকে বাশঁঝাড় নিয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোগদখল করে আসছেন।
কিন্তু হয়রানী মূলক ভাবে উক্ত ভোগ দখলীয় জমির উপরে গত ১৯ জুলাই ২০২৩ ইং তারিখে ‘বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে’ ১৪৪/১৪৫ ধারায় রিপা আক্তার বাদী হয়ে একটি ফৌজদারি মামলা করেন। যার মামলা নং-১৬১/২৩। এরপরে রিপা আক্তার উক্ত জমি দখলে নিতে গত ৮ আগষ্ট ২০২৩ ইং তারিখে আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে রাতের আধারে আব্দুল জলিল এর উক্ত ভোগ দখলীয় জমিতে রিপা আক্তারসহ ও তার লোকজন জমি জবর দখলের উদ্দেশ্যে বাঁশের চাটাই ও টিনসেট চালা তৈরী করতে গেলে আব্দুল জলিল তাদেরকে বাধা নিষেধ করেন। একপর্যায়ে জবর দখলকারীরা আব্দুল জলিল ও তার পরিবারের লোকদের উপর চড়াও হয়।
এসময় বাধ্য হয়ে আব্দুল জলিল ‘৯৯৯’ এ ফোন করে বিষয়টা জানালে জলঢাকা থানার এ এস আই মাইদুল ইসলাম তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং রিপা আক্তার ও তার লোকজন অবকাঠামোর সরঞ্জামাদি তুলে নিয়ে যায়। আলামত হিসেবে অবকাঠামোর ব্যবহৃত কোদাল,বাঁশ ও বাঁশের চাটাই থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে এ বিষয়ে আব্দুল জলিল বাদী হয়ে রিপা আক্তারকে ১ নম্বর আসামী করে ৫ জনের নামে জলঢাকা থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন।
স্থানীয়দের মধ্যে অনেকে বলেন, মৃত জহির উদ্দীন ওই দাগের ৩২ শতাংশ জমির মধ্যে ১৬ শতক দিয়েছে আব্দুল জলিলের পিতা মৃত তছর উদ্দীনকে ও বাকি ১৬ শতাংশ জমির মধ্যে ৮ শতক জমি দিয়েছে প্রতিবেশী মৃত মকবুল হোসেনকে এবং বাকি ৮ শতক দিয়েছেন তহদ্দি মাহমুদকে। ওই দাগে জহির উদ্দীনের আর কোন জমি নাই। তার মেয়ে রিপা আক্তার মানুষের উসকানিতে সেখানে জোর করে ঘর তুলে দখল ধরার চেষ্টা করতেছে।
সরেজমিনে স্থানীয়দের মধ্যে ৭৫ বছরের আব্দুল হালিম ও কবিরাজ সামসুল হক সাংবাদকর্মীদের বলেন,এই জমি আব্দুল জলিল তার বাপের আমল থেকে অর্থাৎ প্রায় ৪৫/৫০ বছর ধরে ভোগদখল করে আসছে। ঠিক কি কারনে? বা কোন সূত্রে? রিপা আক্তার জমিটি নিজের বলে দখল করতেছেন তা আমরা এলাকাবাসীর জানা নেই।ঘটনা বিষয়ে ভুক্তভোগী আব্দুল জলিল বলেন,আমার বাবার লিখে দেয়া জমিতে বসতবাড়ি ও বাঁশঝাড় লাগিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছি। আমার কাগজপত্র সবকিছুই ঠিক আছে। কিন্তু রিপা আক্তার ও তার লোকজন আমাকে বিভিন্ন রকম হুমকি ধামকি দিয়ে এমন কি হয়রানি মূলক মামলা দিয়ে জোরপূর্বক জবর দখল করার চেষ্টা করতেছে। আমি ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে জহির উদ্দীনের মেয়ে রিপা আক্তার মিডিয়ার সামনে আসতে বা কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করায় তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। জলঢাকা থানার এ এস আই মাইদুল ইসলাম বলেন, ‘৯৯৯’ এর ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। যারা নতুন করে স্থাপনা করতে চেয়েছিল আমাদের উপস্থিতি দেখে তারা নিজেরাই স্থাপনা সরে নিয়েছে। এখন আদালত যে নির্দেশনা দিবে সেভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে জলঢাকা থানার ওসি মোক্তারুল আলম এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বিষয়টা আদালত দেখতেছেন। আদালত যেভাবে বলবেন, আমরা সেভাবে ব্যবস্থা নিব।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতিঃ সাঈদুর রহমান রিমন। প্রকাশক ও সম্পাদক ফয়সাল হাওলাদার। বার্তা- সম্পাদক জুয়েল খন্দকার। প্রধান কার্যালয়ঃ- ৩৮/১ আরামবাগ.(মতিঝিল) ঢাকা-১০০০। ইমেলঃ- bdccrimebarta@gmail.com, মোবাঃ ০১৭৩২৩৭৯৯৮২
ইপেপার