নিজস্ব সংবাদদাতাঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকার পাথালিয়া ইউনিয়নের ইসলামনগরে মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ সহ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করার অভিযোগ করেন ডিস ব্যবসায়ী মমিনউল্লাহ মমিন। ভুক্তভোগী গণমাধ্যম কে জানান, চাঁদা না দিলে আমার ডিসের ব্যবসা বন্ধ ও হাত- পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি প্রদান করেন, মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণকারী ও মাদকসেবি দুই ছাত্রলীগের নেতা।
এঘটনায় জানমালের ভয়ে আশুলিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মমিনউল্লাহ মমিন। বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আমবাগান পানধোয়া এলাকায় ডিসলাইন সংযোগের ব্যবসা করেন ভুক্ত ভোগী মমিন। অভিযুক্ত'রা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭তম ব্যাচের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান এবং ৪৬তম ব্যাচের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শান্ত মাহবুব। হাছিব, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ-দপ্ততর সম্পাদক এবং শান্ত ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক। তারা দু'জনই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের অনুসারী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আম-বাগান এলাকায় ডিস লাইন সংযোগের ব্যবসা করেন ভুক্তভোগী মমিন। গত ১৫ এপ্রিল হাছিব ও শান্ত সাত- আট জন লোক নিয়ে গিয়ে তার কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। এ সময় চাঁদার টাকা না দেওয়ায় ডিস সংযোগের লাইন কেটে দেন। গত ১ মে আম- বাগান এলাকা থেকে অফিসের স্টাফ মোঃ খাইরুল ডিসের বিল সংগ্রহ করতে গেলে দলবেঁধে মাদকসেবী ছাত্রলীগ নেতা হাছিবুর রহমান তাকে তুলে নিয়ে যান।এবং তার কাছে থাকা নগদ সাড়ে আট হাজার টাকা জোরপূর্বক কেড়ে নেয়। পরে ডিস লাইন বিল সংযোগ কর্মচারী খাইরুলের পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেয়।
এঘটনায় গত ৫ মে হাছিবুর ও শান্ত ডিশ লাইনের মেশিন ও ডিস তার কেটে নিয়ে যায়। এছাড়াও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। সর্বশেষ ৭ মে দুই অভিযুক্তরা অফিসের স্টাফ খাইরুলকে ফোন করে এলাকা ছেড়ে যাওয়ার হুমকি দেন। ডিস ব্যবসায়ী মমিন জানান, দেড় মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করছে।
চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে শান্ত, মাহবুব ও হাছিবুর রহমান সহ আরও সাত-আট জন ব্যবসা বন্ধ করার হুমকি দিয়ে গেছে। এরপরও ব্যবসা পরিচালনা করায় ডিশের লাইন কেটে দেয় এবং লাইনম্যানকে তুলে নিয়ে যায়। এর ফলে গত একমাস ধরে ব্যবসা বন্ধ আছে। ব্যবসা করলে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। চাঁদা দাবির বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে অভিযুক্ত হাসিব বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। মমিন নামে কাউকে চিনি না।’ অপর অভিযুক্ত শান্ত বলেন, ‘আমরা কোনও চাঁদা দাবি করিনি। ওই ব্যক্তির সঙ্গে ঈদের আগে কোনও কথা হয়নি। কয়েকদিন আগে কথা হয়েছিল।
মাসুদ নামের একজনের সঙ্গে পানধোয়া এলাকায় ডিস লাইন ব্যবসার অংশীদার হয়েছে হাছিব। সেই হিসেবে মাসুদের সঙ্গে অন্য অংশীদারদের ঝামেলা হওয়ায় তারাই লাইন কেটে দিয়েছে। এখানে চাঁদা দাবির কোনও ঘটনা ঘটেনি।’অংশীদারিত্বের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে ব্যবসায়ী মমিন বলেন, ‘হাসিব আমাদের ব্যবসার অংশীদার কোনদিন ছিলনা। আমরা মোট চার জন অংশীদার আছি। এর মধ্যে হাসিব নেই।’
অফিসের স্টাফ খাইরুল বলেন, ‘ডিস বিল কালেকশন করতে গেলে কার বিল তুলছি এমনটা জানতে চান হাসিব। আমার হাত থেকে বিলের খাতা কেড়ে নিয়ে আমাকে বাইকে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে চরমভাবে মারধর শুরু করে। এ বিষয়ে জাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন বলেন, ‘তারা অভিযোগের বিষয় প্রমাণ করতে পারলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর প্রমাণ করতে না পারলে আমরাও ব্যবস্থা নেবো। মামলার বিষয়ে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম জানান, ‘গত সোমবার অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার তদন্তের জন্য আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে থানায় ছিনতাইয়ের একাধিক মামলা হয় এদের সহযোগীদের নামে, যার বাদি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এর ভিতরে মোবাইল সেট ছিনতাই করতে গিয়ে তার অপর সহযোগী ওরূপে কালা বাবু গণপিটুনি তে মারা যায়। এখন মাদক সম্রাট ডন ওরুফে ছোট্টসা রনি। রনি ও ফজলে আমিন রাব্বী এমন একটি সিন্ডিকেট মাদক ব্যবসা করছে। এদের মধ্যে রাব্বী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৪৩তম সমাবর্তনের শিক্ষার্থী।
রাব্বী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ রফিক জব্বার হলে থাকতেন। রনি গকুল নগরে বাসিন্দা পিতাঃ- পিয়ার আলী। ১ শরিফ ২ সবুজ ৩ রতন। ইসলাম নগরের ৪ রফিক।এদের নামে থানায় একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর প্রশাসনের কাছে একাধিক ছিনতাই মামলা রয়েছে। রাব্বী ও রনি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ রফিক জব্বার ও আলবে রুনী হলের ছাত্র বলে জানা যায়।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতিঃ সাঈদুর রহমান রিমন। প্রকাশক ও সম্পাদক ফয়সাল হাওলাদার। বার্তা- সম্পাদক জুয়েল খন্দকার। প্রধান কার্যালয়ঃ- ৩৮/১ আরামবাগ.(মতিঝিল) ঢাকা-১০০০। ইমেলঃ- bdccrimebarta@gmail.com, মোবাঃ ০১৭৩২৩৭৯৯৮২
ইপেপার