• বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
আমরা এক পরিবার, কেউ কারো শত্রু হবো না: প্রধান উপদেষ্টা সীমান্তের বিএনপি নেতা সাবেক ইউপি সদস্যের ভাতিজা ইয়াবাসহ আটক আওয়ামীপন্থী পুলিশ কর্মকর্তাদের নামের তালিকায় ময়মনসিংহের ওসি সফিকুল ইসলাম ভাড়া বাড়িতে কলেজ ছাত্রের ঝুলন্ত লাশ, মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা যুবদল নেতা হত্যা মামলায় পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বাবুল সরদার চাখারী কারাগারে তিন দিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর: সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে হচ্ছে কমিটি, আন্দোলন স্থগিত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরো অর্ধশত ফিলিস্তিনি নিহত সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ৮ দিনের রিমান্ডে টাঙ্গাইলে বাস-পিকআপভ্যান সংঘর্ষে চারজন নিহত

নোংরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে বেকারি পণ্য ডেনিস- ফেডিস

সংবাদদাতা / ২১০ পাঠক ভিউ
আপডেট সময় : রবিবার, ২৪ জুলাই, ২০২২

শফিকুল ইসলাম শফিকঃ বেকারি পণ্যের নামে আসলে আমরা কি খাচ্ছি ? নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা জালকুড়ি কড়ইতলা এলাকায় ফেডিস পট্রি নামে গড়ে উঠেছে একাধিক ফেডিস কারখানা,এর বেশিরভাগ বেকারি পণ্য ডেনিস- ফডিস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগের যেন শেষ নেই। নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে। খাদ্য উৎপাদন ও সংরক্ষণেও রয়েছে চরম অব্যস্থাপনা। এছাড়াও পণ্য রাখার ঘর যেমন অপরিষ্কার।

পোকামাকড়েও ভরপুর। সর্বোপরি কোন প্রতিষ্ঠানের নেই বিএসটিআইয়ের লাইসেন্স। কোন রকম মান বজায় রেখে উৎপাদন করা হচ্ছে না। অনুমোদন ছাড়াই বেকারি পণ্যের উৎপাদন এখন নিয়মিত বিষয় হয়ে উঠেছে। ফলে মানব স্বাস্থ্যের বিষয়টি এখন হুমকির মুখে পড়ছে। সম্প্রতি কিছু বেকারি পণ্যের উৎপাদনের এই বেহাল চিত্র উঠে এসেছে।

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্র্র্তৃপক্ষ নিয়মিত ভেজাল খাদ্যের বিরুদ্ধে বিশেষ করে বেকারি পণ্যের কারখানায়, হোটেল রেস্টুরেন্ট ও পানি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। অভিযানে দেখা যাচ্ছে, এসব অভিযোগ ছাড়াও বেকারি পণ্য উৎপাদনের সঙ্গে জড়িতরা কোন ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করছে না। এই অভিযোগ বেশিরভাগ বেকারি পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

২৩ শে জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুরে কয়েকজন সাংবাদিক জালকুড়ি কড়ইতলা এলাকায় ফেডিস পট্রি নামে গড়ে উঠা একাধিক কারখানার চিত্র ধারণ করতে গেলে কারখানার মালিক ও কর্মরত শ্রমিকরা সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে অকাত্য ভাষায় গালিগালাজ সহ মারমুখী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়।

যে কারখানাগুলোতে খাদ্যদ্রব্য উৎপাদনে চরম অব্যবস্থাপনা লক্ষ্য করা যায়। একইসঙ্গে খাদ্য সংরক্ষণের কক্ষ অপরিষ্কার পাওয়া যায়। তাছাড়া কারখানা কর্তৃপক্ষ কারখানা পরিচালনার জন্য আবশ্যকীয় লাইসেন্স, যথাযথ কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত কর্মচারীদের স্বাস্থ্য সনদ, পণ্য ক্রয় চালানের কপি, পেস্ট কন্ট্রোল প্রমাণকসহ আনুষঙ্গিক কাগজপত্রও নেই কোন প্রতিষ্ঠানরেই।

নিরাপদ খাদ্য অধিদফতরের কর্তৃপক্ষ জানায় কোন খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনিয়মের তথ্য সংগ্রহ করে প্রথমে মনিটর করা হচ্ছে। তথ্য প্রমাণ জোগার করার পর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত পরিচালিত হোটেল রেস্টুরেন্ট, পানি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, মিষ্টির উৎপাদন ও বিপণন কারখানা ও দোকালগুলো অভিযান চালিয়ে একই চিত্র লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সবচেয়ে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ পাওয়া গেছে বেকারি পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো।

তারা জানায় সম্প্রতি বিভিন্ন কারখানায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে একই অভিযোগে জরিমানা করা হয়েছে।কারখানা পরিচালনার জন্য আবশ্যকীয় লাইসেন্স, যথাযথ কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত সকল কর্মচারীর স্বাস্থ্য সনদ, পণ্য ক্রয় চালানের কপি, পেস্ট কন্ট্রোল প্রমাণকসহ আনুষঙ্গিক কাগজপত্র প্রদর্শনে ব্যর্থ হলেই তাদেরকে জরিমানার সহ শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে।

এসব প্রক্রিয়াজাত খাবার উৎপাদনে কোন নিয়মনীতির বালাই নেই। অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে প্রস্তুতকৃত খাদ্য উৎপাদন, বিতরণ ও সংরক্ষণ করা হচ্ছে। প্রসেস করা খাবারে কোন লেবেলিং পাওয়া যাচ্ছে না। বেকারি পণ্য চরম নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে। উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত মালিক সহ কর্মচারীদের কোন স্বাস্থ্য সনদ নেই।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের খাবার স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। খাদ্যদ্রব্য উৎপাদনে অব্যবস্থাপনা ও দায়িত্বহীনতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠছে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

এসব প্রতিষ্ঠানকে বারবার নিয়ম মেনে খাদ্য প্রস্তুত, বিতরণ এবং সংরক্ষণের কথা বলা হলেও তা মানছে না। আবার খাদ্যের কোন লেবেলিং নেই। বিশেষ করে খাদ্যের উৎপাদন এবং মেয়াদসহ পণ্যের গায়ে লেবেল সেঁটে দেয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু অভিযানে এসবের কিছু দেখা মেলেনি। এছাড়া বেকারি পণ্য উৎপাদনে যে রং ব্যবহার করা হচ্ছে তাও ফুড গ্রেড নয়। ভেজাল পণ্য দিয়ে খাদ্য প্রস্তুত করা হচ্ছে ঐ কারখানাগুলোতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন পিওর ফুড উৎপাদনে যে মান বজায় রেখে বেকারি পণ্য তৈরি বিধান রয়েছে তার ধারে কাছেও নেই কারখানাওয়ালারা।

পণ্যের মান সংরক্ষণে নেই কোন ব্যবস্থা। উৎপাদনের তারিখ লেখা থাকলেও মেয়াদ নেই অনেক বেকারি পণ্যের গায়ে। বারবার এদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হলেও নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের উন্নতি হচ্ছে না। অভিযানের কারণে এখন বেশিরভাগ বেকারি পণ্যে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স নিলেও তারা উৎপাদনের শর্ত মানছে না। অভিযান চলছে, জরিমানা মামলা হচ্ছে। কিন্তু তাতে কী? গত এক বছরে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বহুবার অভিযান চালানো হয়েছে, জরিমানা ও মামলা করা হচ্ছে। মূলত সচেতনতার অভাবে বেকারির পরিবেশের উন্নতি হচ্ছে না।

কোন কোন প্রতিষ্ঠানে লাইসেন্স থাকলেও উৎপাদনকারীরা বিএসটিআইয়ের কোন শর্ত মানছে না। মান বজায় রেখে পণ্য উৎপাদন করছে না। অভিযানে দেখা গেছে প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশ পাওয়া যাচ্ছে। অভিযানে দেখা গেছে, কালিঝুলি মাখা প্রতিটি কারখানার ভেতরে-বাইরে নোংরা কাদা, তরল ময়লা-আবর্জনা পরিবেশ। দুর্গন্ধের ছড়াছড়ি। আশপাশেই নর্দমা ময়লার স্তুূপ। মশা-মাছির ভন ভন আর একাধিক কাঁচা-পাকা টয়লেটের অবস্থান।

কারখানাগুলো স্থাপিত হয়েছে টিনশেড বিল্ডিংয়ে। বহু পুরনো চালার টিনগুলো স্থানে স্থানে ছিদ্র থাকায় বৃষ্টির পানিও অনায়াসেই কারখানার ঘরে ঢোকে। এতে পিচ্ছিল কর্দমাক্ত হয়ে থাকে মেঝে, কাদাপানি ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায় খাবারের, কারখানাগুলোয় পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা নেই, দম বন্ধ হওয়ার মতো গরম। এমনি পরিবেশে উৎপাদিত হচ্ছে বেকারি পণ্য।

যা সকালে স্থানীয় এলাকাবাসী নাস্তার জন্য ব্যবহার করে। এছাড়াও রাত-দিন গরমে ঘামে চুপসানো অবস্থায় খালি গায়ে বেকারি শ্রমিকরা আটা-ময়দা-দলিত মথিত করে। সেখানেই তৈরি হয় ডেনিস ফেডিস সহ নানা লোভনীয় খাদ্য। উৎপাদন ব্যয় কমাতে এসব বেকারির খাদ্যপণ্যে ভেজাল আটা, ময়দা, ডালডা, তেল, পচা ডিমসহ নিম্নমানের বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার করা হচ্ছে। তৈরির জন্য পেপারমেন্ট।#


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিস্তারিত...