পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে ডাক্তার এর চেম্বারের সামনে ঘন্টার পর ঘন্টা রোগীদের অপেক্ষা। এসময় ডাঃ আতিকুর রহমান তার নিজ চেম্বারে জন্মদিন অনুষ্ঠান ও বিভিন্ন কোম্পানির রিফেন- জেটিফদের নিয়ে কেক কাটা অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাঃ আতিকুর রহমান এমনটাই অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
গত ১৫ অক্টোবর রবিবার দুপুর আড়াই টার সময় পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে ডঃ আতিকুর রহমান এর চেম্বারে চিকিৎসা নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হন এক ভুক্তভোগী। খোজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৫ অক্টোবর সকালে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে ১০ টাকার টিকিট কেটে ডাক্তার আতিকুর রহমানের চেম্বারে সামনে ভিড় জমায় রোগীরা।
এসময় ডিউটিরত ডাঃ মো,আতিকুর রহমান কালক্ষেপন করে রোগী না দেখে নিজ চেম্নারের ভিতরে ইন্টার্নি করা ছাত্র ছাত্রী নিয়ে জন্মদিনের কেক কেটে অনুষ্ঠান পালনে ব্যস্ত। পরে বিভিন্ন কোম্পানির রিফেন জেটিপরা ভিড় জমায় চেম্বারে সামনে। এসময় অনুষ্ঠান শেষ করে ব্যস্ত হয়ে পরেন ঔষধ বিক্রেতাদের নিয়ে।
রোগীদের কাছ থেকে জানা যায় ঔষধ বিক্রেতা’রা তাকে বিভিন্ন আইটেমের গিফট দিতে দেখা যায়। এবিষয় ঘটনা স্থলে থাকা সাংবাদিকের মোবাইল থেকে ধারণ করা একটা ভিডিও ফুটেজ পাওয়া যায়। সেখানে ভিডিও তে দেখা যায় ডাক্তার ও তার সহকারীরা সবাই মিলে কেক কেটে আনন্দ উল্লাসে ব্যাস্ত সময় পাড় করছে।
এসময় গুরুত্বর অসুস্থ রোগী’রা ডাক্তারকে চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য আকুতি মিনতি করছে। এসময় ডাক্তার ও তার সহকারী’রা ক্ষিপ্ত হয়ে রোগীর সঙ্গে পাল্টা পাল্টি জবাবদিহিতা করছে। এসময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন গণ- মাধ্যমকর্মী এসব চিত্র ধারন করতে গেলে তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। পরে গণ- মাধ্যম সহ রোগীদের সঙ্গে অশ্লীল ভাষায় কথা বলে ডাক্তারসহ তার সহকর্মী’রা এমনটাই জানান গণমাধ্যমকর্মী।
সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত ৩ থেকে ৪ ঘন্টা অপেক্ষার পর কেন তারা সেবা পাবেনা জানতে চাইলে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়ার চেষ্টা করে রোগীদের। পরে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে গুরুত্বর অসুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফিরে যায় ঐ অপদস্ত হওয়া রোগী।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পটুয়াখালীর সংবাদকর্মী’রা বিষয় টি জানতে পেরে উপস্থিত রোগীদের সঙ্গে কথা বললে জানা গেছে, ৩-৪ ঘন্টা পর ডাক্তার এসে রোগী না দেখে দরজা আটকে ঔষধ কোম্পানির উপহার নেয়া ও কেক কাটায় ব্যাস্ত হয়ে পরে। রোগী’রা অনেক অনুরোধ করলেও তাদের বিনোদন নিয়ে তারা ব্যাস্ত থাকে।
সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এক বৃদ্ধ নারী জানান, তার স্বামী স্ট্রোক করা রোগী ৪ ঘন্টা ডাক্তারের চেম্বারে সামনে বসে থেকেও চিকিৎসা নিতে ব্যর্থ হন তিনি। এছাড়াও হসপিটাল নিয়ে রয়েছে রোগী জিম্মি করে অর্থ আদায় করার বিভিন্ন কৌশল এমনটাও অভিযোগ রয়েছে রয়েছে ডাক্তারদের বিরুদ্ধে।
পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সেই সাংবাদিক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনি বলেন,আমি সকাল ১১ টা থেকে দুপুর আড়াইটার তিনটা পর্যন্ত ডাঃ দেখাতে অপেক্ষা করি। তিনি ইন্টার্নি করা জুনিয়রদের নিয়ে জন্মদিন সেলিব্রেটি বিনোদনে ব্যস্ত তারা। এদিকে অসুস্থ রোগীরা ডাক্তার দেখাতে অপেক্ষা করছে চেম্বারে সামনে।
ডাক্তারকে বিষয় টি বলাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে যায় ডাক্তার সহ জুনিয়রা। তাদের বিনোদনের ভিডিও ধারন করতে গেলে এক পর্যায় মোবাইল ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালায় তারা এবং অসদ আচরন করে তারা বলে জানান। সদর হসপিটালে এমন অনিয়ম নিয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় একাধিক নিউজ প্রকাশিত হলেও টনক নড়েনি কতৃপক্ষের। বেশিরভাগ ডাক্তার পার্সনাল চেম্বার খুলে রোগী দেখছেন।
পটুয়াখালী সদর উপজেলার মরিচ বুনিয়া ইউনিয়নের আব্বাস আলী রাগী বলেন,পটুঃ সদর হাসপাতাল একটি নড়কে পরিনত হয়েছে, রোগী’রা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছে হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সদের কাছে। আমর এর থেকে পরিত্রাণ চাই।
এ ব্যপারে সদর হাসপাতালের ডাক্তার আতিকুর
রহমানের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুপুর আড়াই টার সময় এক সাংবাদিক আমার চেম্বারে জোর পূর্বক প্রবেশ করছে। তিনি যদি বেশি অসুস্থ হয় তাহলে অবশ্যই ইমারজেন্সিতে ভর্তী হবে। তা না হয়ে আমাকে অজথা হয়রানি করা হচ্ছিল। আমি রাউন্ডে ব্যস্ত থাকি আমার ডিউটি আড়াই-টা পর্যন্ত।
তার পরেও আমি রোগী দেখার চেষ্টা করি। আর বিশেষ করে সপ্তাহে দু দিন রিফেন-জেটিফরা আসে এর বাহিরে আসার কোন সুযোগ নেই। হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী পর্যাপ্ত তা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয় বলে জানান তিনি। এবিষয় পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে দায়িত্ব তত্বাবধায়ক দিলরুবা ইয়াসমিন লিজার ব্যবহৃত মুঠোফোন (০১৭১৭-৮৬০২৪৩) নাম্বারে একাধিকবার ফোন করলেও ফোন টি রিসিভ হয়নি। তাই তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।