৬ মাসে ৯ মামলা, ১২ জিডি, সব মামলা মিথ্যা প্রমাণিত, ২ মামলায় বাদীই কারাগারে, নৈপথ্যে ইদ্রিস খানের ষড়যন্ত্র।
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ময়মনসিংহের জনপ্রিয় দৈনিক ময়মনসিংহ প্রতিদিন পত্রিকা মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্বে রোষানলে পড়েছেন সম্পাদক খায়রুল আলম রফিক। তার বিরুদ্ধে মোমেনশাহী ডিএস কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও দৈনিক ময়মনসিংহ প্রতিদিন’র প্রকাশক মোঃ ইদ্রিস খান এবং তার কয়েকজন ভাড়া করা মামলাবাজ ময়মনসিংহের বিজ্ঞ আদালত ও কোতোয়ালি মডেল থানায় ২০১৮-১৯ সালে ৬ মাসে ৯টি মামলা ও ১২টি জিডি দায়ের করে ছিলেন। মামলাগুলো ছিল মিথ্যা, সাজানো ও হয়রানিমূলক। মোঃ ইদ্রিস খানের দুর্নীতি-প্রতারণা নিয়ে প্রতিবাদ করাটাই কাল হয়ে উঠে সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিকের। ইদ্রিস খান তার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে খায়রুল আলম রফিকের বিরুদ্ধে দায়ের করে একের পর মিথ্যা ও সাজানো মামলা। মামলা ও গ্রেফতারের ভয়ে পালিয়ে থাকতে হয়েছে তাকে। বন্ধ হয়ে যায় আয়-রোজগারের পথ। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দৈনিক ময়মনসিংহ প্রতিদিন পত্রিকাটি জালিয়াতির মাধ্যমে কেড়ে নেয় ইদ্রিস খান। এই মামলাবাজ ইদ্রিস খানের রোষানলে পড়ে সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিকের পরিবার মানবেতর জীবন-যাপন করেন কয়েক বছর।
গাজীপুরের মামলার বাদী হাদিছা খাতুন মামলার চার্জ গঠনের দিন আসামি রফিককে চিনতে না পারায় বিজ্ঞ আদালতের বিচারক মামলাটি খারিজ করে দেন। এছাড়া মোমেনশাহী ডিএস কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ইদ্রিস খান নিজেও বাদী হয়ে সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিকের নামে একটি সাজানো মামলা করেছেন। এসব মামলায় দীর্ঘসময় জেলও খেটেছেন সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিক। পরে প্রমাণ হয়েছে, সবই সাজানো মামলা। আদালতের মাধ্যমে মিলেছে নিস্কৃতি। এখন আবার নতুন করে গোপনে বিভিন্নজনকে দিয়ে আগের ঘটে যাওয়া তথ্য দিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে ফেসবুকে। জানা গেছে, ত্রিশালের ৬ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সাইফুল ইসলামের পুত্র এমরান মেহেদী ওরফে আরিফের পক্ষ নিয়ে বিভিন্ন ভুয়া ফেক আইডি খুলে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এরই মধ্যে একে একে এসব সাজানো মামলায় হাজিরা দিতে দিতে কিংবা জেলের ঘানি টানতে টানতে আজ নিঃস্ব তিনি। সাংবাদিকতার পাশাপাশি জমানো টাকা ও সম্পত্তি বিক্রি করে দিয়েছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, খায়রুল আলম রফিকের নামে এমনও মামলা হয়েছে, যে মামলার বাদীর বাড়িঘর কিংবা নিজের কোনো অস্তিত্বই পাওয়া যায়নি। আবার মামলার বর্ণনার ঘটনাও ঘটেনি।
সংশিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খায়রুল আলম রফিকের নামে দায়েরকৃত ৯ টি মামলার মধ্যে কোতোয়ালী মডেল থানা মামলা নং-১০৩(৯)১৮, জিডি নং-২১১০, জিডি নং-২৬৭৯, জিডি নং-৭৪৭, জিডি নং- ২৩০৬, জিডি নং ২৮৯০, জিডি নং- ৩২৮৪, ময়মনসিংহ বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ নং আমলী আদালত মোকদ্দমা নং-৯৯৮/২০১৮, সিআর মোকদ্দমা নং-৫৯৮/২০১৭, সিআর নং- ১৯৭/২০১৭। সকল মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় সাংবাদিক মোঃ খায়রুল আলম রফিককে খালাস দেন আদালত। জামালপুর ও গাজীপুরের দুটি মামলার বাদীরা জানিয়েছেন, খায়রুল আলম রফিককে চেনেন না তারা। অপরদিকে নাম ঠিকানা ভূয়া হওয়ায় গাজীপুরের মামলার বাদীকেই কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খায়রুল আলম রফিকের বিরুদ্ধে এইসব মামলার পেছনে আছে মোমেনশাহী ডিএস কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোঃ ইদ্রিস খানের কোটি কোটি টাকার সম্পদ। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৮০০ কোটি টাকা অনিয়মের সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় পরেই প্রশাসনের টনক নড়ে। তারপর ইদ্রিস খান হাসপাতালের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সাথে আতাত করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন। তাদের সাথে দুটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। কিভাবে পত্রিকাটি রফিকের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া যায়। এরপর একের পর মামলা ও এভাবেই গ্রেপ্তার হওয়ার পর আর রক্ষা পাওয়া দায় হয়ে যায় সাংবাদিক রফিকের। এক মামলায় জামিন নিয়ে বের হওয়ার পরপরই পড়ে আরেকটি মামলার কোপ। বাড়তে থাকে মামলার সংখ্যা। মামলা টানতে টানতে দিন, সপ্তাহ, মাসও বছর পেরোয়।
ইদ্রিস খান, প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার পরিচয়ে প্রতারণায় র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার এমরান মেহেদী ওরফে আরিফ এবং নিষিদ্ধ জেএমবি সংগঠন হিজবুত তাওহীদের আরেক সদস্যসহ এই ষড়যন্ত্রের সিন্ডিকেট। তারা নিজেরা এবং বিভিন্ন ভুয়া আইডি থেকে অপপ্রচার করেই যাচ্ছে।এড. আবু সাদাত মোহাম্মদ খায়ের জানান, সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিকের বিরুদ্ধে জামালপুর, শেরপুর ও গাজীপুরে মিথ্যা অভিযোগকারীদের যথাযথভাবে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। মিথ্যা মামলার চাপে মাথায় দুশ্চিন্তা নিয়ে জীবনের রোজকার দিনগুলি পার করতে হয়েছে তাকে। নিরপরাধ সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিকের বন্দীত্ব, অর্থনৈতিক ক্ষতি, মানসিক দুশ্চিন্তা এবং তার পরিবারের সদস্যদের অসহায়ত্ব সব কিছু বিবেচনায় আনতে হবে। মিথ্যা মামলায় নির্দোষ খায়রুল আলম রফিক ও তার পরিবারের যে পরিমাণ মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে, শুধু অর্থনৈতিক জরিমানা কিংবা নামমাত্র সাজা, সেই ক্ষতকে কখনই পূরণ করতে সক্ষম হয় না। আইন সহায়তা কেন্দ্র ফাউন্ডেশনের (আসক) নির্বাহী পরিচালক খন্দকার সাইফুল ইসলাম সজল বলেন, মিথ্যা মামলায় একজন পেশাদার সাংবাদিক হয়রানির শিকার হয়েছেন। এর দায় আমরা এড়াতে পারি না। এবিষয়ে সাংবাদিক মোঃ খায়রুল আলম রফিক বলেন,এগুলো বলে শেষ করা যাবে না। আমাকে ও আমার পরিবারকে আল্লাহতালা ভাল রেখেছেন। ইদ্রিস খান স্যার কিছু খারাপ মানুষের কথায় এমন করেছিলেন। এখন আমাদের আর কোন বিরোধ নেই। উনার জন্য দোয়া রইল সবসময়।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতিঃ সাঈদুর রহমান রিমন। প্রকাশক ও সম্পাদক ফয়সাল হাওলাদার। বার্তা- সম্পাদক জুয়েল খন্দকার। প্রধান কার্যালয়ঃ- ৩৮/১ আরামবাগ.(মতিঝিল) ঢাকা-১০০০। ইমেলঃ- bdccrimebarta@gmail.com, মোবাঃ ০১৭৩২৩৭৯৯৮২
ইপেপার