• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১১:১৬ পূর্বাহ্ন
Headline
বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশনের নবগঠিত কমিটির সদস্য নির্বাচিত, এসি গোলাম রুহানী মুন্সীগঞ্জে বাবলা ডাকাতের তান্ডবে ড্রেজার-ভেকুতে অগ্নিসংযোগ ইন্টার্ন চিকিৎসকদের আন্দোলন যৌক্তিক: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা হত্যা মামলার আসামি’রা আদালত প্রাঙ্গণে চরাও হলেন বাদির ওপর, আহত হলেন ড্রাইভার মুন্সীগঞ্জে দেশি অস্ত্র ও ফেনসিডিল সহ দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার অর্থ আত্মসাৎ মামলায় কারাগারে মেজর মান্নান ময়মনসিংহে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত দুর্নীতি করব না, প্রশ্রয়ও দেব না: দীন মোহাম্মদ বিয়ে-তালাকে শহরের চেয়ে এগিয়ে গ্রাম

প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মুছাপুরে নদী থেকে অবাধে চলছে বালু উত্তোলন

Reporter Name / ৮২ Time View
Update : শনিবার, ২০ মে, ২০২৩

নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর ইউনিয়নের ছোট ফেনী নদীর ভিতরের অংশ থেকে অবাধে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রির কাজ।স্থানীয়দের অভিযোগ, মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার প্রত্যক্ষ মদদে ৩টি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে রাতদিন ছোট ফেনী নদী থেকে বালু তুলছে অসাধু লোকেরা। এতে করে নদীর পানি প্রবাহ কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হচ্ছে ভাঙন। নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে কোম্পানীগঞ্জের পর্যটন এলাকা হিসেবে খ্যাত মুছাপুর ক্লোজারের প্রধান সড়ক।

শুক্রবার (১৯ মে) বিকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মুছাপুর ক্লোজার এলাকায় প্রবেশ পথের কিছু দূর যেতেই রাস্তা শেষে নদীর পাড়ের রাস্তার শুরুতেই উত্তর পাশে মুছাপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডে নদীতে ৩টি নৌকার মধ্যে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবাধে চলছে বালু উত্তোলনের কাজ। অপর পাশে চলছে দু’টি স্বেভটর দিয়ে ড্রামট্রাক ভর্তি করে বেচা-বিক্রি।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, মুছাপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) মো. আলী আজগর জাহাঙ্গীরের ভাই জালাল উদ্দিন ও তাদের সহযোগী মাইন উদ্দিন ড্রেজার দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ছোট ফেনী নদীর ভিতরের অংশ থেকে বালু উত্তোলন করছে। এর ফলে এলাকার ছোট ফেনী নদীর পাশে থাকা মুছাপুর ক্লোজরে যাওয়াও পাকা সড়কে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

পাশাপাশি হাজার হাজার একর ফসলি জমি ভেঙে নদীতে বিলীন হওয়ার উপক্রম হচ্ছে। এর আগেও ছোট ফেনী থেকে বালু উত্তোলনের ফলে পাকা সড়কে ভাঙ্গন দেখা দেয়।স্থানীয়দের আশঙ্কা, স্থায়ীভাবে এসব অপরিকল্পিত ও অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে মুছাপুর ক্লোজারে যাওয়ার পাকা সড়ক এবং এলাকার বিশাল একটি অংশ ।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মুছাপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) মো. আলী আজগর জাহাঙ্গীর অভিযোগ নাকচ করে বলেন, বালু উত্তোলনের তথ্য আমার থেকে না নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ অথবা চেয়ারম্যানের থেকে নেন। আপনার যোগসাজশে, ক্ষমতা বলে আপনার ভাই জালাল উদ্দিন বালু উত্তোলন করছে, এমন প্রশ্নের জবাবে ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর বলেন, দেশের রাজনীতিতে ভাই-ভাইকেও মানে না।

ছেলে-বাবাকে মানে না। তাহলে আমার ভাই আমাকে না মেনে, আমার সাথে পরামর্শ না করেও বালু উঠাতে পারে। আমি নিজেই জিম্মি হয়ে আছি তার কাছে। বাবা যদি ছেলেকে ধরে না রাখতে পারে। ভাই কিভাবে ভাইকে ধরে রাখবে। তিনি এ নিয়ে সরাসরি তাঁর ভাই জালালের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। বালু উত্তোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে জালাল উদ্দিন মুঠোফোনে বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে সাংবাদিকদের অকট্ট ভাষায় গালমন্দ করে দ্বীতিয়বার তাকে কল না দেওয়ার জন্য বলে কল কেটে দেন।

এ বিষয়ে মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। মুছাপুর ক্লোজারের পাশে নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে মুঠোফোনে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল জানান, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাহেবকেও জানানো হয়েছে কিন্তু কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন বর্তামানে যা দেখছি প্রশাসনের চাইতে বালু ও মাটি খ্যাকোদের ক্ষমতা অনেক বেশি। তা না হলে প্রশাসন কোন ব্যাবস্থা নিতে পারছেনা কেন?

তবে এ বিষয়ে কোম্পনীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি, পৌর মেয়র আব্দুল কাদের মির্জাকে মুঠোফোনে কল করা হলে দুজনই মিটিংয়ে আছে পরে কথা বলব বলে কল রেখে দিন। যার কারণে তাদের কোন মতামত নেওয়া সম্ভব হয়নি।

বালু উত্তোলনের বিষয়ে মুঠোফোনে কথা হয় পানি উন্নয়ন বোর্ড নোয়াখালীর প্রধান নির্বাহী মুন্সি আমির ফয়সাল এর সাথে তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জেলা প্রশাসক কিন্বা ইউএনওকে জানান তারা ব্যবস্থা নিবেন। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের স্থাপনার ক্ষতির সম্ভাবনা যেহেতু রয়েছে আমি আমাদের লোক পাঠাব তারা সরজমিনে গিয়ে ব্যবস্থা নিবে।

বালু উত্তোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: মেজবা উল আলম ভুঁইয়া বলেন, ওখানে এ পর্যন্ত ২১ বার অভিযান চালানো হয়েছে। আমরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগে তারা মেশিন তুলে নিয়ে যায়। এর আগে বালু গুলো নিলাম করার জন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সহ চার ঘন্টা স্পটে ছিলাম কেউ সাহস করে বালু নিলাম নেইনি। আমরা চেষ্টা করতেছি বালু উত্তোলনের মূলহোতা জালালকে আটক করতে। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।

এবিষয়ে নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা সেখানে একাধিকবার অভিযান চালিয়েছি। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে দুরত্ব বেশি হওয়ায় আমাদের মাজিস্ট্রেট পৌছার আগেই তারা পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে অতিদ্রুতই ব্যাবস্থা নিব।

Please Share This Post In Your Social Media


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category