আতিকা ইসলাম, ময়মনসিংহ : রেদয়ান আহমেদ ওরফে রতন, তার সহযোগী সিএনজি চালক বাবু মিয়া ও পারভেজ। ময়মনসিংহ অঞ্চলে পথিমধ্যে চা-পানের অজুহাতে কোনো দোকানের সামনে অটো-রিকশা টি দাঁড় করায়। নিজেরা চা-পানের সময় চালককেও আমন্ত্রণ জানায়।
একপর্যায়ে চালকের চায়ের কাপে কৌশলে চেতনা- নাশক ওষুধ বা ট্যাবলেট মিশিয়ে দেয়া হয়। চা-পান শেষে তারা দ্রুত সিএনজি অটোতে ওঠে পড়ে। কয়েক মিনিটের মধ্যে চালক অচেতন হয়ে পড়লে তারা তাকে রাস্তায় ফেলে সিএনজি অটো-রিকশা টি নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে সিএনজি অটোয় থাকা মোবাইল নম্বরে মালিককে ফোন করে বিকাশের মাধ্যমে টাকা দাবি করে মোটা অংকের টাকা ।
৭ থেকে ১০ দিন ধরে চলে টাকা আদায়ের প্রচেষ্টা। টাকা পাওয়ার পর কোনো প্রত্যন্ত এলাকায় সিএনজি অটো-রিকশা টি রেখে মালিক'কে ফোনে জানায়, অমুক জায়গায় আপনার গাড়ি রাখা আছে। সিএনজি অটোপ্রতি ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করে রতন, সিএনজি বাবু মিয়া ও পারভেজ চক্র তাদের বাড়ি ময়মনসিংহের ত্রিশাল পৌরসভা ৮ নং ওয়ার্ডে।
দুই-একদিন পরপরই এ চক্রের সদস্য'রা ময়মনসিংহের বিভিন্ন স্থান থেকে অভিনব কৌশলে সিএনজি অটো-রিকশা চুরি করছে। রতন ও সিএনজি চালক নেতৃত্বাধীন চোর সিন্ডিকেটের সদস্যদের বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) এসব তথ্য জানিয়েছে।
চোর সিন্ডিকেটের সদস্যরা ডিবিকে আরও জানায়, ময়মনসিংহ- ঢাকা মহাসড়কে শীতকাল, গভীর রাত বা ভোরবেলায় সিএনজি অটোরিকশা চুরির ক্ষেত্রে তারা ওই কৌশল অবলম্বন করে। তবে গরমকালে তারা ভিন্ন কৌশলে চুরি করে। গরমের সময় সিএনজি ভাড়া নিয়ে কিছুদূর যাওয়ার পর গরমে হাঁপিয়ে যাওয়ার ভাব ধরে তারা। এ সময় তারা কোনো কোল্ডড্রিংকস বা ডাবের দোকানের সামনে সিএনজি থামাতে বলে।
নিজেরা কোল্ড ড্রিংকস বা ডাবের পানি খাওয়ানোর সময় চালককেও খেতে বলে। এ সময় কৌশলে চালকের কোল্ড ড্রিংক বা ডাবের পানিতে চেতনানাশক মিশিয়ে দেয়া হয়। চেনানাশক মেশানো ড্রিংক বা পানি খেয়ে সিএনজি অটোতে ওঠার কিছুক্ষণের মধ্যে চালক অচেতন হয়ে পড়লে তারা অটোটি নিয়ে পালিয়ে যায়।
একটি সিএনজি চুরি করতে তাদের ৬ থেকে ৭ জন লোকের প্রয়োজন হয়। টার্গেট করা সিএনজির পেছনে আরেকটি সিএনজিতেও তাদের লোক থাকে। জানতে চাইলে ডিবির চাইলে ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, ময়মনসিংহ - ঢাকা মহাসড়কের এলাকা থেকে চোর সিন্ডিকেট চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের জবানবন্দিতে আরো চার জনের নাম বলেন। তাদের নজরদারিতে রেখেছি।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় আদালতে হাজির করে তাদের চার দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। যাদের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে তারা হলেন- অলি (২৩), সুজন ইসলাম (২৪), তাপস মোহাম্মদ (৩৭), তাইজুউদ্দিন ওরফে রহমান (৪৫) এবং শিপলু (৩০)। আদালতে জবানবন্দিতে এই চক্রের প্রধান রতন ও বাবু মিয়া বলে জানিয়েছেন। তারা এও বলেছেন, তাদের বাড়ি ত্রিশাল পৌরসভায়।
চুরির পর সিএনজি ফিরিয়ে দেয়ার মাধ্যমে এ চক্রের রতনসহ প্রত্যেকে মাসে লাখ টাকারও বেশি আয় করে থাকে। ডিবির এসআই জলিল জানান, টাকার বিনিময়ে চোরাই সিএনজি ফিরিয়ে দেয়ার কারণে অনেকে তাদের নামে অভিযোগ দায়ের করেন না। এ কারণে তাদের নামে মামলার সংখ্যা কম। চোর চক্রের সদস্য'রা সিএনজি চালনায় পারদর্শী বলেও তিনি জানান।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতিঃ সাঈদুর রহমান রিমন। প্রকাশক ও সম্পাদক ফয়সাল হাওলাদার। বার্তা- সম্পাদক জুয়েল খন্দকার। প্রধান কার্যালয়ঃ- ৩৮/১ আরামবাগ.(মতিঝিল) ঢাকা-১০০০। ইমেলঃ- bdccrimebarta@gmail.com, মোবাঃ ০১৭৩২৩৭৯৯৮২
ইপেপার