শুভ হোসেন, স্টাফ রিপোর্টারঃ রাজধানী ঢাকার উত্তরা পশ্চিম এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ রাতে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও র্যাব-১ এর সহযোগিতায় অভিযানে মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানার মামলা নং-১৪/৩৪৯, তারিখ-১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ খ্রিঃ, ধারা-৩০২ দণ্ড বিধি।
উক্ত চাঞ্চল্যকর রাসেল খান’কে চাইনিজ কুড়াল দ্বারা কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা মামলার একমাত্র পলাতক আসামি শেখ রহমান (৩২), পিতাঃ মৃত শেখ তফি, সাং-রুদ্রপাড়া, থানাঃ- শ্রীনগর, জেলাঃ- মুন্সিগঞ্জ’কে হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামি উক্ত হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত আসামি রহমান ভিকটিম রাসেল এর স্ত্রীর বড় ভাই। রহমান বেশ কিছুদিন যাবৎ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। যার ফলে সে মাদক সেবনের অর্থ যোগাড় করার জন্য বিভিন্ন এলাকায় চুরি, ছিনতাই, মারামারি সহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত হয়ে পড়ে। অতঃপর ভিকটিম রাসেল বিষয়টি রহমানের পরিবারের সাথে আলোচনা করতঃ রহমানকে চিকিৎসার জন্য একটি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে প্রেরণ করে।
যার কারণে রহমান ভিকটিম রাসেল এর প্রতি ক্ষিপ্ত হয়। পরবর্তীতে রহমান গত ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র হতে চিকিৎসা শেষে বাড়ীতে ফিরে আসে এবং সে ৪০ দিনের জন্য চিল্লায় যাওয়ার ইচ্ছা পোষন করে। চিল্লায় যাওয়ার কথা শুনে তার পরিবারের লোকজন অনেক আনন্দিত হয়। বিষয়টি শুনে ভিকটিম রাসেল চিল্লায় যাওয়ার জন্য রহমানকে ৫,০০০/- টাকা দিয়ে সহযোগিতা করে। অতঃপর গত ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ রহমান চিল্লায় যাওয়ার কথা বলে তার প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র নিয়ে বাসা থেকে বের হয়।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ ভিকটিম রাসেল মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানাধীন রুদ্রপাড়া এলাকায় তার খালু শশুর এর টিনের বসত ঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে পরে। পরের দিন গত ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ ভোরে রহমান তাকে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করার জেরধরে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে কৌশলে ঘরের জানালা ভেঙ্গে উক্ত ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে এবং তার কাছে থাকা চাইনিজ কুড়াল দিয়ে ঘুমন্ত অবস্তায় ভিকটিম রাসেলের মাথায় সজোরে কোপ দেয়। যার ফলে কুড়ালটি রাসেল এর মাথায় গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করে এবং রাসেল গুরুতর রক্তাক্ত জখম প্রাপ্ত হয়। অতঃপর রহমান ভিকটিম রাসেলকে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে রেখে দ্রুত ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে রাসেলের পরিবারের লোকজন তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাসেলকে মৃত ঘোষনা করেন। অতঃপর মৃত রাসেল এর পরিবারের লোকজন দোহার থানা পুলিশকে সংবাদ দিলে পুলিশ রাসেল এর মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করতঃ লাশ স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন। উক্ত মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের পর মৃত রাসেল এর বাবা রশিদ খান (৮১) মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানায় শেখ রহমান এর বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গ্রেফতারকৃত আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।