সবাইকে স্বাস্থ্যসেবার আওতায় নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরিষেবা সম্প্রসারণ, সম্পদ বৃদ্ধি ও কার্যকারিতা বাড়ানোর মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে সবাইকে স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনার প্রচেষ্টা জোরদার করার অঙ্গীকার করেন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার (১১ মে) ‘স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার আওতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দানকালে প্রধানমন্ত্রী এই কথা বলেন।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘জনগণের জন্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা আমাদের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। আমরা আমাদের সরকারের প্রথম দিন থেকেই তা পূরণ করার চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে যা করেছি তা ছাড়াও আমরা অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবার একটি প্রয়োজনীয় প্যাকেজের বাড়তি পদক্ষেপ গ্রহণ করবো, যাতে আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারি।’
প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলোর একটি পূর্ণ প্যাকেজ (ইএসপি) প্রণয়ন, স্বাস্থ্য খাতে শূন্যপদ পূরণ করা, শহুরে এলাকায় প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যার ব্যবস্থা করাসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে তিনি নির্দেশনা দেন, যাতে স্বাস্থ্য খাত সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা (ইউএইচসি) অর্জনের পথে দ্রুত এগিয়ে যেতে পারে।ইউনিসেফ, ডব্লিউএইচও, বিশ্বব্যাংক, সূচনা ফাউন্ডেশন, সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন এবং লন্ডনের চ্যাটাম হাউজের মতো বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ও জাতীয় সংস্থার সহায়তায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নিউজিল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমানে চ্যাটাম হাউজ কমিশন অন ইউনিভার্সাল হেলথের কো-চেয়ার হেলেন ক্লার্ক। মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের সদস্য ও যুব নেতৃবৃন্দসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
হেলেন ক্লার্ক তার বক্তৃতায় নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বলেন, বিস্তৃত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় ক্রমবর্ধমান সরকারি বিনিয়োগ হচ্ছে। একটি স্বাস্থ্যবান জনগোষ্ঠী ও একটি ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি নিশ্চিতের লক্ষ্যে এবং বাংলাদেশকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য এই বিনিয়োগ সাশ্রয়ী ও ন্যায়সঙ্গত।‘স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার আওতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে নিউজিল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হেলেন ক্লার্ক, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিশ্ব স্বাস্থ সংস্থার মহাপরিচালকের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সায়মা ওয়াজেদ (ছবি: ফোকাস বাংলা)
স্বাস্থ্য খাতের অগ্রগতির কথা তুলে ধরে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে শুরু করে মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত দেশব্যাপী স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের নেটওয়ার্কের জন্য, সব শিশুকে টিকাদানের আওতায় আনার জন্য এবং কোভিড-১৯ ব্যবস্থাপনা ও টিকাদানে সাম্প্রতিক সাফল্যের জন্য বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত ইউএইচসি'র একজন প্রবক্তা এবং আমরা তার নেতৃত্বে ইউএইচসি অর্জন করতে সক্ষম হবো।
অনুষ্ঠানের প্রথম অংশে প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি ও বিশেষজ্ঞরা তাদের কাছে করা প্রশ্নের উত্তর দেন। এই অংশটি পরিচালনা করেন মানসিক স্বাস্থ্য ও অটিজম বিষয়ক ডব্লিউএইচও’র মহাপরিচালকের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সায়মা ওয়াজেদ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস, বাংলাদেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ড. বর্ধন জং রানা এবং বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট।‘স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার আওতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)
ইয়েট বলেন, সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা শিশু ও পরিবারগুলোসহ সবার জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় ইউনিসেফ বাংলাদেশ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সরকারকে অভিনন্দন জানাচ্ছে। সবাইকে স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনা গেলে তা দেশগুলোকে তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী সম্পদ ব্যবহার করে সবচেয়ে বেশি লাভবান হওয়ার সুযোগ করে দেয়। আর এ সম্পদ হচ্ছে মানবসম্পদ।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় অংশটি ছিল স্বাস্থ্যসেবার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থায়নের ব্যবস্থা এবং পরিষেবা সরবরাহ নিশ্চিতকরণ সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জগুলোর ব্যাপারে আলোচনা ও সমাধান খুঁজে বের করার জন্য। দুটি সেশন অনুষ্ঠিত হয়–একটি ‘ইমপ্রুভিং অ্যাকসেস টু অ্যাফোরডেবল অ্যান্ড কোয়ালিটি পিএইচসি ফর ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ’ এবং অন্যটি ‘হেলথ কেয়ার ফাইন্যান্সিং ফর এক্সিলারেটিং ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ’ বিষয়ে। সেশনের আলোচনা সঞ্চালনা করেন যথাক্রমে ড. রবার্ট ইয়েটস ও মো. আসাদুল ইসলাম।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতিঃ সাঈদুর রহমান রিমন। প্রকাশক ও সম্পাদক ফয়সাল হাওলাদার। বার্তা- সম্পাদক জুয়েল খন্দকার। প্রধান কার্যালয়ঃ- ৩৮/১ আরামবাগ.(মতিঝিল) ঢাকা-১০০০। ইমেলঃ- bdccrimebarta@gmail.com, মোবাঃ ০১৭৩২৩৭৯৯৮২
ইপেপার