বিডিসি ক্রাইম বার্তা ডেস্কঃ জাতীয় শোক দিবসে বরগুনায় জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পেটানোর ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলী পর এবার আরও পাঁচ পুলিশ সদস্যকে বরগুনা জেলার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ এ পর্যন্ত মোট ছয়জনকে এ জেলা থেকে সরিয়ে নেওয়া হলো।
মঙ্গলবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম তারেক রহমান। সর্বশেষ পাঁচজন হলেন – বরগুনা সদর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সাগর দে, সদর থানার কনস্টেবল রুহুল আমিন, ডিবির এএসআই ইসমাইল, কনস্টেবল এম সানি, পুলিশ লাইন্সের কনস্টেবল মো. রাফিউল ইসলাম।
একটি সূত্র বলছে, ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও দেখে শনাক্ত করে মাত্রাতিরিক্ত লাঠিচার্জকারী ছয়জনকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। তালিকার বাকিদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। পাঁচ পুলিশ সদস্যের মধ্যে সাগর দে, রাফিউল এবং এম সানিকে ভোলা পুলিশ লাইন্সে এবং ইসমাইল ও রুহুল আমিনকে পিরোজপুর পুলিশ লাইন্সে যুক্ত করা হয়েছে। এর আগে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলীকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে বরিশাল ডিআইজি কার্যালয়ে নিযুক্ত করা হয়।
এ বিষয়ে রেঞ্জ ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামান জানান, সার্বিক দিক বিবেচনা করে ও তদন্তের স্বার্থে মহরম আলীকে বরিশালে আমার কার্যালয়ে নিযুক্ত করা হয়েছে। কমিটির তদন্তে তিনি কোনো প্রভাব বিস্তার করতে না পারেন, সে জন্য বরগুনার দায়িত্ব থেকে তাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, সোমবার জাতীয় শোক দিবসে বরগুনা শিল্পকলা একাডেমিতে জেলা প্রশাসনের আয়োজিত শোক সভার অনুষ্ঠান চলছিল। জেলা ছাত্রলীগের নবাগত কমিটির একাংশ বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কমপ্লেক্সে রক্ষিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে ফেরার পথে শিল্পকলা একাডেমির তৃতীয় তলা থেকে কে বা কারা ইটপাটকেল ছুড়ে। এতে পুলিশের গাড়ির একটি গ্লাস ফেটে যায়। মুহূর্তের মধ্যে দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ শিল্পকলা একাডেমিতে প্রবেশ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নির্বিচারে পেটাতে থাকে। ছোট ছোট ছেলেদের মাথা ও হাত-পা ফেটে রক্তাক্ত জখম হয়।
সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু তখন শিল্পকলা একাডেমির হল রুমে বসা ছিলেন। তাৎক্ষণিক তিনি বের হয়ে মহরম আলীকে ছাত্রলীগ নেতাদের পেটাতে নিষেধ করেন। এমনকি তিনি মহরমের হাত ধরে বলেন, যে ছেলেটি ইট ছুড়েছে তাকে আমি আপনাদের কাছে সোপর্দ করব। এতে মহরম আরও ক্ষিপ্ত ও উত্তেজিত হয়ে সংসদ সদস্যের সঙ্গে বাম হাত তুলে অশোভন আচরণ করেন।
ছাত্রলীগ নেতা জসিম মোল্লা ও স্বাধীন প্রতিবাদ করলে এমপির সামনেই তাদের পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ধরে নিয়ে যায়। এতে বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের একাংশ মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।#