শেরপুর জেলা প্রতিনিধিঃ- গত ১৯/০৯/২০২২ তারিখ শ্রীবরদী থানাধীন বকচর পূর্ব পাড়া গ্রামে আনুমানিক রাত্রি ০৩.০০ ঘটিকায় মোঃ আব্দুল মমিন (৬০), পিতা-মৃত আফাজ উদ্দিন মন্ডল এর গোয়াল ঘরের তালা ভাঙ্গিয়া অজ্ঞাতনামা চোরচক্র ৪ টি গাভী ও ৪ টি বাছুর সহ ট্রাকে উঠানোর সময় বাদীর ভাতিজা মোঃ রফিকুল ইসলাম শব্দ পেয়ে ঘর থেকে বাহির গিয়ে গরু ট্রাকে উঠানো দেখে চিৎকার করিলে চোরচক্র গরু সহ ট্রাক নিয়া পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে বাদী অজ্ঞাতনামা চোরচক্রের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করিলে শ্রীবরদী থানার মামলা নং- ১৬ গত ১৯/৯/২২ ইং তারিখ ধারা- ৪৫৭/৩৮০/৩৪ পেনাল কোড রুজ করা হয়। মামলাটি রুজু হওয়ার পর শ্রীবরদী থানা পুলিশ মামলার রহস্য উদঘাটন ও আসামিদের সনাক্ত করণসহ গ্রেফতারের জন্য তদন্তে নামে।
মামলার তদন্ত কালে শ্রীবরদী থানার কয়েকটি চৌকস টিম অফিসার ইনচার্জ শ্রীবরদী থানা ও জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ থানার অন্তর্গত টুপকার চর গ্রামের মৃত আব্দুল হকের ছেলে মোঃ হাবিবুর রহমান ওরফে হাবিব(৫৫) কে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা জেলার আশুলিয়া এলাকা থেকে আসামী মোঃ মুকুল মিয়া(৩০) কে গ্রেফতার করে। পরে তার দেওয়া তথ্য মতে গত ০৯/১০/২২ তারিখ দুপুর বেলা গাজীপুর জেলার দক্ষিন সালনা এলাকা থেকে আসামি ১। মোঃ সম্রাট (২৫), ২। মোঃ জীবন (২৫), ৩। মোঃ রাশেদুল ওরফে আসাদুল (৩২), ৪। মোঃ সুজন মিয়া (২৮), ৫। মোঃ রইচ উদ্দিন (৩৮), ৬। মোঃ আমিন মিয়া (২৫) কে গ্রেফতার কর হয়।
পরবর্তীতে তাদের দেওয়া তথ্য মতে সালনা এলাকায় থেকে গরু চোরাই কাজে ব্যবহৃত হলুদ ও নীল রঙের টাটা ট্রাক যাহার রেজিঃ নং- ঢাকা মেট্রো ড- ১৪-৮৬৬৮ উদ্ধার পূর্বক চোরাই গরু গুলো ডিএমপি তুরাগ থানাধীন বেড়ীবাধ এলাকার ধৌর নামক স্থানে আসামি মোঃ খাইরুল ইসলাম (৩৮) এর নিকট ২,৮০, ০০০/- টাকায় বিক্রি করে। তাকে গ্রেফতার পূর্বক চোরাই গরু উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
এর মধ্যে ধৃত আসামি ১। মোঃ সুজন মিয়া ওরফে সুজন মোল্লা (২৮) ও ২। মোঃ রাশেদুল ওরফে আসাদুল (৩২) বিজ্ঞ আদালতে চুরির দায় স্বীকার পূর্বক ফৌঃ কাঃ বিঃ আইনের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। বাকী আসামী ১। মোঃ সম্রাট (২৫), ২। মোঃ জীবন (২৫), ৩। মোঃ মুকুল আলী (৩০) ও ৪। মোঃ আমিন মিয়া (২৫) দের ০৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন সহ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, আসামি হাবিবুর রহমান হাবিব এলাকায় ঘুরেঘুরে দামী গরু আছে কোন বাড়িতে সেই তথ্য অন্যান্য চোরদেরকে দেয়। আসামি মোঃ মুকুল মিয়া চোরাই কাজে ব্যবহৃত ট্রাকটির চালক। পলাতক আসামি মোঃ খাইরুল ইসলাম উক্ত ট্রাকের মালিক। সে ট্রাকের বডি উচু করে তৈরী করেছে শুধুমাত্র গরু চোরাই কাজে ব্যবহার করার জন্য। গ্রেফতারকৃত প্রত্যেকটি আসামী আন্তঃ জেলা গরু চোরচক্রের সক্রিয় সদস্য। তাহাদের বাড়ী বিভিন্ন জেলায়। তাহারা দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরের সালনা, ঢাকার আশুলিয়া ও তুরাগ বেড়ীবাধ এলাকায় অবস্থান করে বিভিন্ন জেলায় গরু চুরি করে আসছে।
জনাব মোঃ কামরুজ্জামান, বিপিএম, পুলিশ সুপার, শেরপুর মহোদয় আন্তঃজেলা গরু চোরাচক্র গ্রেফতার ও চোরাই কাজে ব্যবহৃত পিকআপ উদ্ধার সংক্রান্ত তার কার্যালয়ে বুধবার (১২ অক্টোবর) প্রেস ব্রিফিং করেন। এসময় জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।#