নিজস্ব প্রতিবেদক: আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একইসঙ্গে নির্বাচনের সময় সব ধরনের প্রভাবের ঊর্ধ্বে থেকে যাবতীয় কাজ সম্পাদন করার জন্যও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইসির প্রকাশিত পরিপত্রে এ নির্দেশনা বলা হয়েছে। নির্বাচন পরিচালনা-২ (অধিশাখা) এর উপসচিব আতিয়ার রহমানের সই করা সংক্রান্ত ইসির নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বিশেষ মহলের যেকোনো প্রকার প্রভাব বা হস্তক্ষেপের কারণে নির্বাচনের নিরপেক্ষতা যাতে ক্ষুণ্ণ না হয়, সেটি আইন ও আচরণ বিধিমালার আলোকে নিশ্চিত করতে হবে। এতে আরও বলা হয়েছে, নির্বাচনের মতো একটি সংবেদনশীল, স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এমন কোনো কাজ করবেন না, যার দ্বারা তাদের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বা স্থানীয় জনগণের কাছে হেয় প্রতিপন্ন হতে হয়। সেজন্য প্রতিটি কাজে আইন এবং বিধির যথার্থ প্রয়োগ ও অনুসরণ করতে হবে।
নির্বাচন সুষ্ঠু করতে গঠন করা হবে ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিম
ইসির পরিপত্রে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য রিটার্নিং বা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নেতৃত্বে এবং বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিম গঠন করতে বলা হয়েছে। এই টিমে বেসরকারি পর্যায়ের দল নিরপেক্ষ বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও অন্তর্ভুক্ত হবেন। জরুরি ভিত্তিতে ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিম গঠন করে সদস্যদের তালিকা ইসি সচিবালয়ে পাঠাতেও বলা হয়েছে।
যে কাজ করবে ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিম
এই টিম নির্বাচনের সার্বিক ব্যবস্থা সরেজমিনে পরিদর্শন করে ইসির কাছে প্রতিবেদন জমা দেবে। এছাড়া, ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিমকে উপজেলা এলাকায় নির্বাচন আচরণবিধি ভঙ্গ হওয়া বা ভঙ্গের আশঙ্কা, নির্বাচনী প্রচারণা ও নির্বাচনী ব্যয়ের ক্ষেত্রে নির্ধারিত সীমার অতিরিক্ত ব্যয় এবং বিধি-৫১ এর বিধান যথাযথভাবে পালন হচ্ছে কি না তা সরেজমিনে পরিদর্শন করতে নির্দেশ দেবে। আর আচরণ বিধিমালা ভঙ্গের কোনো বিষয় নজরে আসা বা অভিযোগ পাওয়া মাত্রই মোবাইল কোর্টের দায়িত্বে থাকা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠাবে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দায়েরের ব্যবস্থা নিতে হবে এবং ফৌজদারি আদালতেও অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন।
এছাড়া, স্থানীয় পরিস্থিতির ওপর তিন দিন পর পর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন ইসির আইন অধিশাখায় পাঠাতে হবে। প্রার্থী বা তার নির্বাচনী এজেন্ট বা তাদের পক্ষে অন্য কেউ আচরণ বিধিমালার কোনো বিধি ভঙ্গ করলে বা ভঙ্গ করার চেষ্টা করলে যদি কেউ যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন না করেন, তাহলেও তাৎক্ষণিকভাবে ইসিকে লিখিতভাবে অবহিত করতে হবে বলেও জানানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, প্রথম ধাপে ১৫০ উপজেলায় ভোট হবে আগামী ৮ মে। এরপর দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলায় ভোট ২১ মে, তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় ভোট ২৯ মে এবং চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ভোট ৬ জুন অনুষ্ঠিত হবে। ভোটগ্রহণে প্রথম ধাপে ২২টি, দ্বিতীয় ধাপে ২৪টি, তৃতীয় ধাপে ২১টি এবং চতুর্থ ধাপে দুইটি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে।