• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১১ অপরাহ্ন

ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরের ডিডি মামুন মাহমুদের নামে ৭ জিডি, আছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও

সংবাদদাতা / ২২৭ পাঠক ভিউ
আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২

স্টাফ রিপোর্টারঃ- ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের উপ – পরিচালক ( প্রশাসন অর্থ ) মামুন মাহমুদের নামে রাজধানীর ৭ টি থানায় জিডি দায়ের করা আছে। সিন্ডিকেট গঠন করে নিয়োগ, বদলি বাণিজ্য ছাড়াও নানাভাবে টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। তাকে টাকা দিয়ে চাকরি না পেয়ে দিশেহারা অনেকেই। টাকা চাইতে গিয়ে হত্যার হুমকি ও লাঞ্চিত হয়ে জিডি করতে বাধ্য হয়েছেন ভুক্তভোগীদের কেউ কেউ। ভুক্তভোগীদের একজন শারমিন সুলতানা।

নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মাহতাব মৃধার মেয়ে। ২০১৬ সালের নভেম্বরে তাকে চাকুরি দেয়ার কথা বলে নগত ১৫ লাখ টাকা নেন মামুন মাহমুদ। সেই সুবাদে বিভিন্ন সময় পছন্দের জায়গায় নিয়ে গিয়ে যৌন হয়রানি করেন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এবং প্রতিকার চেয়ে ২০১৬ সালে ৭ নভেম্বর এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন

শারমিন সুলতানা। অভিযোগ রয়েছে, তদন্তাধীন এই অভিযোগের ফাইল কৌশলে গায়েব করে দিয়েছেন মামুন মাহমুদ ও তদন্তকারী কর্মকর্তাগন। অভিযোগ ভুক্তভোগী নাসির ফকিরেরও। শাহজাহানপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। নং- ১৩৮৯ তাং- ৩১/১২/২০১৫ । অভিযোগ ২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর মামুন মাহমুদ উপ- সহকারি পরিচালক থাকাকালে। নাসির ফকিরের ৩ বছর বয়সী পুত্রের মৃত্যু হয়। সেসময় তিনি শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনীতে বসবাস করতেন। শিশু মত্যৃুর ঘটনায় থানা পুলিশ ইউডি মামলা করে। শিশু মৃত্যুর জন্য মামুন মাহমুদকে দায়ি করা হলে প্রাণনাশের হুমকি দেন এবং শারীরিক নির্যাতন করেন।

এঘটনায় মামুন মাহমুদসহ কয়েকজনের নামে থানায় জিডি করেন নাসির ফকির। ভুক্তভোগী এম মোর্শেদ জিডি করেছেন রমনা মডেল থানায়। ২০১৮ সালে দায়েরকৃত জিডি নং- ২১২৮। সেসময় তিনি উপ – পরিচালক ছিলেন। জিডির ৩নং আসামি করা হয় তাকে। গতিরোধ করে প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার প্রেক্ষিতে। সেসময় নিয়োগের নামে টাকা নেন । ফেরৎ চাওয়ায় হুমকি দেন।

সিন্ডিকেটের সদস্য মিলে কমপক্ষে ১০০ কোটি টাকার দুর্নীতি করে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। এম মোর্শেদ মতিঝিল থানায় জিডি করেন। জিডিতে বিবাদী আব্দুস সালাম পরিচালক, ফরিদ উদ্দিন উপ – পরিচালকসহ মামুন মাহমদ, সিনিয়র স্টেশন অফিসার শাহজাহান সিকদারসহ ৯ জনের নামে দায়েরকৃত জিডি তদন্ত হয়েছে। নাজমা খাতুন পুষ্পিতা আরেক ভুক্তভোগী। তিনি মামুন মাহমুদের নামে রমনা থানায় জিডি করেছেন। জিডি নং- ১৩২৭ তাং- ১৮-৪-১৪। উচ্চ আদালতে জনস্বার্থে রিট পিটিশন নং- ৩৩৭২- ২০১৪ মামলা করেন আরো কয়েকজন ভুক্তভোগী।

বিবাদী করেন মামুন মাহমুদসহ কয়েকজনকে। এই মামলা প্রত্যাহার করার হুমকি দেয়ায় তিনি রমনা থানায় জিডিও করেন। জনৈক মোজাম্মেল হক ২০১২ সালে সূত্রাপুর থানায় তার নামে জিডি করেন। নং- ১৪১৬। তাকে হয়রানি করতেন তিনি ও তার সিন্ডিকেট সদস্যরা। গুম করারও হুমকি দেন। তার কবল থেকে বাঁচতে জিডি করেন মোজাম্মেল হক। মামলা নং- ২০৪-১৬ প্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। তৎপ্রেক্ষিতে বংশাল থানা ওসিকে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন ঢাকার অতিরিক্ত বিজ্ঞ জেলা ম্যজিস্ট্রেট আদালত।

ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতসহ একাধিক মামলাও রয়েছে তার নামে এমন কথা জানান আরও অনেকেই । এসব কর্মকান্ড নিয়ে জাতীয় দৈনিকে একাধিক সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ব্যাপক প্রচার থাকার পরও তার ও তার সিন্ডেকেট সদস্যদের কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি অদৃশ্য কারনে। দীর্ঘ ২৬ বছর ধরে ঢাকাতেই কর্মরত রয়েছেন তিনি। সিন্ডিকেট করে এই দীর্ঘ সময় ধরে নিয়োগ বদলীসহ নানান কাজ করে যাচ্ছেন। প্রতিবাদ করলেই হুমকির শিকার হতে হয় ভুক্তভোগীদের।

এভাবেই শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন মামুন মাহমুদ ও তার সিন্ডেকেট সদস্যরা। মামলা ও একাদিক জিডি থাকার পরেও তার হয়েছে প্রমোশন। আবার টাকা দেয়ার পর চাকরি না হলেও ভুক্তভোগী ঘাপটি চুপটি মেরে বসে থাকতে হয়। প্রতিবাদ করলেই বিপদ। হামলা হুমকি আর হয়রানির শিকার হতে হয়। অনেক ভুক্তভোগী ভয়ে মুখ খুলতে নারাজ।

ভুক্তভোগী শারমিন সুলতানা বলেন, মামুন সাহেব আমার জীবনটা শেষ করে দেয়, আজ আমি পথে বসেছি। দেনা আমার পিছু ছাড়ছে না। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের অধিদপ্তরের উপ- পরিচালক মামুন মাহমুদের কাছে সংবাদের সত্যতা জানতে ফোন করলে তিনি বলেন, আমি সময় নিয়ে আপনাদের সাথে একটু বসতে চাই , আপনার সাথে দেখা করতে চাই। এক কাপ চা খেয়ে সব বলবো।#


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিস্তারিত...