• রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০০ অপরাহ্ন

কেরানীগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজাফফর আলীর খুনের আসামি ঠান্ডুর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

সংবাদদাতা / ৯০ পাঠক ভিউ
আপডেট সময় : বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

রেজাউল করিম রাজুঃ রাজধানী ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন রুহিতপুর ইউনিয়নের আলোচিত বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জর আলী মোজাম হত্যা মামলার প্রধান ও একমাত্র আসামি ঠান্ডু মিয়া’কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। আজ বুধবার ২৪ এপ্রিল বিকেল ৪ টায় ঢাকার অষ্টম অতিরিক্ত জেলা ও বিজ্ঞ দায়রা জজ বিচারক সৈয়দ মিনহাজুম মুনিরা এ আদেশ দেন। দীর্ঘ ৩৩ মাস পর মামলার চূড়ান্ত রায়।

আদেশে ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন সাজা ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড এবং ৩২৬ ধারায় আসামি ঠান্ডু মিয়া’কে দোষী সাব্যস্ত করে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং দশ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড প্রদান করে।

মামলার রায়ে খুশি সরকার পক্ষের আইনজীবী সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর গুলজার হোসেন বাচ্চু তবে বাদী পক্ষের আইনজীবী কামরুজ্জামান জসি রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা জানিয়েছেন। নিহতের স্ত্রী নার্গিস বেগম জানান, পরিবারের সবাই আশায় ছিলাম আমার স্বামী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা দেশের জন্য অস্ত্র হাতে পাক- হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে দেশ স্বাধীনতার যুদ্ধে ঝাপিয়ে পরেছিলেন।

সেই বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জর আলী মোজাম’কে প্রকাশ্যে দিবালোকে খুন করেছে, খুনি ঠান্ডুর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির সর্ব্বোচ্চ রায় ফাঁসি হবে, কিন্তু যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হওয়ায় আমরা দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলাম। যে কোন সময় সে বেড় হয়ে আমাদের মেরে ফেলবে। আমরা তার ফাঁসি চাই। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমার দুই মেয়ের নিরাপত্তা চাই।

নিহতের ছোট মেয়ে মিতা নুর বলেন, আসামির স্ত্রী আদালতের ভেতরেই আমাদের উপর আক্রমণ করার দুঃসাহস দেখিয়েছে। আমরা বাড়িতেও নিরাপদ ছিলাম না আতংকে ভয়ের মধ্যে দিনাতিপাত করেছি। আমরা আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জর আলী মোজামের প্রকাশ্যে খুনী ঠান্ডুর সর্ব্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড চাই।

এসময় আদালতে আসামি ঠান্ডুসহ নিহতের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে ২০২১ সালের ১৫ জুলাই রাতে মডেল থানাধীন পশ্চিম রুহিতপুর এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জেরে নিহতের আপন ভাতিজা মৃত্যু আমিরুল ইসলামের পুত্র নেশা গ্রস্থ ঠান্ডু মিয়া তার চাচা এবং চাচাতো বোন জেলিনা আক্তার মৌকে ছুরিকাঘাত পেটে আঘাত করে জেলিনা আক্তার মৌ (২৪) মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় বিশ্ব বিদ্যালয়ের অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।

রাজধানী ঢাকা স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতাল আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলো

এদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আলীকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয় এবং চাচাতো বোন জেলিনা আক্তার মৌকে আশংকাজনক অবস্থায় আইসিইউতে ভর্তি করা হলেও জেলিনা আক্তার মৌ তখনও জানতো খুনি ঠান্ডু তার বাবাকে বাঁচতে দেয়নি।

জেলিনা আক্তার মৌ হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসা সেবা নেয়ার পর কিছুটা সুস্থ হলে নিজ বাড়ি ফিরে আসলে জানতে চায় বাবা কোথায়-? একথা বলার সাথে সাথেই সকলে হাউমাউ কান্না শুরু করে। মৌ`য়ের প্রশ্ন আমার বাবা মারা গেছে আমাকে কেন জানালেন না। মৌ`য়ের কান্নায় আবার আকাশ -বাতাস বারী হয়ে উঠছিলো।

রাজধানী ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন পশ্চিম রুহিতপুরের ডাক্তার আব্দুল আলী দ্বিতীয় পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আলী মোজাম। তিনি রুহিতপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে একাধিক বার চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হতে না পারলেও নির্বাচন করার ফলে বেশ জনপ্রিয়তা ও পরিচিত অর্জন করেছিলেন। এ রায়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিস্তারিত...