অনলাইন ডেস্ক:
ইনজেকশন, স্যালাইন থেকে ওষুধ সব কিছুই বাইরের ফার্মেসি থেকে কিনে আনতে হয়। টেস্ট, বেড ভাড়াসহ প্রতিদিনই ৪০০ টাকার বেশি খরচ হচ্ছে। শিশু হাসপাতালকে সরকারি বলা হলেও খরচ কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালের মতোই। কথাগুলো বলছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী আরিফ। এই অভিভাবকের ৩ মাসের শিশু আবদুল্লাহ ১ সপ্তাহ ধরে ঢাকা শিশু হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ভর্তি। মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হাসপাতালটিতে কথা হয় আবদুল্লাহর স্বজনের সঙ্গে।
জানা গেছে, হাসপাতালটিতে প্রতিদিনই শতাধিক শিশু ডেঙ্গুরোগী ভর্তি হচ্ছে। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাড়ায় বেড সংকটে অনেককেই অন্য হাসপাতালে ফেরত যেতে হচ্ছে। আরিফের মতোই অন্যান্য রোগীর স্বজনদের অভিযোগ ঢাকা শিশু হাসপাতালে বহির্বিভাগে টিকিটের দাম ৬০ থেকে ২০০ টাকা। আর একদিনের শয্যা ভাড়া ৭০০ এবং আইসিইউ বেডের জন্য গুনতে হয় সর্বনিম্ন সাড়ে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। এর বাইরে ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম ব্যয় তো আছেই। এছাড়া প্রয়োজনীয় ওষুধ, স্যালাইন কিনে আনতে হয় স্বজনদের। এতে হিমশিম অবস্থা তাদের।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এক সময়ের ঢাকা শিশু হাসপাতাল বর্তমানে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে রূপান্তরিত হলেও প্রভাব পড়েনি চিকিৎসা খরচে। বরং অভিযোগ আছে চিকিৎসা ব্যয় বেড়ে দিন দিন হাসপাতালটি যেন রূপ নিচ্ছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। যদিও কর্তৃপক্ষ বলছে, হাসপাতালটিতে রোগীদের স্বল্পমূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বেতনভাতার শতভাগ খরচ সরকার বহন করলে চিকিৎসা ব্যয় আরও কমানো যেত। আরিফ বলেন, সব কিছুই বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়। এন্টিবায়োটিক, ওষুধ বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়। হাসপাতালের ফার্মেসিতে ডিএস স্যালাইন মাঝে মধ্যেই থাকে না। তখন বাইরের ফার্মেসি থেকেই কিনতে হচ্ছে। ৯০ টাকার স্যালাইন আমাদের ২০০ টাকা টাকায়ও কিনতে হয়েছে।
শিশু হাসপাতালে চারদিনে প্রায় ২০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে বলে দাবি অভিভাবক শামসুল আলমের। তার দুই বছর বয়সী মেয়ে সাবিকুন নাহার গত শনিবার থেকে হাসপাতালটিতে ভর্তি। তিনি বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিছুই দেয় না। সব কিছুই বাইরে থেকে কেনা। আজকেও ১২০০ টাকার ওষুধ কিনেছি। চিকিৎসা ভালোই। কিন্তু কোনো কিছুই বিনামূল্যে মেলেনি। রোগীর খাবারও বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়। কোনোদিন ১ হাজার, কোনোদিন আড়াই হাজার টাকার ওষুধ প্রয়োজন হচ্ছে। এছাড়া টেস্টের খরচ তো আছেই।
এ বিষয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবদুল হাকিম জানান, শিশু হাসপাতালে স্বল্প খরচে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এখানে ৬৭৩ বেড রয়েছে। যার মধ্যে ৪০ শতাংশই ফ্রি বেড। এই বেডে যারা চিকিৎসা নেন তারা প্রয়োজনীয় ওষুধ ও সেবা বিনামূল্যে পান। কিছু কিছু ওষুধ যদি হাসপাতালে না পাওয়া যায়, সেগুলো বাইরে থেকে কিনে আনতে হয় স্বজনদের। যারা পারে কেনে, না হলে এখানে সমাজ কল্যাণ আছে। সমাজ কল্যাণ থেকে অভিভাবকরা সেবা নিতে পারেন।