মোঃ সালাউদ্দিন শেখঃ নেত্রকোণার পূর্বধলায় বহুল আলোচিত রাস্তা সংস্কারের জন্য মাটি কাটা কে কেন্দ্র করে স্কুল ছাত্র রেজাউল ইসলাম টিটু (১৬) এর খুনের ঘটনায় মামলার মূল আসামী রোমান তালুকদার (২৯) কে ঢাকার নবাবপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪, ময়মনসিংহ। র্যাব তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জঙ্গি ও সন্ত্রাস, মাদক, অস্ত্র, অপহরণ, হত্যা, নারী নির্যাতন ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন প্রকার অবৈধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আপোষহীন অবস্থানে থেকে কাজ করে যাচ্ছে যা দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণ কর্তৃক ইতোমধ্যেই বিশেষ ভাবে প্রশংসিত হয়েছে।
র্যাব-১৪ এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় বিভিন্ন হত্যা সংক্রান্ত অপরাধ কর্মকান্ড দমনের লক্ষ্যে র্যাব ফোর্সেস অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে হত্যার মত জঘন্য কাজ থেকে সমাজ তথা দেশ’কে বাঁচাতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে। এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাদী ও বিবাদীগণ একই সাকিনের বাসিন্দা। ভিকটিমের বাবা-মা গাজীপুরে থাকিয়া কাজকর্ম করে। ভিকটিম রেজাউল ইসলাম ওরফে টিটু (১৬) তার দাদী ও বড়ভাইয়ের সাথে বাড়িতে থাকে। ভিকটিম টিটু মজিবর রহমান টেকনিক্যাল স্কুল, পূর্বধলা, নেত্রকোণায় ১০ম শ্রেণীতে লেখাপড়া করে।
ঘটনার দিন ইং- ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখ সকাল বেলা ১নং বিবাদী রোমান তালুকদার এর নেতৃত্বে কাপাসিয়া রোড হইতে সাত্যাটি বাজার গামী কাঁচা রাস্তায়, ১ নং সাক্ষী ভিকটিমের চাচাতো চাচার অনুমতি ব্যতিত তাহার জমি হইতে ৯নং বিবাদী মোঃ বিল্লাল হোসেন (৪০), তাহার ভেকু দিয়া মাটি কাটিয়া জমির ক্ষতিসাধন করিতে শুরু করে।
১নং সাক্ষী বিষয়টি দেখিয়া মাটি কাটিতে বাধা নিষেধ করিয়া নিজ বাড়িতে চলে যায়। উক্ত তারিখ সকাল ১০.৩০ ঘটিকার সময় পুনরায় ১নং সাক্ষীর জমিতে মাটি কাটিতে শুরু করিলে ১নং সাক্ষী, ২,৩,৪,৫ নং সাক্ষীসহ ভিকটিম রেজাউল ইসলাম টিটুকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটি কাটতে বাধা নিষেধ করিতে থাকে । ঐ সময় ১ নং ও ৯ নং বিবাদী ১ নং সাক্ষীর সাথে তর্ক-বিতর্কসহ হুমকি-ধামকি দিয়ে জোরপূর্বক মাটি কাটার চেষ্টা করে।
তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে ৩নং বিবাদী আইয়ুব আলী তালুকদার (৫৫) এর হুকুমে সকল বিবাদী ১নং ও ২নং সাক্ষীকে এলোপাথারি ভাবে কিল-ঘুষি,লাাথি মারিতে থাকে। ঐ সময় ভিকটিম মোঃ রেজাউল ইসলাম টিটু ১নং ও ২ নং সাক্ষীকে বিবাদীদের কবল থেকে রক্ষা করিতে গেলে ১নং বিবাদী রোমান তালুকদার ভিকটিমের গেঞ্জির কলার চাপিয়া ধরিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাথারি ভাবে মাথায় ও বুকে সজোরে কিল-ঘুষি মারিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়।
ভিকটিম মাটিতে মাটিতে পড়ে গেলে সকল বিবাদী হত্যার উদ্দেশ্যে ভিকটিমের বুকেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথারি লাথি ও ঘুষি মারিলে ভিকটিম অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিক ভাবে ৭ ও ৮ নং সাক্ষী ভিকটিম রেজাউল ইসলাম টিটু’কে অজ্ঞান অবস্থায় অজ্ঞাতনামা অটো গাড়িযোগে দ্রুত পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার পরীক্ষা নিরীক্ষা করিয়া ইং-১১ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখ দুপুর ১২:০৩ ঘটিকার সময় ভিকটিমকে মৃত বলিয়া ঘোষণা করেন।
উক্ত সংবাদ পূর্বধলা থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনা স্থলে এসে ভিকটিমের মৃতদেহ সুরতহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়। ভিকটিম রেজাউল ইসলাম ওরফে টিটু (১৬) কে হত্যার ঘটনায় নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা থানা এলাকা সহ সারা দেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যর সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় নিহতের মা মোছাঃ আয়েশা বেগম(৪২), স্বামী- মোহাম্মদ আলী, সাং-বুধি (পশ্চিম পাড়া) ,-থানা পূর্বধলা, জেলা- নেত্রকোণা বাদী হয়ে এজাহারনামীয় ০৯ জন সহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন কে আসামি করে নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এরই প্রেক্ষিতে, বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে র্যাব-১৪, সদর ব্যাটালিয়ন এর উপ-পরিচালক অপারেশনস্ অফিসার মোঃ আনোয়ার হোসেন এর নেতেৃত্ব একটি আভিযানিক দল ঢাকার নবাবপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা ১নং আসামী রোমান তালুকদার(২৯)কে আটক করতে সক্ষম হয়। ধৃত আসামীদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করার নিমিত্তে নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।