শুভ হোসেন, স্টাফ রিপোর্টারঃ গোপালগঞ্জ এর মুকসুদপুর উপজেলার কৃষ্ণাদিয়া বাঘু মৃধা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২৪ বছর ধরে বিদ্যালয়ের অর্থ নয়-ছয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রধান শিক্ষক গোলাম মাওলার বিরুদ্ধে প্রতিবছর অভিযোগ করা হলেও তদন্তের নামে তা ধামাচাপা পড়ে যায়। এ বছরও বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি হয়েছে।
মুকসুদপুর উপজেলার শিক্ষার অন্যতম বিদ্যালয়ল এটি। তার বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ নিয়ে নয়-ছয়ের বিষয়টি উল্লেখ করে বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা বেলায়েত হোসেন মৃধার কন্যা মিতা আহমেদ চলতি মাসে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত একটি অভিযোগ দেন। প্রতি বছরের মতো এবারও কি তদন্তের নামে অদৃশ্য কারণে ধামাচাপা পড়ে যাবে প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম, দুর্নীতি? এমন প্রশ্ন জনমনে।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, গোলাম মাওলা ১৯৯৯ সালে কৃষ্ণাদিয়া বাঘু মৃধা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। এর আগে তিনি ঝিনাইদহ কর্মরত ছিলেন বললেও সে ওই বিদ্যালয়ের সাথে যোগাযোগ করলে এই নামে কোনো শিক্ষক তাদের ছিলো না বলে জানান।
অথচ ১৯৯৬ সালের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে সুস্পষ্ট উল্লেখ আছে, ১২ বছর সহকারী শিক্ষক এবং ৩ বছরের প্রধান শিক্ষক হিসেবে অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। তিনি তখনকার সময়ের স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কাজী হাবিবুর রহমান এর মেয়ে মুক্তা খানমকে বিয়ে করে সেই শর্তে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।
২৪ বছরে প্রতিবার নিজের পছন্দমতো লোকজন দিয়ে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করেন গোলাম মাওলা। যোগদানের পর থেকেই বিদ্যালয়ের অর্থ নিয়ে নয়-ছয় করার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। তারই প্রেক্ষিতে ২০০০ সালে গোপালগঞ্জ জেলা জজকোর্টে মামলা করেন স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা বেলায়েত হোসেন মৃধা।
পরে বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি সরাসরি ধরা পড়ে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এল জি ই ডির চিফ ইঞ্জিনিয়ার শ্যামা প্রসাদ অধিকারী। এর আগে বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য ফজলুল হক মাতুব্বর বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই সময়ে তদন্ত কমিটি অর্থ নয়-ছয় করার প্রমাণ পাওয়ায় বিভাগীয় অডিট ও মনিটরিং করার সুপারিশ জানান। কিন্তু অদৃশ্য কারণে তা ধামাচাপা পড়ে যায়।
শিক্ষার্থীদের জন্য ক্রয় করা কম্পিউটার,ল্যাপটপ নিজের আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে গেছেন বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন মিতা আহমেদ। অভিযোগকারী মিতা আহমেদ বলেন, প্রধান শিক্ষক গোলাম মাওলা তার নিজ ক্ষমতা বলে বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাতসহ নানা অনিয়ম করে যাচ্ছেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান ক্ষুন্ন হওয়ার ফলে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় ছেড়ে অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছে। প্রধান শিক্ষকের অর্থ কেলেঙ্কারী বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।
বিদ্যালয়ের অর্থ নিয়ে নয়-ছয় ও অনিয়ম দূর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে গোলাম মাওলা বলেন, আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগ সম্পর্কে কিছু বলতে চাই না। অভিযোগটি তদন্ত করার জন্য কমিটি হয়েছে। যারা তদন্ত করছে তারাই বলবে। মুকসুদপুর উপজেলার ইউ এন ও বলেন, প্রধান শিক্ষক গোলাম মাওলার বিরুদ্ধে অভিযোগটি তদন্ত করা হচ্ছে।