সেবা নিতে এসে চিকিৎসকের কিল-ঘুষির শিকার হয়েছেন হাসপাতালের জমিদাতা ৭৭ বয়স্ক রোগী নুরুল ইসলাম শেখ। গতকাল বুধবার দুপুরে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে। আর অভিযুক্ত চিকিৎসকের নাম ডা. মো. শেখ সাদী। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বজন ও গ্রামবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে। ভুক্তভোগী নুরুল ইসলাম শেখ জানান, গতকাল বুধবার দুপুর ১২টার দিকে টিকিট কেটে ডা. সাদীর কক্ষের সামনে লাইনে দাঁড়ান। এ সময় লাইনের অন্য রোগীরা বৃদ্ধ বিবেচনায় তাকে আগেভাগে ডাক্তার দেখার সুযোগ করে দেন। কক্ষে ঢুকে তিনি দেখতে পান- ডা. সাদী অন্য এক নারী রোগীকে দেখছেন।
তাই পাশের একটি খালি চেয়ারে বসেন নুরুল ইসলাম। এ সময় ডা. সাদী ক্ষেপে যান। বৃদ্ধ নুরুলকে কে ঢুকতে দিয়েছে বলে তুই-তোকারি করেন। বৃদ্ধ ডা. সাদীর রূঢ় আচরণের প্রতিবাদ করলে তাকে মাথায় কিল-ঘুষি ও পিঠে থাপ্পড় দিয়ে কক্ষ থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের দেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃদ্ধকে মারধর করায় সেবা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। চিকিৎসকের মারধরে বৃদ্ধ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে মাথায় পানি দিয়ে কিছুটা সুস্থ করা হয়। ঘটনাস্থলের কাছে উপস্থিত থাকা স্থানীয় দুই সাংবাদিক ফৌজি হাসান খান রিকু ও আসাদুজ্জামান নবীন বৃদ্ধকে মারার কারণ জানতে চান। এতে চিকিৎসক নিজেকে পাশের শ্রীনগর উপজেলায় তাঁর বাড়ি বলে তর্কে জড়ান এবং সাংবাদিকদের হুমকি দিয়ে বলেন লৌহজং উপজেলার চেয়ারম্যান তার আত্মীয়, প্রেসক্লাবের সাংবাদিক তার আত্মীয় নিউজ করলে কি হবে, এই বিষয়গুলো বলেন।
বৃদ্ধকে মারধরের কারণ দেখাতে গিয়ে ডা. সাদী জানান, বৃদ্ধ নুরুল ইসলাম তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন। তবে তিনি বৃদ্ধকে মারধরের কথা অস্বীকার করেন। স্থানীয় শহিদুল ইসলাম জানান, আড়াই দশক আগে নুরুল ইসলাম শেখ ২৮ শতাংশ জমি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণে নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করেন। এখন পরিবার নিয়ে ভাড়ায় পরের জায়গায় ঘর তুলে বসবাস করেন। তিনি আরও জানান, নুরুল ইসলাম নিজের বসতবাড়ি হাসপাতালকে দিয়ে সেখানে সেবা নিতে এসে মারধরের শিকার হলেন, বিষয়টি খুবই নিন্দাজনক। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. মাসুদ আল মারজান বলেন, খুবই দুঃখজনক ঘটনা এটি। তবে তিনি জানান, ভুক্তভোগী বৃদ্ধ ও স্বজনদের ডেকে এনে ডা. সাদী ক্ষমা চেয়েছেন।