• শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের বিভাগীয় সমাবেশ নিঃ স্বার্থ সমাজ কল্যাণ সংগঠনের নব নির্বাচিত কমিটির পরিচিতি ও মাদক বিরোধী সভা শেরপুরে হাসপাতালের সেই তত্ত্বাবধায়কের অপসারণ দাবীতে সাংবাদিকদের বিক্ষোভ বিচারের পর আ.লীগকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে : ড. ইউনূস আমরা এক পরিবার, কেউ কারো শত্রু হবো না: প্রধান উপদেষ্টা সীমান্তের বিএনপি নেতা সাবেক ইউপি সদস্যের ভাতিজা ইয়াবাসহ আটক আওয়ামীপন্থী পুলিশ কর্মকর্তাদের নামের তালিকায় ময়মনসিংহের ওসি সফিকুল ইসলাম ভাড়া বাড়িতে কলেজ ছাত্রের ঝুলন্ত লাশ, মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা যুবদল নেতা হত্যা মামলায় পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বাবুল সরদার চাখারী কারাগারে তিন দিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ

হিজাব নিশ্চিতে ইরানে টহল দিচ্ছে নৈতিকতা পুলিশ

সংবাদদাতা / ১৬৪ পাঠক ভিউ
আপডেট সময় : সোমবার, ১৭ জুলাই, ২০২৩

ইরানের নারীদের হিজাব পরা নিশ্চিত করতে আবারো বিতর্কিত টহল দেওয়ার কাজ শুরু করতে যাচ্ছে দেশটির নৈতিকতা পুলিশ। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এই তথ্য জানিয়েছে। স্থানীয় সময় রবিবার (১৬ জুলাই) পুলিশের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ইরানের হিজাব আইন কড়াকড়িভাবে প্রয়োগ করতে মোরালিটি পুলিশ বা নৈতিকতা রক্ষা পুলিশ আবারো রাস্তায় রাস্তায় টহল দেবে। খবর বিবিসির। প্রায় ১০ মাস আগে হিজাব আইন ভঙ্গের অভিযোগে তেহরানে পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর মাশা আমিনি নামের এক নারীর মৃত্যু হয়। ওই নারীর মৃত্যুর ঘটনায় সারাদেশে ব্যাপক বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়।

এরপরেই ইরানের নৈতিকতা রক্ষা পুলিশের টহল কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছিল। তবে কঠোর ইসলামপন্থীরা বরাবরই দাবি করছিলেন যেন, নৈতিকতা পুলিশের টহল কার্যক্রম আর শুরু না হয়। ইরানের শরিয়া নির্ভর আইন অনুযায়ী, সেদেশের মেয়ে বা নারীদের অবশ্যই মাথা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে হয় এবং শরীর ঢেকে রাখা লম্বা, ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হয়।

এসব নিয়মকানুন যেন সবাই মেনে চলে সেটা দেখার দায়িত্ব ইরানের নৈতিকতা রক্ষা পুলিশের। কেউ যদি আইন বিরোধী পোশাক পরে তাহলে তাকে আটক করার ক্ষমতাও তাদের দেওয়া হয়েছে। ইরানের কট্টরপন্থী বার্তা সংস্থা তাসনিম নিউজে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে পুলিশের মুখপাত্র সায়েদ মোন্তাজেরল মাহদি বলেছেন, যারা পুরোপুরি আইন মেনে পোশাক পরবে না, টহল দেওয়ার সময় প্রথমে তাদের সতর্ক করে দেবে পুলিশের সদস্যরা।

তারপরেও তারা যদি নির্দেশনা না মানে তাহলে পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ২২ বছর বয়সী মাশা আমিনি যখন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে রাজধানী তেহরানে এসেছিলেন, ঠিক মতো হিজাব না পরার অভিযোগ তুলে তাকে নৈতিকতা রক্ষা পুলিশ আটক করে।

তাকে একটি আটক কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার পরে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। সে সময় অভিযোগ তোলা হয়েছিল যে, পুলিশের কর্মকর্তারা লাঠি দিয়ে মাশা আমিনির মাথায় আঘাত করেছেন এবং তাদের গাড়িতে মাথা ঠুকিয়েছেন।

তার মৃত্যুর ঘটনায় ইরানের লাখ লাখ মানুষ পুরো দেশজুড়ে সরকার-বিরোধী বিক্ষোভ শুরু করে। এতে অন্তত ৬শ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এর মধ্যে সরকারিভাবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া মানুষজনও রয়েছে।

কয়েকমাস ধরে চলা ওই বিক্ষোভের সময় নারীরা হিজাব পরা পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছিল। ইরানে ১৯৭৯ সালের ইসলামির বিপ্লবের পর সেটাই ছিল দেশটির ধর্মীয় নেতাদের শাসনকে চ্যালেঞ্জ করা সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ।

সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যায়, সাধারণ জনসমাগমের স্থানগুলোতে নারীদের হিজাব না পরার প্রবণতা বেড়ে চলেছে। ইরানের কর্মকর্তারা এর পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে নানারকম শাস্তির ব্যবস্থা চালু করে। এছাড়া হিজাব আইন মেনে ব্যবসা করা না হলে সেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ করে দেওয়া হয়।

ইরানের অসংখ্য মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিলেও অনেকেই পোশাক আইন সমর্থন করেন। চলতি বছরের শুরুতে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, হিজাব পরেনি এমন দুজন নারীর দিকে দইয়ের কাপ ছুড়ে মারছেন এক ব্যক্তি।

আশেপাশের উপস্থিত ব্যক্তিরা তার ওই আচরণের প্রতিবাদ করেন। এরপর তাকে গ্রেফতার করা হয়। সেই সঙ্গে ওই দুই নারীকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল।

ইরানে ইসলামিক বিপ্লবের পর থেকেই পোশাক সংক্রান্ত নানা ধরনের সামাজিক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। দেশটিতে নৈতিকতা পুলিশ ঘাশত-ই ইরশাদ বা নীতিমালা টহলদার পুলিশ নামে পরিচিত। ২০০৬ সাল থেকে তারা কার্যক্রম শুরু করেছে।

সেখানে মোট কতজন নারী ও পুরুষ নিয়োজিত রয়েছে তা পরিষ্কার নয়। কিন্তু তাদের অস্ত্র এবং আটক কেন্দ্র রয়েছে যেগুলোকে পুনঃ শিক্ষা কেন্দ্র বলা হয়ে থাকে। বিক্ষোভকারীদের ওপর ইরানের সহিংস দমন-পীড়নের প্রতিক্রিয়ায় গতবছর যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলো ইরানের ওপর নৈতিকতা রক্ষা পুলিশ এবং শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিস্তারিত...