• রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫২ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
গায়ের জোরে একতরফা নির্বাচন করতে চাই না: সিইসি আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী শাহজাহানের দোসরদের পুর্নবাসন করছে বিএনপি নেতা বাবুল হানিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্বের বাইরে কিছু নেই: বাদশা ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শপথ নিলেন সিইসি ও ৪ নির্বাচন কমিশনার টুঙ্গিবাড়িতে ১১ হাজার টাকার বীজ আলু ২৬ হাজারে বিক্রি না:গঞ্জে বাউল গানের আড়ালে নাশকতাকারীরা পুলিশকেও ডেম কেয়ার সুনামগঞ্জ সীমান্তে ‌পুলিশের হাতে দুই চিনি চোরাকারবারি গ্রেফতার দুদকের অনুসন্ধানে চিহ্নিত জড়িত শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মিরপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে শিশুসহ দগ্ধ ৭

৭২ কেজি গাঁজাসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৭

সংবাদদাতা / ১৩৭ পাঠক ভিউ
আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ২৩ মে, ২০২৩

রানা আহামেদ, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী, চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া হতে কক্সবাজারের দিকে ০২ টি পিকআপ যোগে মাদকদ্রব্য (গাঁজা) বহন করে নিয়ে যাচ্ছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল গত ২২ মে ২০২৩ ইং তারিখ ০৪:৩০ মিনিটের দিকে চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া থানাধীন চট্টগ্রাম- কক্সবাজার মহাসড়কের পাঁকা রাস্তার উপর একটি বিশেষ চেক পোস্ট স্থাপন করে গাড়ী তল্লাশী শুরু করে।

এসময় দুটি সন্দেহ জনক পিকআপকে চেক পোষ্টের দিকে আসতে দেখে থামানোর সংকেত দিলে পিকআপ দুটি না থামিয়ে মহাসড়কের উল্টোপথে গাড়ি নিয়ে চেকপোস্ট অতিক্রমের চেষ্টাকালে র‌্যাব সদস্যরা বর্ণিত পিকআপ দু’টি সহ আসামী ১। মোঃ আলী হোসেন খোরশেদ (২৭), পিতা- মোঃ রশিদ, থানা- ফটিকছড়ি, জেলা- চট্টগ্রাম, ২। মোঃ আমান উল্লাহ (২৬), পিতা- ফরিদুল আলম, সাং- মাহালিয়া, থানা- সাতকানিয়া, জেলা- চট্টগ্রাম, ৩। মোঃ ইদ্রিস (৩৮), পিতা- মোঃ সিরাজ, সাং- মধ্যম পাহাড়তলী, থানা- হাটহাজারী, জেলা- চট্টগ্রাম, ৪। মোহাম্মদ হোসাইন (৩৫) রাকেশ, পিতা- মৃত ফরিদ, সাং- মধুগ্রাম, থানা- ছাগলনাইয়া, জেলা- ফেনী, ৫। মোঃ আব্দুর জব্বার (৩৮) পিতা- মোহাম্মদ হোসেন, সাং- আমবাগান, থানা- খুলশী, চট্টগ্রাম মহানগর, ৬। মোঃ নুরুল কাদের ভুট্টো (২৫), পিতা- মৃত জামাল উদ্দিন, সাং- সওদাগর পাড়া, থানা- চকরিয়া, জেলা- কক্সবাজার এবং ০৭। মনির উদ্দিন (৩৫), পিতা- আহম্মদ কবির, সাং- ফাঁসিয়াখালী, থানা- চকরিয়া, জেলা- কক্সবাজারদেরকে আটক করে।

পরবর্তীতে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে ধৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশী করে ০১টি পিকআপের পিছনে ফলের ক্যারেটের নিচ হতে ০৩ টি সাদা রঙের ছোট-বড় প্লাষ্টিকের বস্তার ভিতর হতে এবং অন্য একটি পিকআপের ড্রাইভার সিটের পিছনে কেবিনে থাকা ০২টি হলুদ রঙের বস্তার ভিতর হতে মোট ৭২ কেজি গাঁজা উদ্ধারসহ আসামীদেরকে গ্রেফতার করা হয় এবং মাদকদ্রব্য পরিবহনে ব্যবহৃত পিকআপদুটি জব্দ করা হয়।গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ ফেনী জেলার সীমান্ত এলাকা হতে পরস্পর যোগসাজসে মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন স্থানে খুচরা ও পাইকারী মূল্যে বিক্রয় করে আসছে। উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্যের আনুমানিক মূল্য ১১ লক্ষ টাকা।

উল্লেখ্য, র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম কর্তৃক বিভিন্ন অভিযানে মাদক সম্রাট রাকেশ হোছাইন এর মাদকের চালান বিভিন্ন সময়ে আটক করা হয়। রাকেশ দীর্ঘদিন যাবত চট্টগ্রামেত চাঁন্দগাও-মোহরা এলাকায় মাদক সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিল। ইতোপূর্বে ০৩ বার রাকেশের বিভিন্ন আস্তানা ও মাদক চালান সরবরাহ কালে অভিযানে রাকেশ এর মাদক পরিবহন কাজে ব্যবহৃত গাড়িসহ বিপুল পরিমান মাদকদ্রব্য আটক করা হয়। প্রতিবারই রাকেশ হোছাইন ধরাছোয়ার বাইরে ছিল। র‌্যাব-৭ এর ক্রমাগত অভিযানে নাস্তানাবুদ হয়ে সবশেষে রাকেশ নিজেই মাদক ডেলিভারির কাজে সম্পৃক্ত হয়। র‌্যাব-৭, চট্টগ্রামের গোয়েন্দা নজরদারী এবং অভিযানের ফলে চট্টগ্রাম মহানগরীর অন্যতম বড় মাদক ব্যবসায়ী রাকেশ’কে ৭২ কেজি গাঁজার চালান ও তার অন্যান্য সহযোগীসহ আটক করা হয়।

গ্রেফতারকৃ আসামী রাকেশ শীল হোছাইনকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তার আদি নিবাস ও জন্মস্থান ভারতের ত্রিপুরায়। সেখানে তার বাবা মা মারা যাওয়ার পর তার বয়স যখন দশ বছর তখন সে অন্য লোকের মাধ্যমে ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ চলে আসে। বাংলাদেশে এসে প্রথমে নোয়াখালী ও পরবর্তীতে চট্টগ্রামের বন্দরটিলা এলাকায় সেলুনে কাজ করতো। এরপর বন্দরটিলা এলাকায় গাড়ির হেলপারের কাজ নেয় এবং লোহাগাড়া থানাধীন চুনতি গ্রামে বিবাহ করে।

পরবর্তীতে নাম পরিচয় পরিবর্তন করে বাংলাদেশি ঠিকানায় জাতীয় পরিচয়পত্রসহ অন্যান্য ডকুমেন্টস তৈরি করে বাংলাদেশেই বসবাস করে আসছে। বর্তমানে বিগত ১০ বছর যাবৎ রাকেশ তার পরিবার নিয়ে সীতাকুন্ড থানাধীন জংগল সলিমপুর ইউনিয়নের ছিন্নমূল এলাকায় বসবাস করে আসছে। রাকেশ শীল হোছাইন মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে মূলত হোছাইন নামে পরিচয় দিয়ে থাকে। ভারতীয় বংশোদ্ভূত হওয়ায় তার ভারতীয় বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ীর সাথে সখ্যতা গড়ে উঠে এবং চাঁন্দগাও থানাধীন মোহরা এলাকায় বিভিন্ন স্থানে বাসা ভাড়া নিয়ে নিজে জনবল নিয়োগ দিয়ে মাদক আখড়া চালু করে। ধীরে ধীরে তার মাদক ব্যবসা ফুলে-ফুঁপে উঠলে সে কক্সবাজারে ও গাঁজা ও ফেন্সিডিল সরবরাহ শুরু করে এবং সেখান থেকে ইয়াবার চালান এনে চট্টগ্রামে বিক্রয় শুরু করে।

উল্লেখ্য সিডিএমএস পর্যালোচনা করে গ্রেফতারকৃত আসামী রাকেশ হোছাইন এর চট্টগ্রাম ও ফেনী জেলার বিভিন্ন থানায় ৩টি মাদক সংক্রান্ত মামলা পাওয়া যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামী এবং উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিস্তারিত...