শায়লা শারমিন, ময়মনসিংহ : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর ময়মনসিংহ রেঞ্জ পুলিশে একযোগে ৩২ জন ওসিকে বিভিন্ন রেঞ্জে বদলি করেন ডিআইজি ড.আশরাফুর রহমান। পুলিশ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে এবং বিভিন্ন থানার ওসিদের (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) নিয়ে এখন সংশয় তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে বিভিন্ন মেয়াদে যারা ওসি হিসাবে পদায়ন হয়েছিলেন এবং বিভিন্ন সুবিধা নিয়েছেন এমন ১৮০ জন পুলিশ পরিদর্শককে নিয়ে গোপন প্রতিবেদন তৈরি করেছে একাধিক সংস্থা। এরই মধ্যে তা জমা হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচ্চ পর্যায়ে। প্রতিবেদনে তাদের শিক্ষাজীবন, রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা-মতাদর্শ এবং তাদের আত্মীয়স্বজনের কর্মকান্ডের তালিকা সবিস্তারে বর্ণনা করা হয়েছে।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে, ওই কর্মকর্তাদের অনেকে নিজেদের আড়াল করে বর্তমানে অতিমাত্রায় বিএনপি সেজেছেন। তারা কথায় কথায় বলেন, আমি ছাত্র রাজনীতি করেছি। সময়মতো এসব কর্মকর্তা তাদের খোলস বদলে আগের ভূমিকায় ফিরে যেতে পারেন। যা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য মারাত্মক হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তাদের বেশিরভাগই ১৯৯৬ থেকে ২০০১এবং ২০০৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে নিয়োগ পেয়েছেন।
প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, তালিকায় নাম আসা কর্মকর্তাদের অনেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তারা এখনো গোপনে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের সহায়তা করে যাচ্ছেন। ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মোঃ সফিকুল ইসলামের আত্মীয়- স্বজন বর্তমানেও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন। তালিকার বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের গুরুত্বপদে আসীন এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, যাদের নাম তালিকায় এসেছে তাদের ব্যাপারে আরো খোঁজ খবর নেয়া হবে। এই ধারাবাহিকতায় কয়েকজন ওসির নাম প্রকাশ্যে এসেছে। সে অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে এই ১৮০ জনের নামের তালিকায় আলোচনায় রয়েছে ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম এর নাম। সফিকুল ইসলামের নিজ জেলা হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার তেলিয়াপাড়া গ্রামে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, তার বড় ভাই শহিদুল ইসলাম হবিগঞ্জ জেলা যুব- লীগের সহ- সভাপতি ও মাধবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন।ওসি সফিকুল ইসলামের বড় ভাই শহিদুল ইসলাম জানান, আমি যুবলীগ করেছি, ছাত্রলীগ করেছি, কোন অপরাধ তো করিনি। আমার ভাই সিলেটে সততার সাথে চাকরি করেছে। এখন বর্তমানে ময়মনসিংহের ওসি। হয়তো আমার কেউ প্রতিপক্ষ আছে। তাই এসব নিয়ে বেশি ঘাটাঘাটি করছে। সাংবাদিকদের নিউজ না করার অনুরোধও জানান।