বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারের হত্যার দিন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালনের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের আঘাত দিতেই ১৫ আগস্ট মিথ্যা জন্মদিন পালন করত খালেদা জিয়া।
বুধবার (৯ আগস্ট) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ২২ হাজার ১০১ পরিবারের মাঝে আধা-পাকা ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালন করতে শুরু করলে খালেদা জিয়াও সেদিন তার জন্মদিন উদযাপন শুরু করেন।
আওয়ামী লীগ তখন থেকেই এর তীব্র সমালোচনা করে আসছে। দলটির অভিযোগ, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার দিনে আনন্দ করতেই বিএনপি নেত্রী ভুয়া জন্মদিন পালন করেন।
সমালোচনা গায়ে না মাখলেও ২০১৫ সাল থেকে বিএনপি ১৫ আগস্ট কেক কাটা বন্ধ করে ১৬ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিনের সব আয়োজন করে।
বুধবার ২২ হাজার পরিবারের মাঝে ঘর বিরতণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন না। তারপরও জন্মদিন হিসেবে কেককেটে আনন্দ উল্লাস করত। যেদিন আমাদের চোখের পানি পড়ে, মিথ্যা জন্মদিন বানিয়ে সেদিন সে উৎসব করত। শুধুমাত্র আমাদের আঘাত দেওয়ার জন্য এটা করত।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৫ আগস্ট আমি এবং আমার ছোট বোন রেহানা বিদেশে ছিলাম বলে বেঁচে গিয়েছিলাম। ছয় বছর দেশে আসতে পারিনি। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু হয়েছিল। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল। জিয়াউর রহমান নিজেকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষণা দেয়। বাংলাদেশের আরেক মীরজাফর খুনি মোস্তাককে দিয়েই জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন। খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়। তাদেরকে রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতি এরশাদও জিয়ার পথ ধরে ক্ষমতা দখল করেছিল।
আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে কাজ করছে জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, মানুষ যেন উন্নত জীবন পায় সরকার সেজন্য প্রাণপন চেষ্টা চালাচ্ছে।
আমি বাবা-মা ভাইবোন সব হারিয়েছি। ৮১ সালে এসে এই দেশের মানুষকেই আপনজন হিসেবে পেয়েছি। তাদের মাঝে হারানো বাবা-মা ভাইবোনকে খুঁজে পেয়েছি। আমার তো আর কিছু পাওয়ার নেই। এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করছি। দরিদ্র্য অসহায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ভূমি ও নতুন ঘর করে দিচ্ছি- যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাই, একটি মানুষও যেন অযত্নে অবহেলায় না থাকে, যে মানুষগুলোকে আমার বাবা সবচেয়ে বেশি ভালোবেসেছেন।
অনুষ্ঠানে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় আজ ২২ হাজার ১০১টি পরিবারের মধ্যে ঘর হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী। এরই মধ্যে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ৪১টি জেলার আরও ১২৩টি উপজেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীন ঘোষণা করা হয়। যার ফলে মোট উপজেলার সংখ্যা হবে ৩৩৪টি এবং এই ১২টি জেলাসহ সম্পূর্ণ গৃহহীন ও ভূমিহীনমুক্ত জেলার মোট সংখ্যা দাঁড়াল ২১টিতে।