শ্রীনগর, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধিঃ প্রতারক, মাদক ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজ আশরাফ বেপারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় জেলা পুলিশ সুপারের বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন একজন ভূক্তভোগী। অভিযোগকারী চান মিয়া জানান, তার ছেলে ওমান থেকে আসছে ১মাস ধরে। সোমবার (৯ অক্টোবর) একটি মেয়েকে দিয়ে প্রতারণার ফাঁদ পেতে ৫লাখ টাকা চাঁদা দাবী করারও অভিযোগ করেছেন চান মিয়া।
চান মিয়া জানান তার ছেলে ওমান থাকে। মেম্বার যে মেয়ের কথা বলছে সে মেয়ের বাড়ি বরিশাল। বিউটি নামের একটি মেয়ে সৌদি আরব থাকে। ফেসবুকের মাধ্যমে বিউটির সাথে সজিবের সম্পর্ক তৈরীর কথা বলে জানান, বিষয়টি মিমাংসা করে দেব। মিমাংসা না করলে বড় ধরনের সমস্যা হবে। মেম্বারের বাড়িতে ৬ অক্টোবর গেলে তাকে বাড়ীতে পাইনি। সে বাহিরে কাজে বেরিয়ে গেছেন। প্রায় ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করে বাড়িতে চলে আসি।
শুক্রবার (৬অক্টোবর) বিকাল ৪.৪৮ মিনিটে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ বলে অভিযুক্ত। নিরীহ লোকদের জেল জরিমানা, মামলা দিয়ে হয়রানী, মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে বিভিন্ন বিচারের নামে টাকা আদায়সহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন অভিযুক্ত চান মিয়া। আশরাফ বেপারী, পিতাঃ- মৃত জয়নাল বেপারী, গ্রাম- উত্তর সালাতর, ডাকঘরঃ- ভাগ্যকুল, থানাঃ- শ্রীনগর, জেলাঃ- মুন্সীগঞ্জ এই ০১৩০১৮০২৯৩৩ নম্বর থেকে মোবাইলে ফোন দিয়ে চান মিয়াকে “অকথ্য ভাষার গালাগাল করে ও হুমকি দেয় তোর পোলারে বাজারে আমার ক্যাডার দিয়া ধইরা আইন্যা পিছমুরা কইরা গাছের লাগে বাইন্দা পিটাইয়া হাত পা ভাইঙ্গা হালামু, টাকা দিয়া মেম্বারের মাধ্যমে মিট করতে চাইছিল তুই অনলি না”।
অভিযোগকারী চান মিয়া বলেন, শনিবার (৭অক্টোবর) রাত ৭.২৩ মিনিটে হুমকি প্রদর্শনকারী সন্ত্রাসী আশরাফ তার দলীয় প্রায় ১০/১৫ জন ক্যাডারসহ আমার বাড়ীতে আসিয়া জোরপূর্বক সরাসরি আমার পশ্চিম ঘরের ভিতরে ঢোকে তখন আমরা পরিবারের সবাই রাতের খানা খাইতেছিলাম। আচমকা সন্ত্রাসী আশরাফ গালি দিয়া বলে ঐ বিষয় হইতে বাঁচতে চাইলে আমাদেরকে ৫,০০,০০০/- (পাঁচলক্ষ) টাকা চাঁদা দাবী করে।
তার দলীয় লোকজন বলে চাঁদা না দিলে ঐ মেয়ে আইন্যা তর পোলার সাথে বিয়া পড়াইয়া দিমু পরে বুঝবি টাকা কেমনে না দেছ, তাদেরকে দেখে আমরা আতংকিত হইয়া ছুটাছুটি শুরু করি এরই মধ্যে তারা ঘরে ঢুকে তার ছেলে সজিবকে খানা থেকে উঠাইয়া শার্টের কলারে ধরিয়া রিপন গামছা দিয়া প্যাঁচ মারিয়া ঘুন্না দিয়া- মাটিতে ফেলিয়া দিয়া টানিয়া ঘরের বাহিরে নিয়া যাইতে চায় আমার ঘরের মহিলারা আমার ছেলেকে শ্বাসরুদ্ধ অবস্থায় ওদের নিকট থেকে ছুটাইয়া রাখি।
চান মিয়া আরো বলেন, এই ঘটনার সময় দ্রুত ০১৭০৩৯৪৪৭০২ নম্বর থেকে ৯৯৯ নম্বরে জরুরী কল করলে সেখান থেকে বলেছেন থানায় এসে অভিযোগ করেন তারপরে আমরা যাব। সাথে সাথে অভিযোগকারী ওসি সাহেবকে ফোন করেন কিন্তু ওসি সাহেব তাকে বিভিন্ন বিষয়ে জেরা শুরু করে কালক্ষেপন করেন।
তখন অভিযোগকারী বলেন, আমার ছেলে বিদেশ থেকে আসছে, তারা আমার ছেলেকে জোরপূর্বক বাড়ী থেকে নিয়া যাইতে চায়, তখন এসি সাহেব আমাকে বলে যে, তারা কারা তারা কি কাছে আছে তাদের কাছে ফোনটা দেন তখন রমজান, পিতামৃত আহাম্মদ মাদবর এর নিকট মোবাইল ফোনটি দেয়া হলে দ্রুত তারা সটকে পড়ে আর বলে “তোর কোন বাবায় আছে, এসি তো আমাদের লোক, তরে যে ধমকায় দেখলি না তুই, তগো যে কোন সময় ধইরা লইয়া যামু, তরা ওসির কাছে ফোন দিতে কেন?”।
পরবর্তীতে রাতের গভীরে আবারও আবু বকর, পিতা- হাবি বেপারী ৫/৭ জন লোক নিয়া অভিযোগকারীর বাড়ীতে আসে। টের পাইয়া আমরা সজাগ হয়ে গেলে তারা চলে যায়।
আশরাফ অত্র ইউনিয়নের মাদক ব্যবসার মাধ্যমে নিরীহ লোকজনকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও মিথ্যা মামলায় ফাসাইয়া অপকৌশলের মাধ্যমে চাঁদা আদায় করে এমনকি বিভিন্ন লোকজনকে বাড়ী থেকে ধরে এনে মুক্তিপণ দাবী করে আদায় করে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে অসাধু থানা পুলিশের সাথে যোগসাজস আতাঁত, দহরম মহরম এর সুবাদে সন্ত্রাসী আশরাফ তাদেরকে ইয়ারা দিয়ে শ্রীনগর থানায় নিয়ে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় ঢুকিয়ে কোর্টে চালান করে দেয়ারও অভিযোগ করেছেন চান মিয়া।
এই ঘটনায় রোববার (০৮অক্টোবার) শ্রীনগর থানায় অভিযোগ করতে গেলে ডিউটি অফিসার একজন মহিলা পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, তোমার ছেলে সৌদি আরব থেকে এক মহিলার টাকা নিয়ে এসেছে কাজেই তোমার অভিযোগ গ্রহণ করা হবে না। এ বিষয়ে আশরাফ বেপারী বলেন, আমি চান মিয়াকে চিনি না। সাহেব আলী নামের এক লোক আছে যিনি আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ করে বেড়াচ্ছে। আমি ঢাকায় ফলের ব্যবসা করি। আমি একজন সমাজ প্রতিনিধি। মসজিদের সভাপতিও তিনি। আমি একটা অসহায় মানুষের পক্ষে তদবিরে থানায় গিয়েছে তদবিরে। সেই জন্যই আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। মেম্বারও আমার সাথে আছে। তাকে নিয়েই আমি কাজ করি।
১নং ওয়ার্ডের মেম্বার সুলতান মাহমুদ বলেন, আমার মোবাইল নাম্বার দিয়েই চান মিয়াকে ফোন দেয়ার বিষয় স্বীকার করলেও আশরাফ বেপারী এই ঘটনার সাথে জড়িত না বলে এড়িয়ে যান। তিনি জানান, আশরাফ বেপারীর এক ভাই এস.আই আক্কাস। এ বিষয়ে সাহেব আলী জানান, তুষার নামের একটি ছেলে আল আমানিরে মাথায় আঘাত করে। কিন্তু সেই ঘটনার সাথে আমাকে জড়িয়ে প্রধান আসামী বানিয়ে জেল খাটিয়েছে আশরাফ বেপারী। সে তার ভাই এস.আই আক্কাসের সহযোগিতায় বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করে আসছে। এলাকায় একজন চিহিনত মাদক ব্যবসায়ী। মাদকের ডিলার। ভাই এসআই আক্কাস ঢাকা থেকে মাদক পাঠায় সেই মাদক আশরাফ এলাকায় বিক্রি করে।
পুলিশ ঘটনা জেনেও না জানার ভাব দেখিয়ে নিরহ মানুষের হয়রানি করে আসছে। ইতিমধ্যে মো: মোস্তফা মুন্সীর কাছ থেকে ৩৬হাজার টাকা, মো: লাভলু মুন্সীর থেকে ১৬হাজার টাকা, মো: লতিফ খলিফা থেকে ৫০হাজার টাকা, বজলুর রহমান এর বউয়ের কাছ থেকে ৪০হাজার টাকা, মো: সাহেব আলীর কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা নিয়েছে আশরাফ বেপারী। এ বিষয়ে শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর জানান, আশরাফ বেপারীকে আমি চিনিনা। দিনে কতজনই ৯৯৯ এ ফোন দেয়। হয়তবা ফোন দিয়েছেন কিন্তু বিষয়টি আমার নলেজে নাই। অভিযোগ নিয়ে পাঠান ব্যবস্থা নেব।