• বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৩১ অপরাহ্ন

এবার ফেঁসে যাচ্ছে ১১৬ ডিসি-এসপি!

বিশেষ প্রতিনিধিঃ / ৫৮ পাঠক ভিউ
আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী, ২০২৫

বিশেষ প্রতিনিধি : ২০১৮ সালের নির্বাচনে তৎকালীন সরকারদলীয় প্রার্থীদের জিতিয়ে দেওয়ার নেপথ্যের আলোচিত-সমালোচিত সাবেক জেলা প্রশাসক ডিসি-পুলিশ সুপাররা আবারও আলোচনায় এসেছে। এবার তাঁদের ফাইল ধরে টান দিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরের কর গোয়েন্দারা। রাতের ভোটের কারিগর বলে পরিচিত এসব ডিসি-এসপির বিপুল অঙ্কের কর ফাঁকি অনুসন্ধানে সংস্থাটির আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিট ব্যাপক আয়োজনে মাঠে নেমেছে। বিশেষ করে ২০১৮ সালের নির্বাচনই আলোচনার কেন্দ্রে। ওই সময় তাঁরা প্রার্থীদের কাছ থেকে ‘হ্যান্ডসাম অ্যামাউন্ট’ কামিয়েছিলেন বলেও প্রচার রয়েছে। জানা গেছে, রাতের ভোটের সেই নির্বাচনে সরাসরি যুক্ত ছিলেন তৎকালীন সময়ের ৫৭ জন ডিসি ও পুলিশের ৫৮ জন পুলিশ সুপার। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন তারা বিভিন্ন স্থানে পদায়ন হয়েছেন। তাঁদের আয়কর নথি যাচাই করে প্রকৃত সম্পদের সঙ্গে মিলিয়ে দেখার উদ্যোগ নিয়েছে দুটি সংস্থা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, তাঁদের বিষয়ে জনগণের একটা চাপা ক্ষোভ ছিল। ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর এই ক্ষোভ এখন প্রকাশ্যে। সরকারি এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনেক তথ্য আয়কর গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে। তাঁরা এখন যাচাই-বাছাই করে কর ফাঁকিসংক্রান্ত বিষয় অনুসন্ধান করবেন। কর ফাঁকি উদঘাটন হলে আয়কর আইন অনুযায়ী শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেবে এনবিআর। এ ছাড়া জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের তথ্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) জানাবে। আইন অনুযায়ী তখন দুদক তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। জানা গেছে, ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে একটি জরিপ করেছিল জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই)। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের মাত্র ২২টি আসনে জয় নিশ্চিত ছিল। বাকি আসনে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় পার্টি ও অন্যান্য দলের জয়ের সম্ভাবনা দেখিয়েছিল সংস্থাটি।

এরপর গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন ও পুলিশের যাচাই-বাছাইয়ের পর নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মনোনীত করে পতিত সরকার। যাচাই প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল ব্যক্তি ও পরিবারের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা। এর আগে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করে বিএনপিসহ বেশির ভাগ নিবন্ধিত দল। ২০১৮ সালে বহুল আলোচিত সংলাপে শেখ হাসিনার কাছ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি পেয়ে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ভোটে অংশ নেয়। তবে ডিসি-এসপিদের কারণে ওই ভোট বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ হয়।

আলোচিত ৫৭ ডিসি : ভারতের এজেন্ট ময়মনসিংহের সাবেক ডিসি ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস, নেত্রকোনার মঈনউল ইসলাম, জামালপুরে আহমেদ কবীর, শেরপুরে আনার কলি মাহবুব, সিলেটে এম কাজী এমদাদুল ইসলাম, সুনামগঞ্জে মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, মৌলভীবাজারে মো. তোফায়েল ইসলাম, হবিগঞ্জে মাহমুদুল কবীর মুরাদ, ঢাকায় আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান, গাজীপুরে ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর, নারায়ণগঞ্জে রাব্বী মিয়া, মুন্সীগঞ্জে সায়লা ফারজানা, কিশোরগঞ্জে মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী, টাঙ্গাইলে মো. শহীদুল ইসলাম, নরসিংদীতে সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন, মাদারীপুরে মো. ওয়াহিদুল ইসলাম, শরীয়তপুরে মো. কাজী আবু তালেব, ফরিদপুরে উম্মে সালমা তানজিয়া, মানিকগঞ্জে এস এম ফেরদৌস, গোপালগঞ্জে মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকার, রাজবাড়ীতে মো. শওকত আলী, চট্টগ্রামে মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন, রাঙামাটিতে এ কে এম মামুনুর রশিদ, বান্দরবানে মোহাম্মদ দাউদুল ইসলাম, খাগড়াছড়িতে মো. শহিদুল ইসলাম, কক্সবাজারে মো. কামাল হোসেন, লক্ষ্মীপুরে অঞ্জন চন্দ্র পাল, চাঁদপুরে মো. মাজেদুর রহমান খান, ফেনীতে মো. ওয়াহিদুজ্জামান, নোয়াখালীতে তন্ময় দাস, কুমিল্লায় মো. আবুল ফজল মীর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হায়াত-উদ-দৌলা খান, রাজশাহীতে এস এম আব্দুল কাদের, চাঁপাইনবাবগঞ্জে এ জেড এম নুরুল হক, নওগাঁয় মো. মিজানুর রহমান, নাটোরে মো. শাহরিয়াজ, পাবনায় জসিম উদ্দিন, বগুড়ায় ফয়েজ আহমেদ, সিরাজগঞ্জে কামরুন নাহার সিদ্দীকা, জয়পুরহাটে মোহাম্মদ জাকির হোসেন, খুলনায় মোহাম্মদ হেলাল হোসেন, বাগেরহাটে তপন কুমার বিশ্বাস, সাতক্ষীরায় এস এম মোস্তফা কামাল, যশোরে মো. আব্দুল আওয়াল, মাগুরায় মো. আলী আকবর, ঝিনাইদহে সরোজ কুমার নাথ, নড়াইলে আনজুমান আরা, কুষ্টিয়ায় মো. আসলাম হোসেন, মেহেরপুরে মো. আতাউল গনি, চুয়াডাঙ্গায় গোপাল চন্দ্র নাথ, বরিশালে এস এম অজিয়র রহমান, ঝালকাঠিতে মো. হামিদুল হক, পিরোজপুরে আবু আহমেদ সিদ্দিকী, পটুয়াখালীতে মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী, বরগুনায় কবীর মাহমুদ, ভোলায় মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দীক ও রংপুরে এনামুল হাবীব। এরমধ্যে ভারতের এজেন্ট ময়মনসিংহে ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস শতকোটি টাকা কামিয়ে নিয়েছেন। ময়মনসিংহে তার পরিবারের নামে শত বিঘা জমি রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন এসপি জানিয়েছেন কালের কন্ঠ পত্রিকার সংবাদে ২০১৮ সালের পুলিশ সুপারদের তালিকা ভুল বশতঃ ২০২৪ কমর্রত থাকা পুলিশ সুপারদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। যা হাস্যকর। ২০১৮ সালে ৫৯ জন এসপির মধ্যে যারা ছিল আলোচনায় : ঢাকা জেলায় শাহ মিজান শফিউর রহমান,সুনামগঞ্জে বরকত উল্লাহ খান, জয়পুরহাটে মোল্যা নজরুল ইসলাম, নোয়াখালীতে আনিসুর রহমান, ময়মনসিংহে শাহ্ আবিদ হোসেন, কুমিল্লায় সৈয়দ নুরুল ইসলাম, নরসিংদীতে মিরাজ উদ্দিন আহমেদ,পাবনায় জিহাদুল কবীর, যশোর মঈনুল হক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ টিএম মোজাহিদুল ইসলাম, চট্টগ্রামে নূরে আলম মিনা, কিশোরগঞ্জে আনোয়ার হোসেন খান, নেত্রকোনায় জয়দেব কুমার চৌধুরী, ফরিদপুর জামিল হাসান, দিনাজপুরে হামিদুল আলম, নারায়ণগঞ্জ হারুন উর রশিদ ওরফে (ডিবি হারুন), গোপালগঞ্জে সাইদুর রহমান, গাজীপুর শামসুন্নাহার, টাঙ্গাইলে সঞ্জিত কুমার, জামালপুরে দেলোয়ার হোসেন, মুন্সিগঞ্জে জায়েদ আলম, বরগুনায় বিজয় বসাক, খাগড়াছড়িতে আহমার উজ্জামান,সিরাজগঞ্জে হাসিবুল আলম, রাজবাড়ীতে মিজানুর রহমান, লালমনিরহাটে রাশেদুল আলম, বাগেরহাটে পঙ্কজ কুমার রায়, নওগাঁয় আব্দুল মান্নার মিয়া, বান্দরবানে জাকির হোসেন মজুমদার, টাঙ্গাইল সঞ্জিত কুমার রায়, ঠাকুরগাঁও-এ মনিরুজ্জামান, চাঁদপুরে মাহবুবুর রহমান, রাঙ্গামাটিতে আলমগীর কবীর, বরিশালে সাইফুল ইসলাম, ঝিনাইদহে আসাদুজ্জামান, নাটোরে লিটন কুমার সাহা, বগুড়ায় আলী আশরাফ ভূঁইয়া, কক্সবাজারে এবিএম মাসুদ আলম, সিলেটে ফরিদ আহমেদ, মৌলভীবাজারে ফারুক আহমেদ.শেরপুরে কাজী আশরাফুল আজীমসহ আরও অনেকেই।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিস্তারিত...