• শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:০০ পূর্বাহ্ন

ঐতিহ্যবাহী বালিয়া মাদ্রাসার মুহতামিমের ভাবমূতি নষ্টের পায়তারা

সংবাদদাতা / ১৪০ পাঠক ভিউ
আপডেট সময় : বুধবার, ১ মে, ২০২৪

ফুলপুর ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:  ব্যক্তি আক্রোশ আর দ্বন্দ্ব কলহকে কেন্দ্র করে উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী  ক্বওমী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘জামিয়া আরাবিয়া আশরাফুল উলূম বালিয়ার উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে।    বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিষ্ঠানের বর্তমান মুহতামিম মাওলানা ওয়াইজ উদ্দিনকে প্রথম থেকেই   পছন্দ করছেন না মাদ্রাসার শিক্ষক ও স্থানীয় একটি  পক্ষ। তাদের অভিযোগ সিনিয়রদের ডিঙিয়ে পরিচালনা কমিটি তাকে মোহতামিম করেছে।  কিন্তু পরিচালনা কমিটি এসব অভিযোগ আমলে না নিয়ে তাকে অধিকতার যোগ্য মনে করে মাদ্রাসার বৃহত্তর স্বার্থে  পাঁচ বছর আগে মোহতামির নিয়োগ করেন।,পরিচালনা কমিটির যুক্তি মাওলানা ওয়াজউদ্দিন দেশ বিদেশে একটি পরিচিত নাম। মাদ্রাসার কালেকশন ও সুনাম ধরে রাখা তার মত উদ্যোমী লোক প্রয়োজন ছিল বলেই ।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এম পির পরামর্শ ক্রমে তাকে মোহতামিম  নিয়োগ করা হয়।,দায়িত্ব পেয়ে মাওলানা ওয়াজ উদ্দিন মাদ্রাসার ব্যাপক উন্নয়ন ও শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনেন  ফলে পুনরায় ৫ বছরের জন্য তাকে মুহতামিম নির্বাচিত করেছেন।এরপর থেকেই প্রতিপক্ষ গ্রুপটি তার বিরুদ্ধে মরিয়া হয়ে ওঠে। শিক্ষকদের একটি বড় অংশ ও তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় মাদ্রাসার উন্নয়ন ও শিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। মোহতামিম মাওলানা ওয়াজ উদ্দিন মাদ্রাসা কে ধ্বংস করছেন পরিচালনা কমিটির কাছে জমা পরা এমন একটি লিখিত অভিযোগ বর্তমানে তদন্তনাধীন আছে।

পরিচালনা কমিটির অধিকাংশ সুযোগ এর সাথে  কথা বললে তারা জানান  বর্তমান মুহতামিম মাওলানা ওয়াইজ উদ্দিন দামাত বারাকাতুহুম ২০২০ সনের ১৬ ডিসেম্বর দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে বর্তমান সময় পর্যন্ত জামিয়ার শিক্ষার্থীদের তালীম তরবিয়তের পাশাপাশি উন্নয়নমূলক যে অবদান রেখেছেন তা নিঃসন্দেহে স্মরণযোগ্য। হেফাজতে ইসলাম কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব হলেও মাদ্রাসার স্বার্থে তিনি সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী বর্তমান সংসদ সদস্য শরীফ আহমেদের সাথে  সুসম্পর্ক রেখে মাদ্রাসার উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রেখেছেন।  তিনি সাবেক মুহতামিম শায়খে বালিয়া আল্লামা গিয়াছ উদ্দিন আহমদ পাঠান (রহ.)অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছেন।  দলমত নির্বিশেষে সকলের সঙ্গেই তার রয়েছে সুসম্পর্ক। বর্তমান এমপি মহোদয়ের অনুদানেই বালিয়ার জামে মসজিদের দ্বিতীয় তলার সম্পূর্ণ টাইলস এবং এস এস দ্বারা সিঁড়ির কাজ সমাপ্ত করেছেন। এতে ব্যয় হয়েছিল প্রায় ২৮ লক্ষ টাকা। এছাড়া এমপি শরীফ আহমেদের অনুদানেই ভাষা সৈনিক এম শামসুল হক ভবন নামে ৪ তলা ফাউন্ডেশনে ১৫০×৩৪ ফুট বিশিষ্ট বিশাল একটি ভবন মঞ্জুর করিয়েছেন। ৭৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ইতোমধ্যে ওই ভবনের নিচ তলার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

জামিয়ার মহিলা শাখার ঘরগুলো যখন ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল তখন তিনি কমিটির পরামর্শ ও সিদ্ধান্ত মোতাবেক ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের সহযোগিতায় ৩ তলা ভবন সংস্কার করেন। ছাত্রীদের সুবিধার্থে ভেতরে ১২টি এটাচড বাথরুমসহ গোসলের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়। এতে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে। এছাড়া এই মুহতামিমের মাধ্যমে মন্ত্রী মহোদয়ের অনুদানে প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মাদরাসার বার্ষিক বড় সভার সুবিধার্থে সামনের পরিত্যক্ত বিশাল পুকুরটি ভরাট করা হয় এবং ছাত্রদের অজু গোসলের প্রয়োজনে উত্তর পূর্ব কোণে ১০০×১২০ ফুট একটি পুকুরের ব্যবস্থা করা  হয়।এ প্রতিনিধিকে বলেন , ‘শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন দেওয়া হয় না’ এ ধরনের একটি অভিযোগ তার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে। যাহা সত্য নয়। কারণ, গত ২০২৩ -এর জানু লক্ষ ৬৭ হাজার টাকা নিয়েছেন।

যার প্রমাণ জামিয়ার হিসাব বিভাগে লিখিতভাবে সংরক্ষিত আছে। এছাড়াও উনার বিরুদ্ধে শিক্ষকরা আরও বেশ কিছু অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। এ বিষয়ে উনার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার বক্তব্য হলো তাদের অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ অবাস্তব। শুধুই হিংসা, পরশ্রীকাতরতা, ব্যক্তি আক্রোশ ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ বিষয়ে ফুলপুর পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মাদরাসার কোষাধ্যক্ষ, মজলিসে শূরা ও অডিট কমিটির সদস্য আবু রায়হান তালুকদার, মজলিসে শূরার সদস্য সাবেক ওসি হারুন অর রশিদ, মাদরাসার দুই শিক্ষক মাওলানা এনামুল হক ও মাওলানা মোখলেছুর রহমান মন্ডল এবং কাতুলী ফাযিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা হাবিবুর রহমানকে নিয়ে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তের পর  আগামী ১৫ জুন তারা মাদরাসার কার্যকরী কমিটির  সভাপতি বরাবর রিপোর্ট পেশ করবেন।  এলাকাবাসীর আশা মাদ্রাসার দ্বন্ধ কলহ অবিলম্বে মিটে মাদ্রাসাতেই তার ঐতিহ্য ধরে রাখবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিস্তারিত...