• রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:

কৃষি মার্কেটের অবস্থাও বঙ্গবাজারের মতো : ফায়ার সার্ভিস

সংবাদদাতা / ১১৮ পাঠক ভিউ
আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

অনলাইন ডেস্ক:

অগ্নিকাণ্ডের শিকার হওয়া মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটও বঙ্গবাজারের মতো বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইন্টেন্যান্স) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটের আগুনের বিষয়ে ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কৃষি মার্কেটটিতে কোনো সেফটি প্ল্যান নাই। এই মার্কেটটিতে বারংবার নোটিশ দেওয়া হয়েছে এবং বিভিন্নভাবে গণসংযোগ করা হয়েছে। সচেতনতার প্রোগ্রাম যেভাবে আমরা করেছি সেভাবে তারা সাড়া প্রদান করেননি। এই মার্কেটটা কিছুটা বঙ্গবাজার টাইপের।

তিনি বলেন, এখানে ভেতরে যতগুলো রাস্তা এবং বাইরের যেসব ছোট ছোট রাস্তা আছে পুরোটাই বিভিন্ন মালামাল দিয়ে গাদাগাদি করে বন্ধ করা ছিল। পুরো মার্কেট টাইট কলাবসিবল গেট দিয়ে আটকানো ছিল।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে কোনো ফায়ার সেফটি ছিল না। প্রাথমিক ফায়ার ফাইটিংয়ের কোনো ব্যবস্থাই ছিল না। ফুটপাত ও সড়কে দোকান থাকা ও মানুষের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হয়েছে। এখানে পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও ছিল না।

তিনি আরও বলেন, মোহাম্মদপুর নতুন বাজার (কৃষি মার্কেট) আগুন লাগার খবর পেয়ে ৯ মিনিটের মাথায় আমরা এখানে চলে আসি। ৩টা ৫২ মিনিট থেকে আমরা এখানে আগুন নির্বাপনের চেষ্টা করি। আমরা ৯টা ২৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণ এনেছি। ১৭টি ইউনিটে ১৫০ জন ফায়ার ফাইটার কাজ করেছে। আমাদের সাথে বিজিবি, পুলিশ, র‌্যাব, সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী সহযোগিতা করেছে।

তাজুল ইসলাম বলেন, এখানকার নাইট গার্ড যারা ছিলেন তারা বাহিরে ছিলেন। তাদেরকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি তেমন একটা। আমাদেরকে বেগ পেতে হয়েছে ভেতরে ফায়ার ফাইটারদের প্রবেশ করতে। তালা ভেঙে এবং কলাবসিবল গেট ভেঙে আমাদেরকে ভেতরে গিয়ে তারপর আগুন নির্বাপনে কাজ করতে হয়। এ মার্কেটের বাইরেও বিভিন্নভাবে রাস্তাগুলো দখল করা ছিল। দোকানের সামনে ছোটখাটো দোকান আমাদের একটা কালচার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এগুলোর জন্য আমাদেরকে বেগ পেতে হয়।

ফায়ার সার্ভিসের এই পরিচালক বলেন, আমরা আসার পরই আগুনের মাত্রা অনেক বেশি দেখেছি। একটা পর্যায়ে মার্কেটের প্রায় চার ভাগের তিনভাগ সম্পূর্ণ আগুন ধরে যায় এবং আমরা চেষ্টা করি এই মার্কেটের ভেতরে যেন আগুনটা আবদ্ধ থাকে। আমাদের ফায়ার ফাইটাররা সর্বাত্মক চেষ্টা করে আগুনটাকে একটা জায়গায় সীমাবদ্ধ রাখতে পেরেছে।

তিনি বলেন, আমরা এখন যেটা করছি আগুনটা নির্বাপনের চেষ্টা চলছে। আগুনটা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে তবে নির্বাপনে কিছুটা সময় লাগবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রতি সপ্তাহে শনিবারে গণসংযোগ করি। এছাড়াও বিভিন্ন সময় মার্কেটের প্রতিনিধিদেরকে ডেকে আমরা অনেকবার আলোচনা করেছি অনেক ওয়ার্কশপ করেছি। মার্কেটের যারা মালিকপক্ষ তাদেরকে ডেকে আমরা বুঝিয়েছি সচেতনতার প্রোগ্রাম আমরা কিভাবে করব। প্রাথমিক ফায়ার ফাইটিং উনাদেরকেই করতে হবে। এই মার্কেটে প্রাথমিক ফায়ার ফাইটিং এর কোনো ইকুইপমেন্টই ছিল না। কোনো ধরনের পানির সোর্স ছিল না। আমরা সব থেকে বেশি বেগ পেয়েছি পানির সোর্সের জন্য। এখানে বিভিন্ন ভবনে পানির সোর্স রয়েছে কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়। খুব দ্রুত আমাদের পানি শেষ হয়ে যায়। আমরা বিশেষ পানি বাহিত গাড়ি এনে এবং অন্যান্য বাহিনীর সহায়তায় আমরা এই কার্যক্রমগুলো করি।

আগুন নেভাতে এত সময় লাগার কারণ জানিয়ে তিনি বলেন, আগুন নেভাতে দেরি হওয়ার আরেকটি বড় কারণ ছিল মানুষের ভিড়। মানুষের ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের পুলিশ বিজিবি তারা খুবই হিমশিম খেয়েছে। এই ভিড়ের কারণে আমাদের এত সময় লেগেছে। যদিও মানুষ চেষ্টা করতে চায় আমাদেরকে সহযোগিতা করার জন্য কিন্তু আদৌ এটা আমাদের অনেক সময় সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আগুনের সূত্রপাত আমরা তদন্ত করে জানার চেষ্টা করব। তবে যতটুকু বুঝেছি মুদির দোকানের যেই অংশটি ছিল ওই অংশ থেকে আগুনের সূত্রপাত। আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজে যারা ছিল তাদের দুই একজন কিছুটা আহত হয়েছে। এর বাইরে কোনো বড় ধরনের হতাহতের তথ্য নেই।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিস্তারিত...