বনি আমিন, কেরানীগঞ্জ থেকেঃ ঢাকার কেরানীগঞ্জে এক হত্যা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এক বছর পরে চঞ্চল্যকর অন্য গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন ও এই ঘটনার সাথে জড়িত ৫ আসামিকে গ্রেফতার করেছে মডেল থানা পুলিশ। আজ মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানান ঢাকা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম, অপস, এ্যান্ড ট্রাফিক দক্ষিণ) আমিনুল ইসলাম।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে আরো জানান, গত বছরের ৬ জুন মারিয়া নামে ১৭ বছরের এক অজ্ঞাতনামা কিশোরীকে গণধর্ষণ করে হত্যা করে রাতের আঁধারে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পশ্চিম বামন সুর জামে মসজিদের পাশে একটি পুকুরে ফেলে যায় অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা।অজ্ঞাতনামা হিসেবে মারিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মডেল থানা একটি মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে মামলাটি অতীব গুরুত্ব বিবেচনায় পিবিআই এর হাতে হস্তান্তর করা হয়। পিবিআই এই মামলার এক বছরের অধিক সময় তদন্ত করার পরেও কোন রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি।
অন্যদিকে এই মাসেই অটো চালক নয়ন হত্যা মামলার তদন্ত ও এ মামলার আাসামি সজিব,আলী আকবার, রাকিব, রিয়াজ নামে ৪ আসামিকে গ্রেফতার করার মাধ্যমেই কাকতালীয় ভাবে মারিয়া হত্যার মূল রহস্য বেরিয়ে আসে। এ যেন কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসলো। ধৃত ওই চার আসামি নয়ন হত্যার পাশাপাশি মারিয়াকেও গণধর্ষণ করে একটি পুকুরে ফেলে গুম করার লোমহর্ষক বর্ণনা দেয় পুলিশের কাছে। তারা আরো জানায় মারিয়া হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ছিল শাওন। পরে পুলিশের একটি চৌকশ দল তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে শাওনকে শরীয়তপুর জেলার জাজিরা থেকে গ্রেফতার করে।
শাওন পুলিশকে জানায় খোলা মোরা টিনের মসজিদ এলাকায় বৃষ্টি ও তার বান্ধবী মারিয়াকে নিয়ে আসা হয়। এ সময় সে নিজে এবং রাকিব, সজীব ও আলী আকবর মিলে বৃষ্টিকে ধর্ষণ করে। পরে মারিয়াকে তারা সবাই মিলে ধর্ষণ করতে চাইলে মারিয়া এতে বাধা দেয়। পরে সবাই মিলে মারিয়ার হাত-পা বেঁধে তাকে গণধর্ষণ করে।
পরে মারিয়ার ওড়না দিয়ে তার গলায় পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে নির্মম ভাবে হত্যা করে তার লাশ গুম করার জন্য পশ্চিম বামনসুর জামে মসজিদের পাশে একটি পুকুরে পানিতে ফেলে যায়। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কেরানীগঞ্জ সার্কেল শাহাবুদ্দিন কবীর, কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি মামুন অর- রশিদ, (তদন্ত) খালেদুর রহমান এবং (অপারেশন) মুন্সি আশিকুর রহমান।