টঙ্গিবাড়ী (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি: মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ীতে আলু রোপন মৌসুমে বীজ আলু ক্রয় নিয়ে বিপা’কে পড়েছেন প্রান্তিক কৃষক। ১১ হাজার টাকার হল্যান্ডের বাক্স বীজ আলু কিনতে হচ্ছে ২৬ হাজার টাকায়। গত বছর ১০ হাজার টাকায় উক্ত বীজ আলু বিক্রি হলেও, এ বছর আমদানীকারক ও বীজ ডিলারদের সিন্ডিকেটের কারনে দাম বেড়ে গিয়ে দাড়িয়েছে ২৬ হাজার টাকায়, এতে আর্থিক সংকটে পড়েছে আলু চাষীরা।
উপজেলার টঙ্গিবাড়ী সদর বাজারে মেসার্স মাহিন ট্রেডার্সে গিয়ে দেখা যায়, প্রান্তিক কৃষকের কাছে হল্যান্ডের বাক্স বীজ আলু ২৬ হাজার টাকায় বিক্রি করলেও ক্যাশ মেমো’তে ১৩ হাজার ৫০০ টাকা উল্ল্যেখ করা হয়েছে এবং কিছু ডিলার ক্যাশ মেমো ছাড়াও দ্বিগুন দামে বীজ আলু বিক্রি করছেন।
বাক্স বীজ আলুর ডিলারদের মূল্য তালিকার সাথে বিক্রির মূল্য দ্বিগুন হওয়ায় জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা কৃষকরা এক ডিলার থেকে আরেক ডিলারের কাছে হন্য হয়ে ঘুরছেন, কিন্তু হল্যান্ডের বীজ আলু কিনতে পারছেন না। এতে বাধ্য হয়েই ডিলারদের হাকানো দামে কিনতে হচ্ছে বীজ আলু।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) সরেজমিনে জেলার অন্যতম পাইকারি বীজ আলু বিক্রির বাজার টঙ্গীবাড়ীতে গিয়ে দেখা যায়, এক প্রান্তিক কৃষক ৮বাক্স বীজ আলু নিয়ে রওনা হয়েছেন। বীজ আলুর ক্রয় মূল্য জিজ্ঞাসা করলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কৃষক জানান, প্রতি বাক্স বীজ আলু ২৬ হাজার টাকা দরে তিনি ক্রয় করেছেন, তবে বিক্রেতা তার রশিদে ১৩হাজার ৫০০ টাকা উল্ল্যেখ করেছেন।
ভুল দর রশিদে উল্ল্যেখের বিষয়ে কৃষক বলেন, আমি মূর্খ মানুষ লেখাপড়া করি নাই, বিক্রেতা রশিদে কতো লিখেছেন জানিনা তবে প্রতি বাক্স বীজ আলু ২৬ হাজার টাকা দরেই আমি কিনেছি। গত বছরের চেয়ে এ বছর সার, কীটনাশক এবং বীজ আলুর মূল্য অনেক বেশি, প্রসাশন যদি এই সিন্ডিকেট না ভাঙ্গতে পারে তাহলে এ বছর আলু চাষীদের আর্থিক ক্ষতির সম্মুক্ষিন হতে হবে।
এ সময় মেসার্স মাহিন এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার আলমগীর কবির বিডিসি ক্রাইম বার্তা’কে বলেন, ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা দরে হল্যান্ডের বাক্স বীজ আলু বিক্রি করছি, এ ছাড়াও যার কাছে যেমন পারছি বিক্রি করছি।বিক্রিত মালের রশিদে কম মূল্য লেখার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বিডিসি ক্রাইম বার্তা’কে বলেন, বীজ আলু ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক করা হয়েছে, তাদের কে বাড়তি মূল্যে বীজ আলু বিক্রি করতে আমাদের পক্ষ থেকে সম্পূর্ণ নিষেধ করা হয়েছে এবং প্রত্যেকটি বীজ আলু বাক্সের গায়ে মূল্য লিখে দিতে আদেশ দেওয়া হয়েছে। তারপরও যদি ডিলার প্রান্তিক কৃষকদের থেকে বাড়তি মূল্য আদায় করে, অতিদ্রুত আমরা উর্ধতন কর্মকর্তাদের অবগত করে ব্যবস্থ্যা গ্রহন করবো।
এ ব্যাপারে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা নির্বাহি অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান বিডিসি ক্রাইম বার্তা’কে জানান, বীজ আলুর ডিলারদের সাথে গত বৃহস্পতিবার আমাদের বৈঠক হয়েছে, তারা বলেছেন প্রতি হল্যান্ডের বীজ আলুর বাক্স তারা ১৫ হাজার টাকায় কৃষকদের কাছে বিক্রি করবেন। তারপরও যদি তারা বেশি মূল্যে বীজ আলু বিক্রি করে থাকেন, সেক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।