• মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৫২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:

দক্ষিণ সুরমার অপরাধ সম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া বিএনপি নেতা কুহিনুর

Reporter Name / ২৩ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কুহিনুর আহমদ সিলেট জেলা বিএনপির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর একমাত্র বিশ্বস্ত লোক হিসেবে এলাকা জুড়ে পরিচিত তিনি। গত ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা অপরাধ সম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বিএনপি নেতা কুহিনুর আহমদ। চিনি, গরু ও মাদক চোরাচালান থেকে শুরু করে দক্ষিণ সুরমার সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের নিয়ন্ত্রণ,জুয়ার বোর্ড এমনকি হোটেলের অবৈধ ব্যবসা পর্যন্ত কোথায় নেই তিনি? পুরো উপজেলাজুড়ে কুহিনুর এখন এক আতঙ্কের নাম।

স্থানীয় সূত্রমতে,বিগত ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সারা দেশের ন্যায় সিলেটের আওয়ামী লীগের সকল জনপ্রতিনিধি ও দলীয় নেতাকর্মী’রা গা ঢাকা দেন। এর পর একে একে আওয়ামীলীগের নিয়ন্ত্রণাধীন সকল সিন্ডিকেট দখলে মরিয়া হয়ে উঠেন বিএনপির কিছু নেতাকর্মীরা। সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টর্মিনালের সিন্ডিকেট এতদিন আওয়ামীলীগ নেতাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল।

সরকার পতনের একদিন পর এটির আংশিক নিয়ন্ত্রণ নেন দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা লোকমান আহমদ। এর একদিন পর ৭ আগষ্ট জামায়াত নেতা লোকমান আহমদ’কে জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর নাম ব্যবহার করে সরিয়ে টার্মিনালের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেন দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কুহিনুর আহমদ। কিন্তু বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা কিছুতেই কুহিনুর আহমদ’কে মানতে চাইছিলেন না। পরবর্তীতে ৮ আগষ্ট সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী’কে নিয়ে বাস মালিক সমিতির অফিসে সভা করে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করেন কুহিনুর আহমদ। এঘটনার পর একে একে শুরু হয় সকল সেক্টরে আধিপত্য বিস্তার।

অভিযোগ আছে,বর্তমানে চোরাই চিনির যেসকল চালান সীমান্ত থেকে সিলেট নগরীর দক্ষিণ সুরমা হয়ে বিভিন্ন জেলায় যায় সেখানে অঘোষিত চোকপোষ্ট বসিয়েছেন কুহিনুর আহমদের লোকজন। প্রতিটি চিনির ট্রাক থেকে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির তহবিলের নামে ২০০০-৩০০০ হাজার এবং গরুর ট্রাক থেকে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়। এদিকে, দক্ষিণ সুরমার সব থেকে বড় মাদকের হাট সিলেট রেলেওয়ে স্টেশন ও ক্বীন ব্রীজর দক্ষিণ প্রান্থেরও নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন কুহিরনুর আহমদ। এখানের মাদক ব্যবসার একটি দৈনিক সালামীও পৌঁছে যায় তার হাতে।

স্থানীয় সূত্রমতে, দক্ষিণ সুরমা এলাকায় ছোট বড় মিলিয়ে অন্তত এক ডজন জুয়ার বোর্ড রয়েছে। এবং অন্তত ৫ টি আবাসিক হোটেলে চলে জমজমাট দেহ ব্যবসা। এক সময় এসব কিছু আওয়ামী লীগের স্থানীয় জন-প্রতিনিধি ও নেতারা নিয়ন্ত্রণ করলেও এখন সবই নিয়ন্ত্রণ করছেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কুহিনুর আহমদ।’বিএনপির দলীয় সূত্র জানিয়েছে, সিলেট জেলা বিএনপি ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতা কুহিনুরের এসব অপকর্মের বিষয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী’কে বার বার অবগত করলেও তিরি রহস্য জনক কারনে কোন পদক্ষেপ নেন নি। উল্টো যারাই বিষয় টি নিয়ে কথা বলেছেন তাদেরকে দলে কোনঠাসা করে রাখা হয়েছে।

দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় সিলেট সিটি কর্পোরেশনর বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড রয়েছে। এসব ওয়ার্ডের বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দও কুহিনুরের এসব অপকর্মের কারনে বিব্রতবোধ করছেন। সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতির ‘ওয়ানম্যান আর্মি’ বলে পরিচিত কুহিনুরের বিরুদ্ধে কেউই ভয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না। তবে সিলেট বিএনপির একাধিক নীতিনির্ধারক নেতারা জানিয়েছেন,যেহেতু কুহিনুর জেলা সভাপতির অত্যান্ত ঘনিষ্ঠজন,সেহেতু তার এসব অপকর্ম নিয়ে স্থানীয়ভাবে কথা বলে কোন লাভ হবে না। আমরা বিষয়টি নিয়ে অতিশীঘ্রই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা করব।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট জেলা বিএনপির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কুহিনুর আহমদ বিষয়টি অস্বীকার করেন। সার্বিক বিষয়ে জানতে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার দল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category