পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর দশমিনায় তেঁতুলিয়া নদীতে কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে পড়ে বরযাত্রীবাহী ট্রলারডুবিতে নিখোঁজের ৪৫ ঘন্টার মধ্যে বরসহ অবশিষ্ট নিখোঁজ ৪ জনের ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হলো।
রবিবার (৩০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে তেঁতুলিয়া নদীর বদনাতলী এলাকায় বর রাব্বি (২৫) ও তার মা সেলিনা বেগমের (৪৫) ভাসমান মরদেহ স্থানীয় জেলেরা দেখে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাদের মরদেহ উদ্ধার করেন। এরপর একই দিন সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে তেঁতুলিয়া নদীর পাতার চর এলাকায় মারুফা (৫) ও দুপুর পৌনে ২ টার দিকে খাদিজার (৮) ভাসমান মরদেহ দেখে জেলেরা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাদের মরদেহ উদ্ধার করে উপজেলার আউলিয়াপুর গ্রামে বরের বাড়িতে নিয়ে আসে।
এতে ট্রলারডুবির ঘটনায় নিখোজ বাকী চার জনের সবকটি মরদেহ উদ্ধার হলো।
নিহত বর রাব্বি ও তার মা সেলিনা বেগম উপজেলার রণগোপালদী ইউনিয়নের আউলিয়াপুর গ্রামের মনির হাওলাদারের পুত্র ও স্ত্রী। নিহত মারুফা উপজেলার চরবোরহান ইউনিয়নের চর উত্তর শাহজালাল গ্রামের বেল্লাল মুন্সীর মেয়ে ও নিহত খাদিজা রণগোপালদী ইউনিয়নের উত্তর রণগোপালদী গ্রামের দলিল উদ্দিনের মেয়ে।
এর আগে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে উপজেলার দ্বীপাঞ্চল চরবোরহান ইউনিয়নের চর উত্তর শাহজালাল গ্রাম থেকে আউলিয়াপুর লঞ্চঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা নববধূসহ ১৬ জন লোক নিয়ে ওই বরযাত্রীবাহী ট্রলার তেঁতুলিয়া নদীর মাঝে কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে পড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এ সময় কনেসহ অন্যান্য স্বজনরা জীবিত উদ্ধার হলেও বর ও বরের মা সহ ৫ জন নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের কয়েক ঘন্টা পরই লিপি বেগম (৩০) নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধারকারীরা উদ্ধারে সক্ষম হলেও নিখোঁজ থেকে যায় বর রাব্বিসহ ৪ জন।
নিহত লিপি বেগম উপজেলার রণগোপালদী ইউনিয়নের উত্তর রণগোপালদী গ্রামের দলিল উদ্দিনের স্ত্রী। রবিবার বিকাল ৪ টায় স্থানীয় সংসদ সদস্য এসএম শাহজাদা ও উপজেলা প্রশাসনের উপস্থিতিতে উদ্ধার ৪ জনের জানাযা সম্পন্ন হয়।
দশমিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাফিসা নাজ নীরা বলেন এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে এ ব্যাপারে মাইকিংসহ বিভিন্ন ধরনের প্রচার প্রচারনা চালানো হবে। নিহতদের লাশ অতি স্বত্ত্বর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
পটুয়াখালী-৩ (দশমিনা-গলাচিপা) আসনের সংসদ সদস্য এসএম শাহজাদা বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের দাফন কাফন বাবদ প্রত্যেকের স্বজনদের কাছে জন প্রতি ২০ হাজার টাকা করে অনুদান প্রদান করা হয়েছে। আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকেও নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করেছি।