শরীয়তপুর প্রতিনিধি : বন্ধুকে অপহরণ করে মুক্তিপন আদায় তিন বন্ধু মিলে আরেক বন্ধুকে ডেকে নেয় বাড়ি থেকে। অতঃপর নির্জন স্থানে বেধে রেখে রাতভর চলে নির্যাতন। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জিম্মি করে এবং হত্যার ভয় দেখিয়ে পরিবারের কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা মুক্তিপন আদায় করা হয়। গত রোববার মধ্যরাতে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কানারগাঁও এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অপহরণের শিকার যুবকের নাম ফাহাদ মাদবর (২৪) সে কানারগাও এলাকার মোখলেছ মাদবরের ছেলে। এঘটনায় ফাহাদ মাদবরের স্ত্রী রাশিদা আক্তার বাদী হয়ে নড়িয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে এঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করেনি পুলিশ।
জানাযায়, রোববার মধ্য রাতে ভুক্তভোগী ফাহাদ মাদবর কে বাড়ি থেকে ডেকে নেয় তার তিন বন্ধু কানারগাও এলাকার আবুল ছৈয়াল এর ছেলে মোস্তফা ছৈয়াল (২৪), আবুল মৃধার ছেলে কাউসার মৃধা (২৫) এবং খোকন হাওলাদার এর ছেলে রিয়াদ হাওলাদার (২১)। পরে সেখান থেকে তাকে হাত- মুখ বেধে পার্শ্ববর্তী বাংলাবাজার এলাকায় কীর্তিনাশা নদীর তীরে একটি নির্জন বাগানে নিয়ে বেধে রাখে। সেখানে তাকে প্রচন্ড মারধর করা হয় এবং ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখা হয়।
এসময় মোস্তফা ছৈয়াল এর ব্যাবহৃত মুঠোফোন থেকে ভুক্তভোগীর পরিবারের কাছে ফোন করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করা হয়। মুক্তিপন না দিলে তাকে হত্যা করে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। পরে ভোর রাত ৪ টার দিকে অপহরণ কারীদের নির্ধারিত স্থানে ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে বাকী টাকা সকালে দেয়ার কথা বলেলে তারা ফাহাদকে তার বাড়ীর সামনের রাস্তায় এনে ফেলে দিয়ে যায়।
পরিবারের লোকজন তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরদিন বাকী টাকার জন্য ফাহাদের পরিবারকে কল করে বিভিন্ন ভাবে প্রান নাশের হুমকি দিতে থাকে তারা। পরে নড়িয়া থানায় ভুক্তভোগীর স্ত্রী বাদী হয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী ফাহাদ মাদবর বলেন, ‘কাউসার, মোস্তফা ও রিয়াদ আমাকে বাড়ি থেকে ডেকে নেয়। রাস্তায় গেলেই তারা আমার হাত ও মুখ বেধে ফেলে। পরে একটি নির্জন বাগানে নিয়ে আমাকে প্রচন্ড মারধর করে এবং আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করে।
এঘটনা কেউকে জানালে বা কোন চালাকি করলে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় তারা। আমার স্ত্রী তাদের ৩৫ হাজার টাকা দিলে, বাকী টাকা সকালে দেয়ার শর্তে মুক্তি দেয় আমাকে। আমাকে অনেক মারধর করেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।’
ঘটনায় অভিযুক্ত কাউসার ও মোস্তফার বাড়ীতে গিয়ে তাদের পাওয়া যায়নি। তাদের পরিবারের লোক জন জানায় দুদিন ধরে তারা বাড়িতে আসে না এবং তাদের ব্যবহৃত মোবাইলও বন্ধ। অপর দিকে অভিযুক্ত রিয়াদের বাবা খোকন হাওলাদার বলেন, ‘আমার ছেলে না বুঝে ভুল করে ফেলেছে।’
এ ব্যাপারে নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম উদ্দিন বিডিসি ক্রাইম বার্তাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’