বিডিসি ক্রাইম বার্তা ডেস্কঃ মাদ্রাসায় ছুটির পর প্রতিদিনের মতো বাড়ির কাছেই পদ্মা নদীতে গোসল করতে যায় আরাফাত ও আব্দুর রহিম সহ ছয় সাত জন। কে জানতো তাদের এই দল বাঁধা গোসল কাল হয়ে দাঁড়াবে!! শোকের বন্যায় ভাসিয়ে দিবে পরিবারসহ এলাকাবাসীর সবাইকে, নিঃস্তব্ধ করে দিবে গ্রামবাসীকে। নিত্য দিনের মতোই তারা আনন্দের সাথে গোসল করতে ঝাঁক বেঁধে ঝাপ দেয় চিরচেনা পদ্মা নদীর বুকে।
পাশেই নোঙর করা বিশাল মাটি টানার ভাল্ক হেড চলে যাওয়ার সময় সজোরে ধাক্কা দেয় তাদেরকে। কিছু বুঝে উঠার আগেই পানির চাপে গভীর জলে ডুবে যায় আরাফাত ও রহিম সহ আরো কয়েক জন। তারা কেউই সাতার জানতো না বলে জানা যায়।পরে স্থানীয়রা দুই তিন জনকে জীবিত উদ্ধার করতে পারলেও আরাফাত ও রহিমকে খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয়।পরে খবর পেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই শিবচর উপজেলার ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যেই আরাফাত নামের ছেলেটির লাশ উদ্ধার করে।
নিহত আরাফাত চরচান্দ্রা কাশেম মুন্সী কান্দির বাসিন্দা আব্দুর রহিম হাওলাদারের ছেলে। বয়স দশ বছর। স্থানীয় একটা ক্যাডেট মাদ্রাসার ছাত্র। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি টিম কয়েক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়েও আরাফাতের বন্ধু রহিমের লাশ উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়। নিখোঁজ রহিম একেই গ্রামের আবুল মাদবরের ছেলে,বয়স ৯ বছর। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে উদ্ধার কাজ। কিন্তু স্থানীয় লোক ও ডুবুরিদের আপ্রাণ চেষ্টা সত্ত্বেও রহিমের লাশ পাওয়া সম্ভব হয়নি।
এই উদ্ধার কাজে উপস্থিত ছিলেন কাঁঠাল বাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ সোহেল বেপারি , উপস্থিত ছিলেন শিবচর উপজেলার নৌ-পুলিশের কর্মকর্তা সহ আরো অনেকে। এরপর মাগরিবের নামাজ শেষে আরাফাতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য থানায় নেওয়া হয়। এই ঘটনায় পুরো গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শত শত মানুষ নদীর তীরে ছুটে এসেছে নিহতকে এক নজর দেখার জন্য। এমন ফুটফুটে দুইটি তাজা প্রাণের মৃত্যু কেউ এই যেন মেনে নিতে পারছে না। আত্বীয় স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে পদ্মার তীর।#