নিজস্ব প্রতিবেদক: বিজিবি’কে সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সোমবার সকালে রাজধানীর পিলখানায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)- এর সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে বিজিবি দিবস ২০২৪ উপলক্ষে বিজিবি পদক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, সীমান্ত রক্ষাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বেসামরিক প্রশাসন’কে সহায়তা প্রদান, বিভিন্ন দুর্ঘটনা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলা সহ দেশ গঠন মূলক বিভিন্ন কাজে বিজিবির ভূমিকা ও পেশাদারিত্ব প্রশংসার দাবিদার। বাংলাদেশের মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে ‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ হিসেবে এ বাহিনী’কে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সুচারুরূপে পালন করতে হবে।
মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজিবির (সাবেক বিডিআর) সাহসী ও গৌরবময় ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এ বাহিনীর প্রায় ১২ হাজার বাঙালি সদস্য মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে ২ জন বীরশ্রেষ্ঠ, ৮ জন বীর উত্তম, ৩২ জন বীর বিক্রম এবং ৭৭ জন বীর প্রতীক সহ ৮১৭ জন সদস্য মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন। তিনি এ সময় মহান মুক্তিযুদ্ধে তাদের গভীর আত্মত্যাগের কথা অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, দেশমাতৃকার সেবায় নিয়োজিত বিজিবি সদস্যদের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার তাদের দেশপ্রেম, সততা এবং অটুট মনোবল। সীমান্তের প্রতিটি ইঞ্চি রক্ষা ও চোরাচালান বন্ধ করতে বিজিবি সদস্যদের হতে হবে দৃঢ় ও নির্ভীক। একই ভাবে অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি মোকাবেলায় হতে হবে দায়িত্বশীল ও জনবান্ধব। তিনি আরো বলেন, উন্নত সুশৃঙ্খল বাহিনীর সফলতা নির্ভর করে সত্যবাদিতা ও প্রতিটি স্তরে ‘চেইন অব কমান্ড’ প্রতিষ্ঠার উপর। উপদেষ্টা এসময় ‘চেইন অব কমান্ড’ সুদৃঢ়ভাবে অনুসরণ করে সততার সঙ্গে বিজিবি সদস্যদের দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) ড. নাসিম আহমেদ।
অনুষ্ঠানে বিগত বছরে কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ উপদেষ্টা ৩২ জন বিজিবি সদস্যকে পদক পরিয়ে দেন। উল্লেখ্য, এ বছর ১২ জনকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ পদক (বিজিবিএম), ২৪ জনকে রাষ্ট্রপতি বর্ডার গার্ড পদক (পিবিজিএম), ১২ জনকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ পদক-সেবা (বিজিবিএমএস) এবং ২৪ জনকে রাষ্ট্রপতি বর্ডার গার্ড পদক- সেবা (পিবিজিএমএস)- সহ ৭২ জন বিজিবি সদস্যকে বিভিন্ন পদকে ভূষিত করা হয়। পরে উপদেষ্টা বিজিবি আয়োজিত খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারবর্গের সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।