মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি : মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভার মেয়র হাজ্বী আব্দুস ছালামের বাসভবনে হামলা চালিয়ে ইট পাটকেল ছুঁড়েছে একদল দুস্কৃতিকারি। এ হামলায় আহত হয়েছে মো: সুজন (২৫) ও মো: ফারুক (২৮) নামে দুই ব্যক্তি। গত শনিবার (২৯ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মিরকাদিম পৌরসভার রামগোপালপুর এলাকায় মেয়র হাজ্বী আব্দুস ছালামের বাস ভবনে এ হামলা ও ইট পাটকেল ছুঁড়ে জালানার কাঁচ ভেঙ্গে ফেলা হয়।
জানা গেছে, পৌরসভার মেয়র হাজ্বী আব্দুস ছালামের সাথে স্থানীয় সমাজকর্মী মাহবুব রহমান কাজলের গত ২৩ জুলাই ময়লা আবর্জনা ফেলার ডাস্টবিন নিমার্ণ করাকে কেন্দ্র বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ শনিবার (২৯ জুলাই) বিকেল ৪ টার দিকে রিকাবিবাজার এলাকার নূরপুর সড়কে সমাজকর্মী মাহবুব রহমান কাজল মেয়র হাজ্বী আব্দুস ছালামের অপসারন ও মারধরের বিচার দাবীতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা কর্মসূচি পালন করেন।
এ সময় বক্তব্য রাখেন মুন্সীগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল উদ্দিন আহমেদ, মুন্সীগঞ্জ থিয়েটার সংগঠনের সভাপতি হুমায়ন ফরিদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি তাইফুর রহমান শান্ত, সমাজকর্মী মাহবুব রহমান কাজল, তার স্ত্রী আয়শা কাজল, ছোট বোন রুমানা রহমান, খুকু ও মেয়ে রোকসানা। এদিকে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা শেষে সমাজকর্মী মাহবুব রহমান কাজলের লোকজন।
একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রামগোপালপুর এলাকা প্রদক্ষিণ করে।ওই সময় মিছিলকারীরা পৌরসভার মেয়র হাজ্বী আব্দুস ছালামের বাসভবনের ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে, তখন পুলিশ বাঁধা দেয়। ওই সময় মিছিলকারীরা মেয়র হাজ্বী আব্দুস ছালামের বাসভবনের ইট পাটকেল ছুঁড়ে জালানার কাঁচ ভেঙ্গে ফেলে।
এ বিষয়ে মিরকাদিম পৌরসভার মেয়র হাজ্বী আব্দুস ছালাম বলেন, মাহবুব রহমান কাজল একজন সন্ত্রাসী। সে পরিকল্পিত ভাবে মিরকাদিম পৌরসভার উন্নয়ন কাজের অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আমি তার প্রতিবাদ করলে ওই সন্ত্রাসী কাজল আমার উপর ক্ষুব্দ হয়,আজ মানববন্ধন করে। পরে মাহবুব রহমান কাজল পরিকল্পিত ভাবে তার লোকজন নিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে আমার বাস ভবনে হামলা চালায় ও ইট পাটকেল ছুঁড়ে, জালানার কাচঁ ভাংচুর করে।
সন্ত্রাসীদের আচরণে আমি ও আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। সেচ্ছা সেবক লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক তাইফুর রহমান শান্ত বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবেই প্রতিবাদ মিছিল করছিলাম। মিছিলের মাঝখানে ঢুকে কে বা কারা মেয়েরের বাড়িতে ঢিল মেরেছে তা আমরা জানি না। তবে এখানে উত্তেজনা তৈরী হয়েছিল। আমরা সকলকে শান্ত করে মিছিল নিয়ে চলে যাই।
মামলা এজাহারে উল্লেখ করা সূত্রে জানা যায়, বেআইনী জনতাবদ্ধে হত্যার পথরোধ করে উদ্দেশ্যে মারপিট করত: সাধারণ ও গুরুতর জখম করাসহ চুরি, হুমকী, ও হুকুম প্রদানের মানহীন ভয়ভীতি অপরাধে, ১৪৩, ৩৪১, ৩২৩, ৩০৭, ৩৭৯, ৪২৭, ৫০৬, ৫০০ ধারায় দায়েরকৃত এই মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে ফ্রান্স প্রবাসী মাহবুব রহমান কাজল (৪৫)।
এছাড়াও আসামী হয়েছে- ২/ তাইফুর রহমান শান্ত (৪০) পিতাঃ মৃত- খলিল দক্ষিন রামগোপাল পুর, ৩/ কামাল (৫৫) পিতাঃ মৃত বাদশা দক্ষিন রামগোপাল পুর ৪/ মামুন (৩৫) পিতাঃ কাশেম মিয়া মিরাপাড়া গোলাপবাগ, ৫/ সাগর (৩৬) পিতাঃ সেলিম মিয়া টেঙ্গগরের, ৬/ সম্পদ (৩০) পিতাঃ সাধু টেঙ্গরের, ৭/ নাদিম (২৬) পিতাঃ দুলাল গোলাপবাগ, ৮/ তুষার (৩০) পিতাঃ সাধু দক্ষিন কালিন্দী পাড়া ৯/ রুহুল আমিন (৩০) পিতাঃ আবুল মিয়া মিরাপাড়া, ১০/ রুমান (৩০) পিতাঃ আলাউদ্দিন শেখ মিরাপাড়া, ১১/ হুমায়ুন মুরুব্বী (৪০) পিতাঃ আলাউদ্দিন শেখ, ১২/ ইমরান (৩০) পিতাঃ মতিন মিয়া মিরাপাড়া এলাকায় আরো অজ্ঞাতনামা ১০,১৫ জনের বিরুদ্ধে আসামী করা হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আব্দুস সালাম আরো সাংবাদিকদের বলেন, তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছে। ঘটনার দিন আমাকে নানা বাজে কথা বলে তারা উত্তেজিত করে। আমি তখন তাকে গালাগাল করেছিলাম। আমি অসুস্থ মানুষ, তাকে মারধর করার প্রশ্নই ওঠে না।’