• সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:১২ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
৬ দিনের রিমান্ডে সাবেক প্রতিমন্ত্রী এনাম ঢাবির অধীনে থাকছে না ৭ কলেজ, নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ পিন্টু হত্যা মামলার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার টেবিলের নিচে টাকা দেওয়ার চেয়ে বাড়তি ভ্যাট ভালো: অর্থ উপদেষ্টা রায়পুরায় দুই ইউপি চেয়ারম্যানের সমর্থকদের টেঁটাযুদ্ধ, নিহত ১ পুতুলকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে, জানাল দুদক পুলিশের কাজের উদ্যম বাড়াতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নেয়া হয়েছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ‘বিএনপির সাথে ছাত্রদের দূরত্ব আওয়ামী লীগকে উৎসাহিত করবে’ পরীমণির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি র‍্যাবের সাবেক ডিজি হারুনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

ময়মনসিংহে আলোচিত ৩২ হত্যাকাণ্ড, নেপথ্যের নায়ক আমিনুল হক শামীম

সুমন সাহা, ময়মনসিংহ : / ৪৬ পাঠক ভিউ
আপডেট সময় : শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০২৫

সুমন সাহা, ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহ শহরে ২০১৬ সাল থেকে একের পর এক খুনের ঘটনা বেড়েই চলছিল। এক সময়ের শান্তির ময়মনসিংহ শহর অনেকটা অশান্তির শহরে পরিণত হয়ে উঠেছিল। নায়ক একজনেই। তিনি হলেন বড় ভাই নামে খ্যাত সিআইপি আমিনুল হক শামীম। তার নির্দেশেই খুন হয় একেরপর এক। সামান্য ঘটনায় যে কাউকে খুন করা ময়মনসিংহ নগরীতে সাধারণ ব্যাপার ছিল। রাজনীতির প্রতিহিংসায় খুনের ঘটনা ঘটতো শহরে। এমনকি হাসি-ঠাট্টা করেও খুন করা হতো। আসামি করেন প্রতিপক্ষ নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে। নানা ঘটনায় অতিক্রম করেছে-২০১৮ সন। এ বছরই বহু কাঙ্ক্ষিত ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের ঘোষণার বাস্তবায়ন হয়। এটা ছিল নগরবাসীর প্রাণের দাবি।২০১৮ সাল জুড়েই আলোচনায় ছিল ময়মনসিংহের ছাত্রলীগ নেতা শাওন ও যুবলীগ নেতা আজাদ শেখ হত্যাকাণ্ড। শহরের বাইরেও ত্রিশাল ও গৌরীপুরে রয়েছে আরও খুনের ঘটনা। আর এসব খুনের শিকার শুধু সাধারণ মানুষই নয়; রাজনৈতিক ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি খুনের শিকার হয়েছেন। ২০১৬ সালের জানুয়ারী থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৮ বছরে ময়মনসিংহ শহরের বিভিন্নস্থানে ১৮৬টি খুন হয়। এর মধ্যে ৩২টির হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ছিল আলোচিত।

আর এসব খুনের বেশির ভাগই আধিপত্য বিস্তার ও রাজনীতি প্রতিহিংসাকে কেন্দ্র করে। বিশেষ করে ২০১৮ সালের শুরুর দিকে হঠাৎ ময়মনসিংহ শহর ও জেলাজুড়ে অপরাধের মাত্রা বেড়ে যায়। চার দিনের ব্যবধানে তিনটি হত্যাকাণ্ড হয়। খুন হওয়ার আগেই কারা জড়িত দুটি মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ হয়। এতই প্রকাশ হয়ে যায় আসল রহস্য। আজাদ হত্যার ঘটনায় সাবেক ধর্মমন্ত্রী পুত্র মোহিতুর রহমান শান্ত’র ছবি পত্রিকায় প্রথম পাতায় ছাপা হয়। তখনই ময়মনসিংহবাসী বুজতে পারে খুনের সাথে কারা জড়িত? মামলা হওয়ার পর মিষ্টি বিতরন করা হয়।

ময়মনসিংহ জেলা জাতীয় পার্টির সহ সভাপতি মনির চৌধুরী জানান, ২০১৮ সালে ৩২টি আলোচিত হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত ময়মনসিংহ জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি আমিনুল হক শামীম ও তার ভাই সাবেক মেয়র ইকরামুল হক টিটু। তাদের দখলে ছিল গোটা ময়মনসিংহ। সিটি করপোরেশনের ১৫ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন। আমিনুল হক শামীম ময়মনসিংহ নগরীর সব অপকর্মের হোতা। মুনির চৌধুরী আরও জানান, আমিনুল হক শামীম ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স কে নিজের দখলে রেখে তার অনুসারীদের দিয়ে চালাতেন।

ময়মনসিংহ জেলার অনেক বড় বড় ব্যবসায়ী আছেন যারা শামীমের অনুসারী না তাদেরকে সে চেম্বারের মেম্বার হতে দিতেন না।জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় থাকাকালে তখনও সে জাতীয় পার্টির নেতা লেবাস ধরে ময়মনসিংহে চাঁদাবাজি করতো। এছাড়াও শামীমের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা শাওন হত্যার সাথে সরাসরি জড়িত। আমিনুল হক শামীম ও ইকরামুল হক টিটু যেন নগরীর আতংক।

একজন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ৩২ টি খুনের সাথে কোন না কোন ভাবে এক প্রভাবশালী ব্যাক্তি জড়িত। তিনি বলেন আমি একটি আলোচিত খুনের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলাম। আমার ওপর প্রচুর মানসিক চাপ প্রয়োগ করেন জেলা আ’লীগের প্রভাবশালী নেতা আমিনুল হক শামীম । তিনি সাবেক ডিআইজি নিবাস চন্দ্র মাঝি স্যারের কাছে আমার নামে বিচার দেন। তারপর আমাকে ডেকে নিয়ে অশালিন ভাষায় গালাগালি করেন। এরপর কিছুদিন পর চট্রগ্রামে বদলি। নগরীতে ৩২টি আলোচিত হত্যা কাণ্ডের সাথে কারা জড়িত তাদের সর্ম্পকে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে বলে জানান একটি গোয়েন্দার সংস্থার একজন কর্মকর্তা। জাতীয় পার্টির এক প্রভাবশালী নেতা জানান, ২০১৮ সালে কোনো অবস্থাতেই ময়মনসিংহ অপরাধ নিয়ন্ত্রণে নিতে পারতো না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কারন একজনই “বড় ভাই” যা বলতের তাই হতো। রাত হলেই থানার ওসি সাহেব “বড় ভাই”নামে খ্যাত তার বাসায় বসে থাকতেন। বড় ভাই যাকে বলতেন তাকে ধরে আনতেন থানা হাজতে। একসময়ের শান্তির ময়মনসিংহ শহর অনেকটা অশান্তির শহরে পরিণত হয়ে উঠেছিল। নায়ক একজনেই। একজনের নির্দেশেই খুন হয় একেরপর এক। কিন্তু আসামি হয় সাধারন নেতাকর্মীরা। যেমন আজাদ হত্যার ঘটনার জড়িত আসামিরাই কি আসল খুনি? নাকি নেপথ্যে আরও কেউ ছিল। আকুয়া এলাকায় হতো খুনের বদলে খুন। আজ এক জনকে হত্যা করলে কাল অন্যজনকে হত্যা করা হয়। একসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে হত্যার শিকার আশফাক আল রাফি শাওন ছিলেন ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি।

আর সাংগঠনিক সম্পাদক সঞ্জয় দত্ত ও তাঁর অনুসারীরা হয় আসামি। এই অভিযোগে শাওনের মৃত্যুর ১৩ দিন পর ময়মনসিংহের এক নম্বর আমলী আদালত ও সাবেক জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মাসুদুল হকের আদালতে হত্যা মামলার আর্জি জমা দিয়েছেন শাওনের বাবা এম এ কুদ্দুস। এর আগেই ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার পুলিশ শাওন হত্যার ঘটনায় মামলা করায় তবে আদালত ওই মামলার তদন্তের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এম এ কুদ্দুসের করা মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখার আদেশ দেন। আজও আশফাক আল রাফি শাওন হত্যার ঘটনা নিয়ে রহস্য উদঘাটন হয়নি। শাওনের বাবা এম এ কুদ্দুসের মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সঞ্জয় দত্ত (২৬), তাঁর অনুসারী এস এম আরিফুল হক (২৭), আমিনুল ইসলাম হিমেল (২৭) ও দ্বীপ্ত দত্ত (২৩)। পুলিশের করা মামলায় সঞ্জয়, আরিফ ও হিমেলের নাম থাকলেও এই মামলায় নতুন করে যোগ হলো দ্বীপ্ত দত্তের নাম। তবে যে বিরোধে শাওন খুন হয় এবং যার নির্দেশে খুন করা হয় সেই রহস্যময় ব্যাক্তিকে কোতোয়ালী মডেল থানার সাবেক এক ওসি আসামি করেনি। বিনিময়ে আশফাক আল রাফি শাওন হত্যার পর একরাতে ১০ কোটি টাকা লেনদেন হয়। টাকার বিনিময়ে রহস্যময় ব্যাক্তিকে শহর থেকে পুলিশের গাড়ী দিয়েই পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়।

এটি শহরের সকলেই জানলেও ভয়ে কেউ মুখ খুলেনি। মুখ খুললেই হতো মামলা। শাওনের বাবা এম এ কুদ্দুস ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি আদালত প্রাঙ্গণে কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আমি শুধু আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি দাবি জানাব, আমার সন্তানের, একমাত্র পুত্র সন্তানের হত্যা,যারা গুলি করে হত্যা করেছে তার বিচার চাই। আশফাক আল রাফী শাওনকে পরিকল্পিতভাবেই হত্যা করা হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছিল পুলিশ। তবে শাওনের পরিবার এ হত্যাকান্ডের বিচারের জন্য আইনের দ্বারস্থ না হওয়ায় খুনিরা পার পেয়ে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হয়েছিল। ধামাচাপা’ পড়তে যাওয়া এ হত্যাকান্ডের বিচার দাবিতে সোচ্চার হয়েছিলেন সাবেক এমপি মোহিতুর রহমান শান্তসহ মহানগর আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ নেতাকর্মী কিন্তু জাতীয় পার্টির দুই নেতা জেলা আ’লীগের প্রভাবশালী নেতার কাছ থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দামাচাপা দেন। জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি দিনগত মধ্যরাতে নগরীর মৃত্যুঞ্জয় স্কুল রোড এলাকায় রহস্যজনকভাবে গুলিবিদ্ধ হন ছাত্রলীগ নেতা শাওন। পরে তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজধানীর ইবনেসিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১৮ সালের ০৮ মার্চ দুপুরে মারা যান শাওন। সূত্র মতে, এ ঘটনার প্রথম দিকে শাওন নিজের গুলিতেই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এমন খবর ছড়িয়ে দেন তার পিতার পছন্দের ব্যাক্তিরাই। পরবর্তীতে রহস্যজট খুলতে থাকে।

ঘটনার পর পরই পুলিশ বেশ কিছু বিষয় সামনে নিয়ে শাওনের তিন ঘনিষ্ঠ বন্ধু জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সঞ্জয় দত্ত, ছাত্রলীগ নেতা পিচ্চি আরিফ ও হিমেলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। কিন্তু শাওনের পরিবার থেকে কোন মামলা বা অভিযোগ না করায় তাদেরকে ৫৪ ধারায় আদালতে পাঠানো হয়। নগরীর আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে শাওনের প্রথম জানাজায় নিজের বক্তৃতায় বাবা, জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম.এ.কুদ্দুস বলেন, ‘হে আল্লাহ যারা শাওনের এ অবস্থা করেছে তাদেরকে তুমি জনগনের সম্মুখে ধ্বংস করে দিও। ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্তসহ বেশিরভাগ নেতাই এ হত্যাকান্ডের বিচার দাবি করেন। তার পরই শুরু হয় যুদ্ধ। এ বিষয়ে শাওনের বাবা জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম.এ.কুদ্দুস বলেন, আমি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর কাছে বিচার চাই না। আমি আল্লাহ’র কাছে বিচার চেয়েছি। এরহস্য আজও ঘুরপাক খাচ্ছে। গভীর রাতে সিসি ক্যামেরা ফুটেজ উধাও হয়ে যায়। অপরাধ দমন ও নিয়ন্ত্রণে ময়মনসিংহ-ঢাকা মহাসড়কের ৬৫ কিলোমিটার এলাকা সিসি ক্যামেরা নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হলেও ময়মনসিংহ মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়নি। এজন্য বাতির নিচে অন্ধকার। ফলে আলোচিত শাওন হত্যাকান্ডের কোন ফুটেজ পুলিশের হাতে ছিল না। অথচ এখানে সিসি ক্যামেরা থাকলে শাওন হত্যাকান্ডের খুনিদের সহজেই সনাক্ত করা সম্ভব হতো।

কিন্তু আসল খুনি ১০ কোটি টাকার বিনিময়ে রক্ষা পেয়ে যায়। সন্ত্রাসী আজাদ শেখ জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি সিআইপি আমিনুল হক শামীম ও তার ভাই সাবেক মেয়র ইকরামুল হক টিটু’র আস্তাভাজন ছিল। তবে আজাদ শেখের অপকর্মের পাহাড় ছিল বহু। বিএনপি-জামাত নেতারা জানিয়েছেন, ২০১৬ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত একের পর এক খুন হয় ময়মনসিংহের এক প্রভাবশালী বড় ভাইয়ের নির্দেশেই। নগরীর বাসিন্দা সাবেক যুবলীগ নেতা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘খুন-খারাবির কারণে ময়মনসিংহ নগরী গত ৮ বছর অসুস্থ নগরীতে পরিণত হয়েছিল। এর প্রভাব আমাদের মধ্যে যেমন পড়ছে, ঠিক পরবর্তী প্রজন্মের ওপরও পড়বে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গডফাদাররা ক্ষমতাধর হওয়ায় পুলিশ মূল ঘাতকদের ধরতে পারছে না। ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার দুই সাবেক ওসি, এক এসপি ও সাবেক ডিআইজি নিবাস চন্দ্র মাঝি টাকার বিনিময়ে আলোচিত ৩২ খুনের নির্দেশদাতা ব্যাক্তিকে রেখে নিরহ ব্যাক্তিদের ফাঁসিয়ে দেন এবং তার বাসায় যাতায়াত করতেন ডিআইজি নিবাস চন্দ্র মাঝি। এদিকে আলোচিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সাথে জড়িত অধিকাংশ আসামি গ্রেফতার হয়নি। বেশির ভাগ হত্যা মামলার তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। ময়মনসিংহ শহরে খুনের ঘটনায় পিস্তল ও রিভলবারের ব্যবহার বেশি ছিল। শহরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে খুনের ঘটনা বেশি ঘটেছে। এ ছাড়াও রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব, চাঁদার টাকার ভাগ-বাটোয়ারা, জায়গা দখল ও বালুমহাল নিয়ে বেশিভাগ খুন হয়।

ময়মনসিংহে প্রকট, রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের পরতে পরতে প্রতিশোধ, রক্তারক্তি : শহরের একটি দরজি দোকানের সহকারী ছিলেন মো. সাজ্জাদ আলম ওরফে শেখ আজাদ। পাড়ার ছেলেদের সঙ্গে একসময় রাজনৈতিক সভাসমাবেশে যাওয়া শুরু করেন। এরপর ১৮ বছরের ব্যবধানে হয়ে ওঠেন ময়মনসিংহ শহরের রাজনীতির একজন ‘গুরুত্বপূর্ণ’ ব্যক্তি। ২০১৮ সালের গত ২ এপ্রিল তিনি কয়েক হাজার কর্মী নিয়ে শহরে মিছিল বের করে সাড়া ফেলে দেন। সাদা পাঞ্জাবি পরে তিনি ছিলেন মিছিলের সামনে। পেছনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর নামেও স্লোগান দিচ্ছিলেন কর্মীরা। সেদিন বিশাল কর্মী বাহিনী নিয়ে মিছিল করার প্রায় চার মাস পর ৩১ জুলাই দিনদুপুরে খুন হন শেখ আজাদ। প্রথমে তাঁর হাত ও পায়ে গুলি, তারপর গলা কেটে হত্যা করা হয়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে চিরে ফেলা হয় বুকের তিনটি স্থান। আজাদ ছিলেন যুবলীগের ময়মনসিংহ মহানগর শাখার আহ্বায়ক কমিটির একজন সদস্য। বয়স হয়েছিল ৩২। অষ্টম শ্রেণি শেষে পড়াশোনার পাট চুকিয়ে দেন।এরপর ধীরে ধীরে রাজনীতিতে সক্রিয় হন। আজাদের পরিবার বলছে, নিজের ‘সাম্রাজ্যের’ জন্য হুমকি মনে করে খুনিরা। এবিষয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শফিকুল ইসলাম জানান,গত ৮ বছরে ১৮৬টি হত্যাকাণ্ড হয়। কোন ঘটনার সাথে কারও জড়িত প্রমান পাওয়া গেলে গ্রেফতার করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিস্তারিত...