• শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ০৮:৫৬ পূর্বাহ্ন

র‍্যাবের অভিযানে ৩ টি কষ্টিপাথরে মূর্তি ও বিদেশি মদ সহ গ্রেফতার ৪

বনি আমিন (কেরানীগঞ্জ): / ৬০ পাঠক ভিউ
আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ২৭ মে, ২০২৫

বনি আমিন (কেরানীগঞ্জ): রাজধানীর বেইলি রোড এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে ০৩ টি কষ্টিপাথরের মূর্তিসহ বিপুল পরিমাণ বিদেশী মদ উদ্ধার সহ ০৪ জনকে আটক করেছে র‍্যাব-১০। এলিট ফোর্স হিসেবে র‌্যাব আত্মপ্রকাশের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই আইনের শাসন সমুন্নত রেখে দেশের সকল নাগরিকের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে অপরাধ চিহ্নিতকরণ, প্রতিরোধ, শান্তি ও জনশৃংখলা রক্ষায় কাজ করে আসছে।

গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-১০ জানতে পারে যে, কতিপয় চোরাকারবারী বেশ কিছুদিন যাবৎ দেশের বিভিন্ন এলাকা হতে কস্টিপাথর ও বিদেশী মদসহ বড় বড় চালান নিয়ে এসে তাদের সুবিধা জনক স্থানে মজুদ করে রেখেছে। এ বিষয়টি জানতে পেরে র‌্যাব-১০ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।

এরই ধারাবাহিকতায় অদ্য ২৭ মে, ২০২৫ তারিখ বিকাল অনুমান ৩ টা:১০ মিনিটের সমঢ উক্ত আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে /রাজধানী ঢাকার বেইলি রোডস্থ বেইলি হাইটস এর চতুর্থ তলার একটি ফ্ল্যাটে/ অভিযান পরিচালনা করে/ আনুমানিক ৩৪,০০,০০,০০০/- (চৌত্রিশ কোটি) টাকা মূল্যমানের ০৩ টি কষ্টিপাথরের মূর্তি ও আনুমানিক ৪০,০০,০০০/- (চল্লিশ লক্ষ) টাকা মূল্যমানের ১১০ (একশত দশ) বোতল বিদেশী ব্র্যান্ডের মদসহ* ব্যবসায়ী চক্রকে গ্রেফতার করে।

জিজ্ঞাসাবাদে তাদের নাম ১। মোহাম্মদ জাকির হোসেন (৬৫), পিতা:- শাহারুজ্জামান, গ্রাম:- জয়নগর, থানা:- দৌলতখান, জেলা:- ভোলা, ২। আহমদ মোস্তফা (৪৪), পিতা:- নজরুল ইসলাম, থানা:- রংপুর সদর, জেলা:- রংপুর, ৩। মোঃ আনারুল হক (৪৮), পিতা:- আব্দুল আজিজ, গ্রাম:- চট্টি, থানা:- ঈশ্বরগঞ্জ, জেলা:- ময়মনসিংহ, ও ৪। মোঃ হাবিবুর রহমান (৪২), পিতা:- মোঃ রহিম, গ্রাম:- কমলাপুর, থানা:- কালকিনি, জেলা:- মাদারীপুর বলে জানা যায়।

উদ্ধারকৃত ০৩ টি কষ্টিপাথরের মূর্তি গুলির মধ্যে একটির ওজন ৮৮.৯৫০ কেজি ও উচ্চতায় ৪২.৫ ইঞ্চি এবং অন্যটির ওজন ১৯.৬৫০ কেজি ও উচ্চতায় ২৬.৫ ইঞ্চি। প্রত্যক্ষদর্শীদের ধারণা মতে কষ্টি পাথরের মূর্তি দুইটি বিষ্ণুদেবের বলে জানা যায়। উদ্ধারকৃত অপর একটি মূর্তির ওজন ৯২.৬৯০ কেজি ও উচ্চতায় ২২.৫ ইঞ্চি। প্রত্যক্ষদর্শীদের ধারণা মতে কষ্টি পাথরের মূর্তিটি গরুর বলে জানা যায়। তবে উদ্ধার করা মূর্তিগুলি প্রাথমিক ভাবে রাজেন্দ্রপুর বাজারের স্বর্ণকার দিয়ে পরীক্ষা করে কষ্টিপাথরের মূল্যবান মূর্তি বলে শনাক্ত করা হয়েছে।

জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত আসামীগণ পরস্পর যোগ সাজশে দেশের বিভিন্ন এলাকা হতে অবৈধ ভাবে কষ্টি পাথরের মুর্তি ও বিদেশী মদসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে চোরাচালানের মাধ্যমে পাচার করত। মূলত তারা স্বল্প সময়ে অধিক অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে এই ব্যবসার সিন্ডিকেট গড়ে তোলে বলে জানা যায়। এই মূর্তি গুলো শুধু প্রাচীন শিল্পকলার নিদর্শনই নয়, বরং আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সাংস্কৃতিক পরিচয়ও বহন করে। শত শত বছর আগের প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য বহনকারী এই কষ্টিপাথরের মূর্তি গুলো আমাদের অতীত সভ্যতা, ধর্মীয় বিশ্বাস এবং শিল্পবোধের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত।

এদের সংরক্ষণ কেবল একটি প্রশাসনিক কর্তব্য নয়, এটি জাতির প্রতি একটি নৈতিক দায়বদ্ধতা। আমরা চাই এসব ঐতিহাসিক নিদর্শন গুলো রাষ্ট্রীয় ভাবে সংরক্ষিত হোক, যাতে সাধারণ দর্শক, গবেষক এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এগুলো থেকে শিক্ষা ও অনুপ্রেরণা নিতে পারে। মূর্তি গুলো জাদুঘরে সংরক্ষণের ফলে সাধারণ জনগণ দেখার সুযোগ পাবে এবং আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে ইতিহাস ও সংস্কৃতির চেতনা জাগ্রত হবে।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, মোহাম্মদ কামরুজ্জামান (পিপিএম) এ্যাডিশনাল ডিআইজি অধিনায়ক (পরিচালক) র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-১০ কেরাণীগঞ্জ, ঢাকা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিস্তারিত...