চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ মুজিব বর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পে সরকারি বাড়ি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের ০১ নং ওয়ার্ডের শিয়ালমারা গড় এলাকায়। প্রকল্পটির আওতায় ৮৭’টি বাড়ি উপহার পেয়েছেন অসচ্ছল গৃহহীন ব্যক্তিরা। তবে অভিযোগ উঠেছে ৮৭’টি বাড়ির মধ্যে প্রায় ৩৭’টি বাড়ি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় যেখানে উপকারভোগীরা কেউ বসবাস করছেনা৷
এদিকে অভিযোগ উঠেছে বরাদ্দকৃত ৮৪ নং বাড়িটির মালিক বালিয়াদিঘী ধনীপাড়া গ্রামের মোসাঃ নাজেমা বেগম নিজে বাস না করে শিয়ালমারা গ্রামের মোঃ খাইরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির কাছে অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করে দেন৷ তবে খাইরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, একই এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি মোঃ সাদিকুল ইসলাম মুনু ডাক্তার ও মোঃ শফিকুল ইসলাম কালু ডিলার আমাকে বাড়িটিতে থাকার সার্বিক ব্যবস্থা করে দেন। তবে কালু ডিলারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি শিকার করে অপরদিকে মুনু ডাক্তার বিষয়টি অস্বীকার করে এড়িয়ে যান৷
এদিকে উপকারভোগী বাড়ির মালিক মোসাঃ নাজেমা বেগমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি কোন বাড়ি পাইনি এবং কারও কাছে বিক্রিও করিনি বলে পুরো ঘটনাটি অস্বীকার করেন। কিন্তু পার্শ্ববর্তী উপকারভোগীরা জানান সরকারি বাড়িগুলো পাওয়ার পরপরই নাজেমা বেগম তার নামে বরাদ্দকৃত ৮৪ নং বাড়িটিতে কিছুদিন বসবাস করেন৷ তারপর খাইরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে বাড়িটি অজ্ঞাত কারনে দিয়ে দেন বলে জানান স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে শাহবাজপুর ইউনিয়নের ০১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ হুমায়ুন কবির জানান, নাজেমা বেগমের বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। একই এলাকার মোঃ জামাল হকের নিজস্ব জমিতে অস্থায়ী ভাবে একটি ঘর তৈরি করে বসবাস করার সুযোগ করে দেন নাজেমা বেগমকে৷ পরবর্তীতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের সরকারি বাড়ি পেয়েও সেখানে না গিয়ে জামাল হকের জমিতে জোরপূর্বক বসবাস করছেন।
ইউপি সদস্য আরও জানান, চলতি বছরের ১২ মার্চ গ্রামের পাঁকা রাস্তার কাজ চলাকালে তার অস্থায়ী নির্মানাধীন বাড়িটির সামনে ৩ ফিট জমি ছাড়তে বললে ইউপি সদস্য মোঃ হুমায়ুন কবিরের প্রতি চড়াও হয়। এমনকি এক পর্যায়ে হুমায়ুন কবিরকে নাজেমা ও তার পরিবারের লোকজন মারধর করে পরনে থাকা পোশাক ছিঁড়ে ফেলে শারীরিক লাঞ্ছিত করেন।
এবিষয়ে শিবগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আরিফুল ইসলাম জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে পাওয়া কোন বাড়ি উপকারভোগী অন্য কোনো ব্যক্তির নিকট বিক্রি বা হস্তান্তর করতে পারবেনা। যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে সেটা তদন্ত সাপেক্ষে প্রমাণিত হলে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।