• শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
সম্পদের হিসাব দিতে হবে রাজউক কর্মকর্তাদের গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু বাংলাদেশ চোখের সেবা সম্প্রসারণে অরবিসের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করবে ব্রিটেন বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের বিভাগীয় সমাবেশ নিঃ স্বার্থ সমাজ কল্যাণ সংগঠনের নব নির্বাচিত কমিটির পরিচিতি ও মাদক বিরোধী সভা শেরপুরে হাসপাতালের সেই তত্ত্বাবধায়কের অপসারণ দাবীতে সাংবাদিকদের বিক্ষোভ বিচারের পর আ.লীগকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে : ড. ইউনূস আমরা এক পরিবার, কেউ কারো শত্রু হবো না: প্রধান উপদেষ্টা সীমান্তের বিএনপি নেতা সাবেক ইউপি সদস্যের ভাতিজা ইয়াবাসহ আটক

সাপাহারে চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে ব্লাকমেইলের অভিযোগ

সংবাদদাতা / ২৪৬ পাঠক ভিউ
আপডেট সময় : সোমবার, ১ আগস্ট, ২০২২

আব্দুল হালিম, সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর সাপাহারে অভিনব কায়দায় চতুর্থ শ্রেনীর ছাত্র আবু রায়হান (১১)কে মুদি ও স্টেশনারী দোকানদারের কর্মচারীর দ্বারা তিন মাস যাবৎ ব্লাকমেইল করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া সহ প্রানে মেরে ফেলার হুমকির অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আবু রায়হান উপজেলার প্রফেসরপাড়া গ্রামের ইতালী প্রবাসী বিপ্লব ফরাজীর ছেলে ও সাপাহার সরকারী মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেনীর শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে। ব্লাকমেইলের ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের স্কুল ক্যাম্পাসের মুদি ও স্টেশনারী দোকানদার জনৈক বাবুলের দোকানে।

বাবুলের দোকানের কর্মচারী জনৈক শুভ’র দ্বারা ঘটেছে এই ধরণের ন্যাক্কার জনক ব্লাকমেইলের ঘটনা। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আবু রায়হানের মা রাফিনা আক্তার সাংবাদিকদের জানান, গত তিন মাস আগে বিকেলে স্কুল মাঠে ফুটবল খেলতে যায় আবু রায়হান। এসময় অসাবধানতা বশতঃ ফুটবল বাবুলের দোকানের শো-কেসে লেগে কাঁচের কিছু অংশ ফেটে যায়।এসময় বাবুল রায়হানকে ধমকের স্বরে বলে “এই কাঁচের দাম কত জানিস”? আমি তোর বাবা-মা ও তোর স্যারকে কে বলে দিবো।

বাবা-মাকে বলে দেওয়ার কথা শুনে ভয় পেয়ে যায় ওই শিক্ষার্থী। দোকানদার বাবুলকে বলে আমি টাকা দিয়ে দিবো। প্লিজ আমার মাকে বলেন না। পরে ওই শিক্ষার্থী দোকানদারকে ৫শ’টাকা এনে দেয়। রায়হানের বাবা কি করেন জানতে চাইলে রায়হান উত্তর দেয়, ইতালীতে চাকুরী করে। পাশ থেকে সুযোগ সন্ধানী কর্মচারী শুভ ঘটনাটিকে শুনতে পেয়ে রায়হানের সরলতার সুযোগ নেয়।একসময় সে ওই শিক্ষার্থীকে ডেকে বলে “সিসি টিভির ফুটেজ আছে। তোর মা ও স্যারকে দেখাবো যে তুই কাঁচ ভেঙ্গেছিস।

তুই প্রতিদিন আমাকে ৫শ’ টাকা করে দিবি। আর এই কথা কাওকে বললে তোকে মেরে ফেলবো। এমতাবস্থায় নিরুপায় হয়ে গত তিন মাস যাবৎ মায়ের মানিব্যাগ থেকে টাকা চুরি করে দিতে থাকে শুভ কে। মেরে ফেলার কথা শুনে মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে ওই শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়ে লেখা পড়ায় অমনযোগী হয়ে পড়ে। পরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রায়হানের মা’কে যত্নবান ও বিশেষ নজর দেওয়ার পরামর্শ দেন।

এদিকে দিনের পর দিন মানসিক ভাবে ও শারিরীক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে রায়হান। ছেলের অবস্থা দেখে সম্প্রতি কয়েকদিন আগে রাজশাহী চিকিৎসা করান। ডাক্তার পরীক্ষা নিরীক্ষা করে রিপোর্ট ভালো থাকায় কোন রোগ ধরতে পারেন না। পরে কর্তব্যরত ডাক্তারগণ রায়হানকে মানসিক ডাক্তার দেখানোর পরামর্শ দিলে তিনি একজন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার কে দেখান।

মানসিক ডাক্তার রায়হানের চিকিৎসা ও পরীক্ষা নিরিক্ষা করে তার শরীরে কোন রোগ না পেয়ে তার মা’কে বলেন বাচ্চাটি কোন কারণে আতঙ্কগ্রস্থ্য হয়ে হাতাশা ও দুঃচিন্তায় ভুগছে। আপনি তার কাছ থেকে বিষয়টি জেনে সেটার সমাধান করলেই ঠিক হয়ে যাবে। পরে রায়হানকে বাসায় এনে তার মা তাকে অভয় দিয়ে বুঝানোর পর সে পুরো ঘটনাটি খুলে বলে। এবং তার মাকে আরোও জানায়, “শুভকে টাকা না দিলে আমাকে মেরে ফেলবে।”

ছেলের কাছে ঘটনা শুনে তার মা বিষয়টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলামকে বিস্তারিত জানান।কিন্তু কয়েকদিন পেরিয়ে গেলেও প্রধান শিক্ষক এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেন না। পরে ভুক্তভোগী রায়হানের মা বুদ্ধি খাটিয়ে একটি ৫শ’টাকায় নাম স্বাক্ষর করে তার ছেলেকে দেন দোকানের কর্মচারীকে দেওয়ার জন্য।

কথা মত রায়হান টাকা দিয়ে আসে।কিছু সময় পরে তার মা দোকানে গিয়ে ঘটনাটি বললে দোকানদার সহ কর্মচারী অস্বীকার করে। সে সময় রায়হানের মা উত্তেজিত হয়ে চ্যালেঞ্জ করলে লোকজন জড়ো হয়। পরে দোকানদারের ক্যাশবাক্স থেকে স্বাক্ষরকৃত টাকাটি উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। বিষয়টি নিয়ে কোন আইনি পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে রায়হানের মা সাংবাদিকদের বলেন “দোকানটি যেহেতু পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় চত্ত্বরে অবস্থিত তাই ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নিকট অভিযোগ দিবো বলে মনে করেছি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চিকিৎসার জন্য বর্তমানে ভারতে রয়েছে ফিরে এলেই আমার অভিযোগ জানাব। তারপরে কোন আইনি পদক্ষেপ গ্রহন করবো। এ বিষয়ে মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি ঘটনার বিষয়টি এড়িয়ে যান। পরে বিদ্যালয়ের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হতে পারে বলে আমি কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করিনি বলে স্বীকার করেন। ঘটনায় জড়িত ব্লাকমেইলার শুভ’র সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে ফোনে বা স্ব-শরীরে পাওয়া যায়নি।

ঘটনার বিষয়ে সাপাহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল মাহম দের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ঘটনা সত্য হলে বিষয়টি অবশ্যই বড়ো ধরণের অপরাধ। তবে এখনো পর্যন্ত কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত স্বাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। অল্প বয়সী স্কুল শিক্ষার্থীর সাথে এরূপ আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার সচেতন মহল। এছাড়াও ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষে দোষীকে আইনের আওতায় আনার জন্য জোর দাবী জানান স্থানীয়রা।#


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিস্তারিত...