• মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:৪২ অপরাহ্ন

৩২ নম্বর থেকে ‘হাড়গোড়’ পাওয়া গেছে: সিআইডি

সংবাদদাতা / ২ পাঠক ভিউ
আপডেট সময় : সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

নিজস্ব  প্রতিবেদক: ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে গুঁড়িয়ে দেওয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি থেকে ‘কিছু হাড়গোড়’ পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি।সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে ধানমন্ডি থানা পুলিশের উপস্থিতিতে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট এসে আলামত সংগ্রহের কাজ শুরু করে।ধানমন্ডি থানার ওসি আলী আহমেদ মাসুদ বলেন, ৩২ নম্বরে কিছু হাড়গোড় পাওয়া গেছে। তবে, সেগুলো মানুষের না কি অন্য কোনো প্রাণীর, সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আলামত সংগ্রহ শেষে সোয়া ১০টার দিকে সিআইডির টিম চলে গেছে বলে জানান ওসি মাসুদ।

শেখ হাসিনার পতন ও দেশত্যাগের ছয় মাস পূর্তির দিন গত বুধবার ‘বুলডোজার মিছিল’ কর্মসূচি থেকে ৩২ নম্বরের বাড়িটি ভাঙা শুরু হয়। বৃহস্পতিবার দিনভর সেখানে লুটপাটের পর বিকেলে গরু জবাই করে বিরিয়ানি রান্না সেরে রাতে হয় জেয়াফতের আয়োজন।ওইদিন থেকে ভবন দুটির ভাঙা স্তূপ থেকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে রড বের করে কেটে নিয়ে যেতে দেখা যায় অনেককে। কেউ কেউ ভবনের দাঁড়িয়ে থাকা অংশেই রোডের খোঁজে হাতুড়ি চালিয়েছেন, আবার কেউ ফাঁকা অংশের মাটি খুঁড়ে বের করে নিয়েছেন বৈদ্যুতিক তার।

উল্লেখ্য, বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টায় ছাত্রলীগের ফেসবুক পেজে শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার করা হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। ভারতে বসে তার এ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বুধবার দিনভরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উত্তেজনা চলে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া অনেক ছাত্র-জনতা ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ফেসবুকে ধানমন্ডি ৩২ অভিমুখে ‘বুলডোজার মিছিল’ এবং ‘মার্চ টু ধানমন্ডি ৩২’ কর্মসূচির ডাক দেন।এদিন বিকেলে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে ফেসবুকে একাধিক পোস্ট দেন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য শরিফ ওসমান হাদি। ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ধানমন্ডি ৩২ ভাঙার ডাক দেন বিদেশে অবস্থানরত অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্যও। তিনি লিখেন, ‘থাকবে না ৩২ নাম্বার থাকবে না। ইনকিলাব জিন্দাবাদ।’

সন্ধ্যা সাতটার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘আজ (বুধবার) রাতে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমিমুক্ত হবে। এরপরই ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবের বাসার সামনে এসে জড়ো হতে শুরু করেন বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা। পরে রাত ৮টার দিকে বাড়িটিতে প্রবেশ করেন তারা। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড়ও বাড়তে থাকে। সে সময় বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালানোর পর আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে প্রবেশ মুখে স্থাপিত শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালটি সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলা হয়েছে। পরে রাত ১০টা ৫০ মিনিটে বাড়ির সামনে বুলডোজার আনা হয়। ভাঙচুরের আগে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘স্বৈরাচার শেখ হাসিনা আজকে ছাত্রলীগের ব্যানারে জাতির সামনে ভাষণ দেবে। আমরা এ দেশে বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনার কোনও অস্তিত্ব রাখব না।’

পরদিন ধ্বংসস্তূপে পরিণত মূল বাড়ির পাশে নির্মাণাধীন ভবনে উপস্থিত হয় বিক্ষুব্ধরা। সেই ভবনের একাধিক বহুতল বেজমেন্ট দেখতে পাওয়া গেছে বলে খবর চাউর হয়। একটি পক্ষ থেকে প্রচার করা হয়, ৩২ এর বাড়িটির বেজমেন্টের পানি সেচলেই পাওয়া যাবে ‘আয়নাঘরের’ সন্ধান। সেটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ৩২ নম্বরের বেজমেন্টে রোববার সকাল থেকে পানি সেচ করার কাজ করছিল ফায়ার সার্ভিস, যা লাইভ সম্প্রচারও করা হয়। কিন্তু পানি সেচের কাজ শেষে কিছু না পেয়ে দুপুর সোয়া ১টার দিকে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এরপর সোমবার সেখানে আলামত সংগ্রহে পৌঁছায় সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট। উদ্ধার হওয়া হাড়গোড়গুলো কোন স্পটে পাওয়া গেছে, তা সুনির্দিষ্ট করে বলেনি তারা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিস্তারিত...