বনি আমিনঃ গত কিছুদিন ধরে কেরাণীগঞ্জ ও এর আশেপাশের আবাসিক এলাকায় ফ্ল্যাট বাসাগুলো’তে চুরি ঘটনা ঘটছিলো। একটি সংঘবদ্ধ চোর-চক্র ফ্ল্যাট বাসার লোকজন বাইরে রেড়া’তে গেলে ঐ সুযোগে বাসায় চুরি করে দ্রুত পালিয়ে যায়। ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ইং তারিখ বেলা অনুমান ১১.০০ টার সময় কেরাণীগঞ্জ মডেল থানাধীন জিনজিরা টিনপট্টি আমজাদ এর চার তলা বিল্ডিংয়ের ৩য় তলার পূর্ব পাশে বাদী ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী গ্রামের বাড়ী হতে বেড়ানো শেষে তার ভাড়াটিয়া বাসায় এসে ফ্ল্যাটের দরজায় থাকা তালা ভাঙ্গা অবস্থায় দেখতে পায়।
রুমের দরজা খোলা ও রুমের ভিতরে থাকা সবকিছু এলো-মেলো, আলমারীর ড্রয়ারে থাকা নগদ টাকা, তার স্ত্রী ও মেয়ে ফারিয়ার ব্যবহৃত সর্বমোট ০৫ (পাঁচ) ভরি ওজনের বিভিন্ন স্বর্ণালংকার, বাদীর শ্যালক এর ব্যবহৃত একটি হাত ঘড়ি ও রুমে থাকা ২ টি মোবাইল ফোন চোরচক্র চুরি করে নিয়ে যায়। উক্ত চুরির ঘটনায় ফরহাদ হোসেন (৪৬) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা চোরদের বিরুদ্ধে কেরাণীগঞ্জ মডেল থানার মামলা নং- ১২, তাং- ০৮ ফেব্রুয়ারি২০২৪ খ্রিঃ, ধারা- ৪৫৪/৩৮০ পেনাল কোড এর চুরির মামলা দায়ের করেন।
মামলা রুজুর সাথে সাথে কেরাণীগঞ্জ মডেল থানার একটি চৌকস তদন্ত টিম সংঘবদ্ধ এই চোরচক্রের সদস্যদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে তথ্য-প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার ও সোর্স নিয়োগ করে কার্যক্রম শুরু করে। তদন্তের এক পর্যায়ে উক্ত তদন্তদল মামলার অজ্ঞাতনামা আসামীদের সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জনাব শাহাবুদ্দিন কবীর, বিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, কেরাণীগঞ্জ সার্কেল এর সরাসরি তত্ত্বাবধানে ও কেরানীগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোস্তফা কামাল
এসআই জিয়াউদ্দিন, এসআই অলক কুমার দে, এসআই রিয়াজ, এএসআই আলামিন, এর নেতৃত্বে একটি আভিযানিক দল কেরাণীগঞ্জ ডিএমপির বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী ১/মোঃ বুলু মিয়া (৩০) ২/ সজল (২১), ৩/ সাগর (২১), ৪/ রাসেল, ৫/ সোহেল (৩০) ও ৬/ হাসান (নানা) হাসান (৫০)-দের গ্রেফতার সক্ষম হয়।
পরবর্তীতে গ্রেফতাকৃত আসামী ১/ বুলু (৩০) এর হেফাজত হতে মামলার ঘটনায় চুরি যাওয়া স্বর্ণের ০২টি আংটি, এক জোড়া কানের দুল, নগদ ২০,০০০/- হাজার টাকা এবং আসামী সজলের হেফাজত হতে মামলার ঘঁটনায় চুরি যাওয়া একটি Realme 8 মোবাইল চোরাই উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা উক্ত চুরির ঘটনায় জড়িত মর্মে প্রাথমিক ভাবে স্বীকার করে।
আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত আসামী নানা হাসান বাসা ভাড়া নেওয়ার অভিনয় করে বিভিন্ন বিল্ডিংয়ে তালাবদ্ধ ফ্ল্যাট খুজতে থাকে। যখনি কোন বিল্ডিংয়ে তালাবদ্ধ ফ্ল্যাট দেখতে পায় তখন সে নিচে নেমে এসে চোরচক্রের দলনেতা বুলু’কে কত-তম তলায় ফ্ল্যাট তালাবদ্ধ আছে তা জানায়। বুলু তখন সজল, সাগর ও সোহেল’কে উক্ত তালাবদ্ধ ফ্ল্যাটে চুরি করার জন্য পাঠায় এবং সে ও রাসেল বিল্ডিংয়ের নিচে পাহারা দিতে থাকে। এভাবে তারা গত কয়েকদিনে জিনজিরার বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি চুরি করেছে। মামলার তদন্ত অব্যাহত আছে।
রুজুকৃত মামলার বিবরণঃ– কেরাণীগঞ্জ মডেল থানার মামলা নং- ১২, তাং- ০৮ফেব্রুয়ারি ২০২৪ খ্রিঃ, ধারা- ৪৫৪/৩৮০ পেনাল কোড। বাদী- মোঃ ফরহাদ (৪৬), গ্রেফতারকৃত আসামীঃ ১/ মোঃ তফাজ্জল হোসেন বুলু (৩০), পিতাঃ- মোঃ নবী হোসেন, ২/ সজল (২১), পিতাঃ- মৃত ফারুক, মাতাঃ- শওকত আরা, ৩/ সাগর (২১), পিতাঃ- মোঃ সেলিম,৪/ মোঃ রাসেল (২৫), পিতা- মোঃ খালেক শেখ, ৫/ মোঃ সোহেল (৩০), পিতাঃ- জালাল উদ্দিন হাওলাদার, মাতাঃ- শাহাবানু, ৬/ হাসান (৪০), ইসমাইল হাওলাদার।
উদ্ধারকৃত আলামতের বর্ণনাঃ
১/ ০২টি আংটি, এক জোড়া কানের দুল, স্বর্ণের মোট ওজন ৯ আনা ৪ রতি, ২/ নগদ ২০,০০০/- হাজার টাকা।