রেজাউল করিম : ময়মনসিংহ -৭ ত্রিশাল আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাফেজ রুহুল আমিন মাদানির ছেলে হাসান মাহমুদ মাদক ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন এমন অভিযোগ তুলেছেন বর্তমান সাংসদ এবিএম আনিছুজ্জামান। তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা সহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে গতকাল সোমবার সকাল ১০ টায় তার নিজ বাড়িতে এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ত্রিশাল তরুণ সমাজ এখন ইতিহাসের ভয়ঙ্করতম সময় পাড় করছে। আগে শুনেছি কাজের বিনিময়ে খাদ্য মানে ‘কাবিখা’।
কাজের বিনিময়ে টাকা মানে ‘কাবিটা’। অপ্রিয় হলেও সত্য এখন সেখানে শুনতে হচ্ছে ‘মাবিরা’ মানে মাদকের বিনিময়ে রাজনীতি। মাদকের বিনিময়ে এখন অনেক তরুণই হাসান মাহমুদের মিছিলে যায়। একটি ফেনসিডিল আর দুইটি ইয়াবার বিনিময়ে অনেক তরুণই এখন ফেসবুকে ফেক আইডি খুলে প্রতিপক্ষ (বর্তমান এমপি) ‘র বিরুদ্ধে স্লোগান ও অপপ্রচার চালায়। এমপি আনিছ বলেন, ত্রিশালে চিহ্নিত সব মাদক ব্যবসায়ীর নেতৃত্ব দেন সাবেক এমপি রুহুল আমিন মাদানীর ছেলে হাসান মাহমুদ শুধু আমি নয়, ত্রিশালের সবাই জানে। কৌশলে ত্রিশালে অধিকাংশ তরুণকে হাসান মাহমুদ মাদক সেবন ও মাদক বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে ব্যক্তিকেন্দ্রিক রাজনীতিতে টানছেন।
ত্রিশাল উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাসান মাহমুদ ও সাধারন সম্পাদক ইমরান হোসেন মাদক বাণিজ্যের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। গত বছরের ৩ মার্চ অভিযান চালিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেনসহ চারজনকে হেরোইন বিক্রির সময় হাতেনাতে আটক করেছে ত্রিশাল থানা-পুলিশ।
পৌরসভার নওধার এলাকার মাইক্রোস্ট্যান্ড থেকে তাদের আটক করা হয়। আটকৃতরা হলেন—ইমরান হোসেন, কবির হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান রাজন ও মাহবুব হোসেন। ত্রিশাল থানা- পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হেরোইন বিক্রির সময় তাদের আটক করা হয়। এরপর দিন আসামিদের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দিয়ে ময়মনসিংহ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়।
এদিকে ত্রিশাল উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাসান মাহমুদের ঘনিষ্ঠজন ও মঠবাড়িয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি মনিরুল ইসলাম রুবেলকে ইয়াবা চালানসহ আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। পরবর্তীতে শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাসান মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে অভিযুক্ত রুবেলকে সাময়িক ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে এর কিছুদিন পর ইমরান হোসেনকে হিরোইনের চালান আটক করেন পুলিশ। তারা ত্রিশাল উপজেলায় ২২ টি স্থানে হিরোইন ও ইয়াবা বিক্রি করে। তাদের মাসে আয় প্রায় কোটি টাকা।
ত্রিশালের অধিকাংশ মাদকসেবী এবং চিহ্নিত সব মাদক ব্যবসায়ী সাবেক এমপিপুত্র হাসান মাহমুদের ছত্রছায়ায় থাকেন। ত্রিশাল পৌরসভা বাসিন্দা আহিজুল হক জানান, ত্রিশালে গণবিচ্ছিন্ন সাবেক এমপির ছেলের কাছে জিম্মি এখন অধিকাংশ মানুষ। সকাল- বিকাল চারটা ফেনসিডিল না খেলে যার শরীর ভালো থাকে না।
এবিষয়ে বক্তব্য জানতে ত্রিশাল উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাসান মাহমুদে মোবাইলে বারবার ফোন করা হলেও রিসিভ করেননি। মোবাইলে বার্তা পাঠানো হলেও কোন উত্তর মিলেনি।