• শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৫২ অপরাহ্ন

চাঁদাবাজি মামলার জামিন নিয়ে বাদীকে হত্যার হুমকি

শাহিনা খাতুন, (ময়মনসিংহ) থেকেঃ / ৫৩ পাঠক ভিউ
আপডেট সময় : শনিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৪

শাহিনা খাতুন, (ময়মনসিংহ) থেকেঃ : ৫০ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানাধীন বালির বাজার দোয়েল ইটভাটা বন্ধের হুমকি দিয়েছেন বাগানের বাসিন্দা মৃত মন্তাজ উদ্দিন কেরানী ছেলে আনোয়ার সাদাত জাহাঙ্গীর (৪৮), আনিসুর রহমান বাবুল, শাহিন আলম, তাজামুল হোসেন, হৃদয় মিয়া ও বাবু মিয়া।

এ ঘটনায় ৬ জন’কে আসামির করে ময়মনসিংহের বিজ্ঞ সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট ত্রিশাল আমলি আদালতে মোঃ মুশফিকুর রহমান মানিক বাদী হয়ে একটি চাঁদাবাজি অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেনমামলা নং- ২২৭/২০২৪। ধারা : ১৪৩/১৪৮/৩৪১/৩৪৯/ ৩৮৫/৩৮৭ /৩৮০/৫০৬/ (২) ১১৪/৩৪ দ: বি। আদালতের নির্দেশে ত্রিশাল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেন।

পরবর্তীতে ত্রিশাল থানার সাবেক ওসি কামাল হোসেন এসআই আব্দুল করিম’কে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেন। মামলা টি তদন্ত কর্মকর্তা দায়িত্ব নিয়ে গোপনে ও প্রকাশ্যে ঘটনা স্থলে তদন্ত করেন এবং সকল সাক্ষীদের জবানবন্দী রেকর্ড করেন।

ঘটনা সত্যতা থাকায় গত ০১ আগস্ট ২০২৪ ইং তারিখ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। পুলিশের তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর আদালত সকল আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। গত ২ সেপ্টেম্বর ৬ নং আসামি বাবু মিয়া বাদে সকল বিবাদীগণ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত অস্থায়ী ভাবে ধার্য তারিখ পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন।

মামলার ১ নং আসামি আনোয়ার সাদাত জাহাঙ্গীর, আনিসুর, বাবুল সহ সকল আসামি জামিন পেয়েই বাদী মুশফিকুর রহমান মানিক সহ তার স্বজনদের মামলা তুলতে নানা ধরনের প্রাণ- নাশের হুমকি প্রদান করছেন। এমন কি মামলা না তুললে হত্যা করা হবে এমন ভয়ভীতি প্রদান করছেন। এ অবস্থায় বাদী তার ও তার পরিবারের স্বজনদের নিরাপত্তার জন্য থানার ওসি সাহেব’কে মোবাইলে জানিয়েছেন।

ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনসুর আহমেদ জানান, মুশফিকুর রহমান মানিক নামের এক ব্যক্তি আমাকে টেলিফোনে তাকে হুমকির বিষয় টি জানিয়েছেন। আমি তাকে জিডি করার পরামর্শ দিয়েছি। ঘটনা সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে মামলার বাদী মুশফিকুর রহমান মানিক জানান, আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ইট ভাটা প্রায় বন্ধের পর্যায়ে।আগেও ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন আনোয়ার সাদাত জাহাঙ্গীর, আনিসুর রহমান বাবুলগং। তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছি। সত্যতা পেয়ে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। ৫ জন আসামি জামিনে এসে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধের হুমকি দিচ্ছেন এবং আমাকে প্রাণ- নাশের হুমকিও দিয়েছেন।

আনোয়ার সাদাত জাহাঙ্গীর জানান, আমি কেন চাঁদা চাইবো। এসব মিথ্যা কথা। আপনি নিউজ করলে মামলা করে দিব। আমার মেয়ের জামাই উকিল। মামলা করলে কোন পঁয়সা লাগে না।

ত্রিশাল সার্কেলের সিনিয়র এএসপি অরিত সরকার জানান, ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় আসামিগন ডিআইজি স্যারের কাছে একটি আবেদন করেছেন। আমি তদন্ত করেছি। চাঁদাবাজির ঘটনা প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। যেহেতু আদালতে মামলা চলছে আমি এ নিয়ে আর কিছু বলতে চাই না। অভিযোগ আছে, আনোয়ার সাদাত জাহাঙ্গীর একজন মামলা বাজ ব্যক্তি। এ পর্যন্ত সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে প্রায় ৩০ টি মামলা করেছেন।

সকল মামলায় সাজানো এবং মিথ্যা। তার চাহিদা পূরন না হলে মানুষ’কে অযথা হয়রানি করেন। গফরগাঁও এর এক নারী জানান, আনোয়ার সাদাত জাহাঙ্গীর আমাকে বিভিন্ন সময় ব্ল্যাকমেইল করেন। প্রায় দুই লাখ টাকা নিয়েছেন। তারপরও আমার ছবি তার ফেসবুকে অপপ্রচার করেন। আমি আইসিটি আইনে মামলা করেছি। আশা করি ন্যায় বিচার পাবো।

বাগান ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ফয়জুর রহমান জানান, আনোয়ার সাদাত জাহাঙ্গীর একজন বাটপার লোক। একজন প্রতারক এবং টাউট প্রকৃতির মানুষ। সমাজের সবচাইতে খারাপ মানুষের মধ্যে সে একজন। তার নাম শুনলে ঘৃণা হয় আমার। তার নামে প্রায় ৩০ টি মামলা আছে। তার অপকর্ম সম্পর্কে আমাদের শিক্ষক নেতা ইদ্রিস খান সাহেব সব জানেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিস্তারিত...