রিফাত আরেফিনঃ যশোর রেলরোড চারখাম্বা ফুড গোডাউন সংলগ্ন শেখ আব্দুল মতিনের বাড়ির তিন তলার একটি ঘর থেকে রজত কাঞ্চন সাহা ওরফে স্বপ্নীল সাহা নামের এক কলেজ ছাত্রের অর্ধগলিত ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার হয়েছে। ভেতর থেকে দরজা আটকানো থাকলেও বাইরে থেকে তালা ভাঙা ছিল। পা লেগেছিল পালঙ্কে।
অন্যদিকে এমএম কলেজের এক মুসলিম ছাত্রী’কে বিয়ে করে ছিলেন স্বপ্নীল। এনিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে চরম অশান্তি চলছিল। মৃতের মা ৩ মাস ধরে ঢাকার একটি হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন। বাবা বরিতোষ সাহা ওষুধ ব্যবসায়ী। টিবি ক্লিনিক এলাকায় তার একটি ফার্মেসি রয়েছে। তবে স্ত্রী অসুস্থ হওয়ার পর তিনি ঢাকাতে অবস্থান করছেন। সব মিলিয়ে স্বপ্নীলের মৃত্যু নিয়ে ধুম্র জালের সৃষ্টি হয়েছে। এটি আত্ম হত্যা নাকি হত্যা তা নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। রহস্য উদঘাটনে পুলিশ ও পিবিআই কাজ করছে।
আজ মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকালে ঘর থেকে দুর্গন্ধ বের হতে দেখে ভবনটির অন্যদের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। অনেক ডাকা ডাকি করে সাড়া- শব্দ না পেয়ে বিষয়টি থানা পুলিশে অবহিত করা হয়। তাৎক্ষণিক পুলিশ ও পিবিআই সদস্যরা ঘটনা স্থলে যান। লাশ উদ্ধার করে পাঠানো হয়েছে যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে। প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে আইন- শৃঙ্খলা বাহিনী স্থানীয়দের সাথে কথা বলেছেন। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট শেষে লাশ মর্গে পাঠায় পুলিশ।
স্থানীয় শাওন নামে এক ব্যক্তি গণমাধ্যম কে জানান-বরিতোষ সাহা ও তার স্ত্রী খুব ভাল মনের মানুষ। লোক মুখে শুনেছেন স্বপ্নীল মুসলিম পরিবারের এক কলেজ ছাত্রী কে বিয়ে করেছেন। এনিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে চরম অশান্তি চলছিল। এর মধ্যে স্বপ্নীল মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
রবিতোষ সাহা রাজবাড়ি জেলার কালুখালী এলাকার বাসিন্দা। তিনি যশোরে মতিন মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। তার টিবি ক্লিনিক মোড়ে ফার্মেসি রয়েছে। বর্তমানে স্বপ্নীলের বাবা ঢাকাতে অবস্থান করে তার স্ত্রীর চিকিৎসা করাচ্ছেন। এদিকে, স্বপ্নীল ভাড়া বাড়িতে থাকছিলেন। তিনি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে এইচ এসসি ২য় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
স্বপ্নীলের ঘনিষ্ট একটি সূত্র জানায়, স্বপ্নীল মাদকা সক্ত ছিলেন। স্ত্রীর সাথেও সম্পর্ক ভাল যাচ্ছিল না। তার ফেসবুক আইডির একটি পোস্ট ও ছবি দেখে- এমনটিই ধারণা করছেন স্থানীয়’রা। কয়েক টি মামলার আসামিও তিনি। যদিও মামলা ও মাদকা সক্ত- এর বিষয়টি দায়িত্বশীল কোনো সূত্রে পাওয়া যায়নি। স্থানীয়দের মুখ থেকে এসব কথা শোনা গেছে।
কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এখনি কিছু বলা যাচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন- সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়না তদন্তের পর হত্যা না আত্ম হত্যা তা নিশ্চিত হওয়া যাবে । তবে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি আত্মহত্যা।