• বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:১৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় খালাস পেলেন লুৎফুজ্জামান বাবর লেবানন থেকে ফিরেছেন আরো ৯৪ বাংলাদেশি ইজতেমা মাঠের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন ইজতেমা ময়দানে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ৩, আহত শতাধিক ৮০ হাজার কোটি টাকার অনিয়ম: হাসিনা-রেহানা-জয়ের দুর্নীতি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত ইভিএমে নয়, জাতীয় নির্বাচন হবে ব্যালটে : সিইসি ট্রাইব্যুনালে আনা হলো সাবেক মন্ত্রী-উপদেষ্টাসহ ১৬ জনকে মালয়েশিয়াকে ২৯ রানে অলআউট করে সেমিফাইনালে বাংলাদেশ বিডিআর হত্যাকাণ্ড: ন্যায়বিচার নিশ্চিতে ৫ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটি মেঘালয় থেকে নিয়ে আসা ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকার কাপড়ের চালান নৌ পথে জব্দ

পুলিশ কনস্টেবল শিমুল রায়ের প্রেম প্রতারণায় রোজী’র সর্বনাশ

সংবাদদাতা / ৯ পাঠক ভিউ
আপডেট সময় : সোমবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪

শিমুল আছে বহাল তবিয়তে রোজী ঘুরছে দ্বারে দ্বারে

স্টাফ রিপোর্টার: ভন্ড প্রেমিক প্রতারক শিমুলের নিঃ শ্বাসে বিষ ছিল রোজী তা বিশ্বাস করেনি। আবেগে আপ্লুত শিমুল রায় প্রেম, ভালোবাসা, বিয়ের প্রলোভনে তার সব হাতিয়ে যে চম্পট দিবে এর ঘূর্ণাক্ষরও বুঝতে পারেনি রোজী। কুড়ি গ্রামের হিন্দু পুলিশ কনস্টেবল শিমুল রায়ের প্রেম-প্রতারণায় চাঁপাইয়ের মেয়ে রোজী আক্তারের সর্বনাশ ঘটে গেছে। বিয়ের নামে লোভী শিমুল তার সংসার ভেঙ্গেছে, হাতিয়ে নিয়েছে সর্বস্ব। রোজীর জমানো আট লক্ষাধিক টাকা, নিজের নামের ফ্ল্যাট, স্বর্ণালংকার সবকিছুই এখন শিমুল রায়ের হাতে তুলে দিয়ে রাস্তার মানুষে পরিনত হয়েছে রোজী।

শিমুল রায় (৩৪), বিষ্মদেব রায়, পুলিশ লাইন, সদর, কুড়িগ্রাম। বিপি নং-৯২১২১৪৬১৯০, কং-৩০২।

দুই বছর আগে কুড়িগ্রাম আত্মীয়র কাছে বেড়াতে যাওয়ার সূত্রে রোজীর সঙ্গে দেখা হয় শিমুলের এবং পরিচয় হয়। এরপর থেকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ ও ফেইসবুক বন্ধুত্বও গড়ে উঠে। চাপাই নবাবগঞ্জের রহনপুর কলেজ মোড় এলাকায় শ্বশুর বাড়ি থাকতেন রোজী। নিয়মিত যোগাযোগ হতো শিমুলের সাথে।

ঘনিষ্ঠতার সূত্রে কুড়িগ্রামে যাতায়াত করতেন রোজী এবং সেখানে কনষ্টেবল প্রেমিকের সঙ্গে রাত কাটাতেন হোটেল রয়েল প্যালেসে। রোজী যেতেন মাসে গড়ে দুই বার এবং সেখানে চার দিন অবস্থান করতেন। সেখানকার মেলা মেশার দৃশ্য শিমুল কৌশলে ভিডিও করে রাখে। আবার রোজীর বাসায় যখন আসতো শিমুল তখনও মেলামেশার ভিডিও রেকর্ড করে রাখতো।

চলাফেরা মেলামেশার প্রায় ছয় মাস পর রোজী জানতে পারেন শিমুল সনাতন ধর্মের এবং তার স্ত্রী ও সাত বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। জানতে পেরে রোজী সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে কুড়িগ্রাম ছেড়ে আসতে চাইলে শিমুল তখন ধারালো ছুরি এনে নিজের গলায় ধরে ব্ল্যাকমেইল করে। একপর্যায়ে নিজের মোবাইল থেকে বের করে দেখায় নোংরা ভিডিও আর অসংখ্য স্থরি চিত্র। হুমকি দিয়ে বলে এসবই ফেসবুওক আপলোড করে সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিবে শিমুল।

শিমুল বিশ্বাস। ঘাতক প্রেমিক হয়ে উঠে এবং জিঘাংসায় মেতে উঠে। রোজীর মোবাইল থেকে তার প্রবাসী স্বামীর মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে সব ভিডিও আর ছবিগুলো পাঠিয়ে দেয় সে। সেসব প্রমানাদি দেখে প্রবাসী স্বামী রোজীকে ডিভোর্স দিয়ে দেয়। এবার মওকা পেয়ে যায় শিমুল, এগিয়ে যায় ত্রাতা হয়ে। চলতি বছরের ১২ সেপ্টেম্বর তার প্রথম স্ত্রী অনিমা রাণীকে আদালতে এফিডেভিটের মাধ্যমে ডিভোর্স দেয়। এরপর নিজের সনাতন ধর্ম ত্যাগ করে শিমুল মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করে, নাম রাখে আব্দুল্লাহ। একই দিন ওই আদালতে আরেক টি এফিডেভিটের মাধ্যমে বিশ লাখ এক হাজার টাকা কাবিনমূলে রোজী’কে তিনি বিয়ে করেন।

রোহনপুরে রোজীর ভাড়া বাসায় তিন দিন অবস্থান করে ফিরে যায় কুড়িগ্রামে। সেখানে পৌছে অভিনব প্রতারণার ফাঁদ পাতে সে। রোজী’কে জানায়, হিন্দু ধর্মের নানাবিধ রীতিনীতি অনুযায়ী ডিভোর্স দেওয়া স্ত্রীকে বিদায় করতে অনেক করচ খরচা আছে। সেক্ষেত্রে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে আব্দুল্লাহ।

১৯ সেপ্টেম্বর পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে রোজী কুড়িগ্রামের উদ্দেশ্যে চলে যায়। প্রতারণার মাধ্যমে নগদ আট লাখ টাকা এবং রহনপুরে রোজীর মালিকানাধীন ফ্ল্যাট বিক্রি করিয়েও টাকা হাতিয়ে নেয়। রয়েল প্যালেসের ১১২ নম্বর রুমে উঠেন তারা। পরদিন সকালে টাকা হস্তগত করে সে রংপুরে চলে যায়। ২২ সেপ্টেম্বর রোজী’কে তার রহনপুরের বাসায় পাঠিয়ে দেয়- ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় আব্দুল্লাহ নামের শিমুল। এরপর থেকে শিমুলের পরিবারের সবাই’কে বারবার জানিয়েও কোনো সুফল মেলেনি।

দিশেহারা অবস্থায় দুই মাসেও শিমুলের কোনো সন্ধান না পেয়ে উপায়ন্তরহীন রোজী রংপুরের ডিআইজি আমিনুল ইসলামের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করে ২১ নভেম্বর। বিষয় টি আমলে নিয়ে ডিআইজি বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে ঘটনা অনুসন্ধানের দায়িত্ব প্রদান করেন ডিএমপির বিমান বন্দর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান’কে। এরই মধ্যে ১ ডিসেম্বর রোজীর জবানবন্দী গ্রহণ করা হয়, সেখানে শিমুলের পুরো পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

বর্তমানে শিমুল উচ্চ আদালতের সুপ্রীম কোর্টের স্পেশাল সিকিউরিটি বিভাগে কর্মরত রয়েছেন। শিমুলরা এক ভাই এক বোন- তার বোনও কোর্ট পুলিশ সদস্য হিসেবে কর্মরত। তার বাবাও ছিলেন পুলিশের কনষ্টেবল।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিস্তারিত...