অনলাইন ডেস্ক:
ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার সাক্ষী হয়েছে ভারতের উড়িষ্যা রাজ্য। স্থানীয় সময় শুক্রবার (২ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজ্যের বালেশ্বরের বাহাঙ্গাবাজার স্টেশনের কাছে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। এখন পর্যন্ত ২৭৮ জন নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। গত ২০ বছরের মধ্যে এমন ট্রেন দুর্ঘটনা দেখেনি কেউ। মর্মান্তিক ওই ট্রেন দুর্ঘটনা এক হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। এদিকে সোমবার স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখনো পর্যন্ত ১০১টি মৃতদেহ এখনও শনাক্ত করা যায়নি।
বার্তা সংস্থা এএনআই-এর সঙ্গে আলাপকালে পূর্ব মধ্য রেলওয়ের বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার রিঙ্কেশ রায় জানান, প্রায় ২০০ জন এখনো উড়িষ্যার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি জানান, প্রায় ১১০০ মানুষ ওই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৯০০ জন ইতোমধ্যেই চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এছাড়া রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে আরও প্রায় ২০০ মানুষ চিকিৎসাধীন রয়েছে। দুর্ঘটনায় নিহত ২৭৮ জনের মধ্যে ১০১ জনের মরদেহ এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি বলেও জানান তিনি।
ভুবনেশ্বর মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের কমিশনার বিজয় অমৃত কুলাঙ্গে এএনআইকে বলেন, ভুবনেশ্বরে রাখা মোট ১৯৩ টি মরদেহের মধ্যে ৮০টি মরদেহ শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৫টি মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অনেক মরদেহের অবস্থা বেশ খারাপ। তার মধ্যে গরমে মরদেহ আরও বিকৃত হয়ে যাচ্ছে। তাই এই অবস্থায় মৃতদেহ শনাক্ত করাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চারপাশের বাতাসে পচা মাংসের গন্ধে ভরে উঠেছে। যারা ছবি দেখে স্বজনদের শনাক্ত করছেন তাদের হাতে একটি করে চিরকুট ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ওই চিরকুটের মাধ্যমেই মৃত ব্যক্তিকে দেখার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
অনেক মরদেহের মুখ পুরো জ্বলে গেছে, কোনটির মাথা থেঁতলানো বা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, এগুলো শনাক্ত করাও অসম্ভব হয়ে পড়ছে। স্বজনরা যেন এসব মরদেহ শনাক্ত করতে পারেন সেজন্য শনিবার রাত থেকেই মরদেহগুলো সংরক্ষণের জন্য একটি কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। তারপর সেখান থেকে শহরের মর্গে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উড়িষ্যার বালেশ্বরের ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। বালেশ্বেরের বাহানগা স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। ২১টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে বহু মানুষ প্রাণ হারায়।