নিউজ ডেস্কঃ কয়েক বছর ধরেই ভাবছিলাম সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা সম্পর্কে আমার অভিজ্ঞতা ও কার্যক্রম নিয়ে একটি বই বা মতামত লিখবো। কিন্তু লেখা আর হয়ে ওঠে না। ভাবি এ বিষয়ে আমার লেখার যোগ্যতাটাই কতটুকু।আবার হিসাব করে দেখি সাংবাদিকতার বয়স প্রায় ১৬ বছরের বেশি হয়ে গেছে। এ সময়ে রিপোর্টার থেকে শুরু করে বিশেষ প্রতিনিধি, চিফ রিপোর্টার, উপ-সম্পাদক এবং সর্বশেষ সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছি এবং করছি।
একটি দৈনিক পত্রিকা থেকে কাজ শুরু করে সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক ময়মনসিংহ প্রতিদিন’র সম্পাদক, আমাদের কন্ঠের ক্রাইম চীফ ও জনপ্রিয় অনলাইন পোর্টাল বিডি২৪লাইভের বিশেষ প্রতিনিধি হিসাবেও সচিবালয় বিটে কাজ করছি। এছাড়া আরও কয়েকটি অনলাইন সংবাদপত্রের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি। এক সময়ের দেশের আঞ্চলিক সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক ময়মনসিংহ প্রতিদিন কেন, কি ভাবে প্রকাশ হলো এর সম্পূর্ণটাই আমার জানা। আর নেপথ্যে আমার ভুমিকার কথা সিনিয়র সাংবাদিকগন ও প্রকাশকও জানেন। আর কালের রঙ্গিন ৪ পৃষ্ঠার সর্বাধিক প্রচারিত ময়মনসিংহ প্রতিদিন শুরু আমার হাত দিয়েই।
আমি সম্পাদক থাকা কালেই পত্রিকাটি প্রচার সংখ্যায় শীর্ষে পৌঁছে ময়মনসিংহ বিভাগে। সেই সময়কার প্রচার সংখ্যার শীর্ষের পত্রিকার সম্পাদক পদ ষড়যন্ত্র করে বিতারিত করা হয়। মালিক কর্তৃপক্ষ জেনেও আমার প্রতি অবিচার করেছিলেন। আজও ভুলিনি দৈনিকটির কথা। আমার হিসাব- নিকাশও শেষ করতে পারিনি কর্তৃপক্ষ। আমাকে চাপের মুখে ফেলে দফায় দফায় চিন্তা করার সময় দিয়েছিলেন।
সময় নিয়ে চিন্তা করেও আর্কষণীয় সম্পাদকের পদ ছাড়তে হয়েছে বহু নাটক ও মামলার সর্বশেষ কারাগারে গিয়ে। যে মামলা গুলো বিজ্ঞ আদালত থেকে খালাস দিয়েছেন। কিন্তু কেরে নিয়েছে কয়েক কোটি টাকার পরিশ্রমের গড়া স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান দৈনিক ময়মনসিংহ প্রতিদিন পত্রিকাটি। এখনও সম্পাদক পদের দায়িত্ব থাকলেও প্রিন্টার্স লাইনে নামটি সরিয়ে ফেলেন। অভিজ্ঞ মহল বলছে, আবারো আসবে ফিরে দৈনিক ‘ময়মনসিংহ প্রতিদিন’ কাগজটি।
আমার এই চলে আসা কেন, এ নিয়ে আমার স্ত্রী, সন্তান, সহকর্মী, শুভানুধ্যায়ীসহ অনেকেরই প্রশ্ন ছিল। ময়মনসিংহ প্রতিদিন ছেড়ে দুই মাস পর আরেকটি সংবাদপত্রের নির্বাহী সম্পাদক পদে যোগদান করেছিলাম কেন? কিন্তু সেই দৈনিক ময়মনসিংহ প্রতিদিন আর আলোর মুখ দেখেনি আজও। ময়মনসিংহ বিভাগের পাঠকমহল আমাকে আজও মনে রেখেছে। কিছুদিন পর বাধ্য হয়ে যোগ দিই দৈনিক আমাদের কন্ঠ পত্রিকায়। এই পত্রিকাটি তখন খুব জনপ্রিয় ছিল।
আমি যোগ দেয়ার পরই পত্রিকাটি বাজারজাত শুরু হয় ধুমধাম করে। বাজারও পায় ভাল। দৈনিক আমাদের কন্ঠে অনেক স্বপ্নের কথা বলে তারা আমাকে নিয়ে যান ক্রাইম চিফ হিসাবে। কিন্তু যোগদানের কিছুদিন পর থেকেই পত্রিকা কর্তৃপক্ষ আমার প্রতি ভালবাসা কমতে থাকে। কেন? আজও জানতে পারলাম না তার রহস্য ? শুধু পরিশ্রম করেই গিয়েছিলাম।
এরপর ঢাকা থেকে একটি ইংরেজি দৈনিক সংবাদপত্রের ডিক্লারেশন নিয়েছিলাম। অর্থের অভাবে নিয়মিত প্রকাশ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তবে এখন দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক হিসাবে যোগ দিয়েছি। এই পত্রিকাটির মালিক একজন মহিলা। তবে পত্রিকাটি একটি গ্রুপ প্রকাশনা করছেন। তারা সামনে না আসলেও পেছনে বড় ভুমিকা পালন করে যাচ্ছে। কর্তৃপক্ষ বলছে আগামী বছরের শুরুতে ব্যাপক ভাবে বাজারজাত করবে এমনটাই আশা তাদের। এতক্ষণ শুধু পত্রিকা নিয়ে বললাম। এছাড়াও কথা আছে। রিপোর্টার হিসাবে আমি প্রায় ১৬ বছর কাজ করেছি বিভিন্ন গণমাধ্যমে।
সাংবাদিকতা জীবনে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের নেয়া অনেক সাক্ষাতকার এবং আমার অনেক রিপোর্ট বিভিন্ন সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছে। যেগুলো ছিল চাঞ্চল্যকর। স্বাস্থ্য বিভাগের দুর্নীতি মহানায়ক ঠিকাদার মিঠু ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের খাদ্য ঠিকাদার হাশেম আলীর দুর্নীতির ধারাবাহিক অনুসন্ধানী রিপোর্ট প্রকাশ করেছি। মাদকের রাঘববোয়াল এবং প্রতারকদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করতে গিয়ে পুলিশের হয়রানি – অমানুষিক নির্যাতন, মিথ্যা ও সাজানো মামলায় জেলেও যেতে হয়েছে অসংখ্য বার। আজও থেমে নেই হয়রানি। তার পরও চলছে কলম। জানি না এর শেষ কোথায়?
আজ সব বিষয় চিন্তা করেই ভাবলাম, দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা ও সাংবাদিকতা জীবনের নানা ঘটনা নিয়ে ছোট খাট একটি ইতিহাস বই হয়তো লেখাই যায়। তবে চিন্তা করছি, কি করবো এখন ? সংসারের হাল ধরতে গিয়ে সময়ও মিলছেনা। যেমন বাংলাদেশ অনলাইন সংবাদপত্র সম্পাদক পরিষদ, বাংলাদেশ মানবতা ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনে সম্পৃক্ততা ও নেতৃত্ব দিয়েছি এবং
ভূমিকা এখনও শেষ হয়নি। কথা আছে বহু, যা মন খুলে বলতে পারিনি আজও। বিচারের বাণী, নিভৃতে কাঁদে।
এ নিয়ে কয়েক বছর চিন্তা-ভাবনা করেছি। যেহেতু সবকিছুই টুকরো স্মৃতি, ইতিহাস ইত্যাদি তাই একরকম হতে পারে। আর আমি নিজে রিপোর্টার হিসাবে পেশা শুরু করি। অনেক সম্পাদকের অধীনেও কাজ করেছি। আবার নিজেও তিনটি পত্রিকার সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করি এবং এখনও করছি।
মোঃ খায়রুল আলম রফিক
১. প্রধান সম্পাদক, দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ।
২. সভাপতি, বাংলাদেশ অনলাইন সংবাদপত্র সম্পাদক পরিষদ (বনেক) কেন্দ্রীয় পরিষদ।
৩. চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ মানবতা ফাউন্ডেশন।